ইতিহাস ঘেটে জানা যায়, দ্বাদশ শতকের শেষ দিকে শিব পুজোর প্রচলন শুরু হয় উত্তর ২৪ পরগনার গাইঘাটার এই জলেশ্বর অঞ্চলে। মন্দির উন্নয়ন কমিটির তরফ থেকে জানা যায়, প্রথমে মন্দিরটি ছিল ছোট ও সাধারন মানের। পরবর্তীতে গোবরডাঙ্গার জমিদার রমেশচন্দ্র বন্দ্যোপাধ্যায় শিবমন্দের জন্য ৬০ বিঘা জমি দান করেছিলেন।
আরও পড়ুনঃ অ্যাডমিট কার্ডের ছবির সঙ্গে মিলছে না পোশাক, প্রবেশিকা পরীক্ষায় বসতে দিল না কলেজ
advertisement
তবে মন্দিরের মূল বিগ্রহটি অবশ্য বছরের নির্দিষ্ট দিন ছাড়া দেখা যায় না। তবে কোথায় থাকে শিবের মুল বিগ্রহটি ? তিনি জানান, মন্দিরের পাশেই রয়েছে ৪ একরেরও বেশী জায়গা নিয়ে শিবপুকুর। বছরভর পুকুরের নীচে রাখা থাকে বিগ্রহটি। যেহেতু জলের নীচে ইশ্বর অর্থাৎ মহাদেব বাস করেন সেহেতু এই অঞ্চলের নাম হয়েছে জলেশ্বর।
প্রতিবছর বিগ্রহটি চৈত্র মাসের তৃতীয় সোমবার শিবপুকুর থেকে তুলে আনা হয়। আর সেই কাজটি করে থাকেন চড়কে যারা সন্ন্যাসী হন তারা। পরদিন ওই বিগ্রহ নিয়ে সন্ন্যাসীরা পায়ে হেঁটে হালিশহর গিয়ে বিগ্রহকে গঙ্গায় স্নান করিয়ে নিয়ে আসেন উত্তর ২৪ পরগনার জলেশ্বরের এই শিবমন্দিরে।
আরও পড়ুনঃ লোভনীয় ‘রাশিয়ান কাবাব’ খেতে ভোজনরসিকদের ভিড় উপচে পড়েছে ‘ভাজাভুজি’তে
ফের ১লা বৈশাখ মূল বিগ্রহকে শিবপুকুরেই ডুবিয়ে দেওয়া হয়। কথিত আছে মনের বিশ্বাস নিয়ে কেউ এই মন্দিরের বাবা ভোলানাথের পুজো দিলে তার মনস্কামনা পূর্ন করে থাকেন তিনি। আর সেই বিশ্বাস নিয়েই ভক্তরা বাবার কাছে পুজো দিতে দুরদুরান্ত থেকে ছুটে আসেন।
এছাড়া সারাবছর ধরেই তারকেশ্বরের মতোই ভক্তদের ভিড় লেগে থাকে জলেশ্বর শিবমন্দিরে। এই মন্দিরকে ইতিমধ্যেই হেরিটেজ ঘোষনা করেছেন রাজ্য হেরিটেজ কমিশন। উত্তর ২৪ পরগনা জেলার দর্শনীয় স্থানগুলোর মধ্যে জলেশ্বর শিবমন্দিরের নাম তাই রয়েছে প্রথম সারিতেই।
চৈত্র মাসের প্রথম সোমবার হওয়ায় অতিরিক্ত ভিড় সামাল দিতে আগত ভক্তরা যাতে সুষ্ঠুভাবে লাইনে দাঁড়িয়ে জল ঢালতে পারেন, তার ব্যবস্থা করা হয়েছে মন্দিরের তরফ থেকে। এদিন মন্দির চত্বরে যেন উৎসবের মেজাজ ধরা পড়লো।
Rudra Narayan Roy