সৌরভ শিলিগুড়ি কলেজের প্রথম বর্ষের পড়ুয়া। পড়াশোনার পাশাপাশি গান তার নেশা। অন্যদিকে সুরঞ্জন দেবনাথ পড়াশোনার গণ্ডি ছাড়িয়ে পুরোপুরি গান-বাজনার জগতে মন দিয়েছেন। বিদেশের রাস্তায় জনপ্রিয় ‘বাস্কিং’ সংস্কৃতি থেকেই অনুপ্রাণিত হয়ে শিলিগুড়ির রাস্তায় এই অভিনব প্রয়াস শুরু করেন তারা।
advertisement
শহরের নানা মোড়, ফুটপাত কিংবা খোলা জায়গায় দাঁড়িয়ে গান গেয়ে যা অর্থ উপার্জন হয়, তা আলাদা করে জমিয়ে সপ্তাহ শেষে তুলে দেওয়া হয় প্রয়োজনীয় মানুষদের হাতে। কখনও খাবার বা নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিস কিনে দেওয়া, কখনও ওষুধ – যার যেটা দরকার, সেটা পৌঁছে দেওয়াই তাদের লক্ষ্য।
আরও পড়ুনঃ শীত পড়তেই তিস্তা পাড়ে নজর কাড়ছে ‘ভুতি’! ঝাঁকে ঝাঁকে উড়ে আসছে ইউরোপীয়ান হাঁস, মুগ্ধ করা দৃশ্য
তবে পথটা সহজ ছিল না। প্রথমদিকে কম বয়সী এই দুই যুবকের পাশে দাঁড়াননি পরিবারের সদস্যরাও। নিজেদের মধ্যেও ছিল দ্বিধা ও আত্মবিশ্বাসের অভাব। সৌরভের কথায়, “শুরুর দিকে মানুষ শুধু হাসত। অনেক জায়গায় আমাদের গান গাইতে দেওয়া হত না, এমনকি তাড়িয়েও দেওয়া হয়েছে। অনেকে এটাকে ভিক্ষা ভেবে ঘৃণা করত।” কিন্তু সময়ের সঙ্গে সঙ্গে সেই মানসিকতায় বদল এসেছে। এখন মানুষ থেমে দাঁড়িয়ে গান শোনেন, অনেকেই উদ্যোগটির প্রশংসা করেন এবং স্বেচ্ছায় সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেন।
আপনার শহরের হাসপাতাল এবং চিকিৎসকদের নামের তালিকা পেতে এখানে Click করুন
সুরঞ্জন দেবনাথ বলেন, “গান আমার জীবনের সবচেয়ে বড় ভালোবাসা। সেই গান যদি কারও প্রয়োজনে কাজে লাগে, সেটাই আমাদের সবচেয়ে বড় সাফল্য। যাদের পাশে দাঁড়াতে পারি, তাদের মুখের হাসিই আমাদের এগিয়ে যাওয়ার শক্তি দেয়।” ইতিমধ্যেই সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়েছে এই দুই বন্ধুর গান গাওয়ার ভিডিও, যা আরও বহু মানুষকে এই উদ্যোগের সঙ্গে যুক্ত হতে অনুপ্রাণিত করছে।
বিদেশের রাস্তায় দেখা ‘বাস্কিং’ সংস্কৃতি আজ শিলিগুড়ির মাটিতে মানবিক রূপ পেয়েছে। গান যে শুধু বিনোদনের মাধ্যম নয়, বরং সমাজ বদলের হাতিয়ার হতে পারে-সেই কথাই প্রতিদিন সুরে সুরে প্রমাণ করে চলেছেন সৌরভ ও সুরঞ্জন।





