দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার সবচেয়ে প্রাচীন বনেদিবাড়ির পুজো এটি। বালুরঘাটের হোসেনপুর এলাকার চৌধুরী বাড়ির দুর্গাপুজোর প্রবর্তক ছিলেন রামপ্রসাদ মন্ডল। সেই সময় বালুরঘাট অঞ্চলে মণ্ডলদের ১৩টি পরিবার বসবাস করত। পরবর্তীকালে মন্ডল পরিবার ব্রিটিশ সরকারের পক্ষ থেকে চৌধুরী খেতাব পেয়ে থাকেন। এরপর বালুরঘাট অঞ্চলের জমিদার শশীভূষণ চৌধুরী মহাসমারোহে দুর্গাপুজোর সূচনা করেন।
advertisement
আরও পড়ুনঃ রাতারাতি অ্যাকাউন্ট ফাঁকা! এটিএমের সুইচে আঠালো জিনিস লাগিয়ে..! জালিয়াতি কাণ্ডে গ্রেফতার ২
জন্মাষ্টমীর দিন কাঠামো পুজো হয়েছে। বিশ্বকর্মা পুজোর দিন থেকে প্রতিমায় মাটির প্রলেপ পড়তে থাকে। মহাষষ্ঠীর দিন প্রতিমার রঙ ও চক্ষুদানের রীতি রয়েছে। এখানে কোনওরকম আমিষ ভোগ দেওয়া হয় না। দিনের বেলা ক্ষীর, ছানা, মাখন, দই, ফল ও মিষ্টি নিবেদন করা হয়। রাতে অন্নভোগ হয়। ষষ্ঠীর দিন থেকে এখানে মঙ্গলচণ্ডীর গান চলে। এই মঙ্গলচণ্ডীর গানের ক্ষেত্রে রয়েছে বিশেষ জনশ্রুতি।
জমিদার বংশের বর্তমান প্রজন্মের সদস্য সুপ্রিয় চৌধুরীর কথায়, “রীতি মেনে এই পুজোয় আজও মহাষষ্ঠীর দিন থেকে মন্দির প্রাঙ্গণের নাট মন্দিরে মঙ্গলচণ্ডীর গান হয়, নবমীর রাত পর্যন্ত চলে। গান করে সেই দেবনাথ পরিবার। দশমীতে চলে চামুণ্ডা বা বুড়ি নাচ, স্থানীয় ভাষায় যাকে মুখা নাচ বলে। এই পুজো দেখতে পুজোর পাঁচ দিন এখনও বহু সাধারণ মানুষ ভিড় জমিয়ে থাকেন।”
আপনার শহরের হাসপাতাল এবং চিকিৎসকদের নামের তালিকা পেতে এখানে Click করুন
চৌধুরী পরিবারের এই পুজো ঘিরে হোসেনপুর মৌজার বাসিন্দারা পুজোর আগে থেকেই আনন্দ উৎসবে মেতে ওঠেন। কালের নিয়মে মণ্ডপের চেহারার আমূল বদল ঘটেছে। টিনের চালা ও মাটির ঘর থেকে এখন পাকা মণ্ডপ হয়েছে। আশেপাশের এলাকা থেকে প্রচুর মানুষ পুজোর ক’টা দিন এখানে ভিড় করেন। অনেকেই এখানে ইচ্ছা পূরণের জন্য মানত করে যান। চৌধুরী পরিবারের বিশ্বাস, তাঁদের যে কোনও বিপদ-আপদ আসার আগেই তাঁরা এখনও মায়ের কাছ থেকে স্বপ্নাদেশে সতর্কবার্তা পান।