বিকল্প শক্তি কী এবং কেন তার ব্যবহার দরকার, তা স্কুল-কলেজ পড়ুয়া থেকে আমজনতাকে বোঝানোর জন্য একটি সোলার ডোম বা সৌর গম্বুজ তৈরি করছে হিডকো। নিউটাউনের ইকোপার্কে বাংলার গ্রামের ঠিক পাশেই তাই তৈরি হয়েছে সোলার ডোম। যেখানে বসেই সৌর শক্তির ব্যবহার, উপকারিতা, প্রয়োজনীয়তা প্রভৃতির প্রাথমিক পাঠ নেওয়া যাবে।
আরও পড়ুনঃ বদলে গিয়েছে পাত্রসায়রের দাসপাড়া, সময়ে সময়ে ঘোর লাগে, এখন 'মডেল' সেই এলাকাই
advertisement
#কেন এমন উদ্যোগ হিডকোর?
হিডকোর আধিকারিকরা জানাচ্ছেন, তাঁরা প্রথম থেকেই গ্রিন ও ক্লিন নয়া উপনগরী তৈরির লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছেন। এ জন্য নিউটাউনের রাস্তায় পরিবেশ বান্ধব বাস, টোটো, রিক্সা, সাইকেল চালানো হচ্ছে। সরকারি বেসরকারি অফিস বা বসত বাড়ি নির্মানে গ্রিন বিল্ডিং নির্মানের ওপর জোর দেওয়া হয়েছে। বিকল্প শক্তি অর্থাৎ সৌর শক্তির ব্যবহারের জন্য বিভিন্ন অফিসের ছাদে সোলার প্যানেল বসানো হয়েছে। হিডকো, এনকেডিএ ভবন, ইকো পার্কেও সোলার প্যানেলের মাধ্যমে আলো পাখা চালানো হয়। হিডকো চাইছে বিকল্প শক্তির ব্যবহার ও আগামীদিনে তার প্রয়োজনীয়তার কথা চিন্তা করুক সাধারণ মানুষও।
আরও পড়ুনঃ শুঁড়ে পেঁচিয়ে সপাটে আছাড় দাঁতালের! ঝাড়গ্রামে ৮ দিনে হাতির হানায় মৃত ৫
তাই সোলার ডোম তৈরি করে সেখানে গ্যালারি, স্ক্রিন-প্রজেক্টর, মডেলের মাধ্যমে মানুষকে সচেতন করা সম্ভব হবে। সোলার ডোমের বাংলা প্রতিশব্দ সৌর গম্বুজ। অর্থাৎ অর্ধচন্দ্রাকৃতি একটা গম্বুজ যেটা সৌর শক্তি দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হবে। ইকো পার্কে ২.৮৯ একর জমির ওপর ইতিমধ্যেই ৪৬ মিটার ব্যস ও ৫৫ মিটার উচ্চতা যুক্ত একটি লোহার খাঁচা (ডোম) তৈরি করা হয়েছে। সেই ডোমের বহিঃভাগ পুরোটাই সুদৃশ্য সোলার প্যানেল দিয়ে মোড়া। দূর থেকে যেটা দেখলে একটা গ্লাস হাউস মনে হবে। ওই প্যানেল থেকেই ১৮০ কিলো ওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন শুরু হবে। যেটা দিয়েই ডোমের ভিতর আলো, পাখা, কম্পিউটার, টিভি, লিফট সবকিছু চলবে।
ডোমের ভিতরে আট-ন'তলা বাড়ির উচ্চতা সমান গোলাকার গ্যালারি থাকছে। যে গ্যালারিতে দাঁড়িয়ে দর্শকরা গোটা ইকোপার্কের নয়নাভিরাম দৃশ্য উপভোগ করতে পারবেন। হিডকো সূত্রে খবর, সোলার ডোম তৈরির জন্য মূল ব্যয়ভার বহন করছে রাজ্য বিদ্যুৎ বন্টন সংস্থা। পাশাপাশি হিডকো ও নগরয়োন্নন দফতরও আর্থিক সহায়তা করছে। পুরো প্রকল্পটিই সুইজারল্যান্ডের একটি নামী সংস্থার পরামর্শ অনুযায়ী তৈরি করা হচ্ছে। মূল কাঠামোটি তৈরি করেছে ভারতের ব্রিজ অ্যান্ড রুফ কোম্পানি।
প্রায় দু হাজারের উপর সোলার প্যানেল দিয়ে তৈরি হয়েছে এই সোলার ডোম। ডোমের ব্যাস ৪৬ মিটার উচ্চতা ৫৫ মিটার এবং এই সোলার ডোম থেকেই ১৮০ কিলোওয়াট সৌর বিদ্যুৎ উৎপাদিত হবে। ডোমের ভেতরে থাকবে উন্নত মানের গ্যালারি, প্রদর্শনী শালা, সেমিনার হল। আশা করা যাচ্ছে নতুন বছরেই উদ্বোধন হতে পারে এই সোলার ডোম।
রুদ্র নারায়ণ রায়