সুন্দরবনের পুরুষরা প্রাণের ঝুঁকি নিয়ে গভীর জঙ্গলে মধু ও কাঠ সংগ্রহ করতে যান। আর মহিলারা রায়মঙ্গল, কলাগাছি, বেতনি, ডাঁসা সহ নানান নদীতে নেমে দিনের বেলায় মাছের মীন সংগ্রহ করেন। তাঁরা বাঁশের চটার ফ্রেমে আটকানো ঘন মশারির নেট লাগানো টানা জাল আর একটা অ্যালুমিনিয়ামের হাঁড়ি নিয়ে নদীতে নেমে পড়েন। কুমির, কামোটের ভয় উপেক্ষা করেই তাঁদের এই জীবন সংগ্রাম চলে। ভাটার শুরু থেকে জোয়ার পর্যন্ত টানা জলে দাঁড়িয়ে চলে মীন সংগ্রহের কাজ৷ জোয়ার পুরোপুরি চলে এলে উঠে পড়েন৷ আবার ভাটা শুরু হলে নদীতে নামেন৷
advertisement
আরও পড়ুন: কেন্দ্রের বিরাট স্বীকৃতি রঘুনাথপুর সুপার স্পেশালিটিকে
এইভাবে প্রতিদিন নদীর জলে প্রায় ছয়-সাত ঘণ্টা করে দাঁড়িয়ে থাকেন সুন্দরবনের মহিলারা। আর তাতেই ক্রমশ বাড়ছে জরায়ুর রোগ। নদীর জল প্রতিদিন একটু একটু করে আরও দূষিত হয়ে উঠছে। সেই নোংরা জলে দীর্ঘক্ষণ থাকার ফলে চর্মরোগেও আক্রান্ত হচ্ছেন তাঁরা। এমনই রোগে আক্রান্ত সন্দেশখালির এক মহিলা জানান, শরীরের বিভিন্ন অংশে চুলকানি রোগ দেখা দিয়েছে। সেইসঙ্গে হাতে-পায়ে হাজার জ্বালায় আমাদের প্রাণ বেরিয়ে যাওয়ার যোগাড়।
সুন্দরবনের মহিলাদের এইসব রোগে আক্রান্ত হওয়া প্রসঙ্গে বসিরহাট জেলা হাসপাতালের সুপার রঞ্জন রায় বলেন, সাধারণত জলে-কাদায় যারা বেশিরভাগ সময় কাটান তাঁদের চর্মরোগ হওয়ার প্রবণতা দেখা যায়। এর থেকে বাঁচার জন্য কাজ সেরে বাড়ি ফিরেই শুকনো কাপড় দিয়ে গোটা শরীর মুছে নিতে হবে। পাশাপাশি লোশন ব্যবহার করার পরামর্শ দেন তিনি। সেই সঙ্গে দ্রুত চর্মরোগ বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক দেখানোর কথা বলেছেন রঞ্জনবাবু।