পুলিশ সূত্রে খবর, চলতি বছরের মে মাসে বন্ধন ব্যাঙ্কের ফ্রড কন্টেন্ট অ্যান্ড মনিটরিং ডিপার্টমেন্টের হেড বিধাননগর সাইবার ক্রাইম থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেন। তিনি জানান, কিছুদিন আগে কলকাতা পুলিশের এসিপি ঈপ্সিতা ভট্টাচার্য বন্ধন ব্যাঙ্কে একটি অভিযোগ জমা করেছেন। সেখানে জানিয়েছেন, তাঁর পরিবারের এক সদস্য চাকরির সন্ধান করছিলেন। এরই মধ্যে তাঁর কাছে একটি অনলাইন পোর্টাল মারফত খবর আসে বন্ধন ব্যাঙ্কে নতুন কর্মী নিয়োগ করা হবে। তা দেখে ওই পোর্টালে দেওয়া ফোন নম্বরে যোগাযোগ করেন সেই ব্যক্তি। সেখানে তাঁকে চাকরি হয়ে যাবে বলে প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়। তবে এর জন্য ১ লক্ষ ২২ হাজার টাকা জমা করতে হবে বলে জানানো হয়। বন্ধন ব্যাঙ্কে লোগো লাগানো চাকরির অ্যাপয়েন্টমেন্ট লেটার হাতে পাওয়ার পর কলকাতা পুলিশের ওই আধিকারিক এর আত্মীয় একটি ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে কথা মতো ১ লক্ষ ২২ হাজার টাকা জমা করেন। এরপর তিনি নিয়মমাফিক বন্ধন ব্যাঙ্কের সঙ্গে যোগাযোগ করলে জানতে পারেন, যে অ্যাপয়েন্টমেন্ট লেটার পেয়েছেন সেটি ভুয়ো।
advertisement
আরও পড়ুন: হেলমেট ছাড়াই বেপরোয়া বাইক চালানোর পরিনাম, দুর্ঘটনায় মৃত ২, আহত ৩
পরবর্তীতে পুলিশ আধিকারিকের ওই আত্মীয় জানতে পারেন যে ই-মেল অ্যাড্রেস, ওয়েবসাইট ব্যবহার করে চাকরির প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছিল সেগুলি সবই ভুয়ো। এরপরই ওই এসিপি বন্ধন ব্যাঙ্কের সঙ্গে যোগাযোগ করে গোটা বিষয়টি জানান। তাদের নাম করে প্রতারণা করা হচ্ছে জানতে পেরে নড়েচড়ে বসে বন্ধন ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষও। এরপরই তারা বিধাননগর সাইবার ক্রাইম থানার সঙ্গে যোগাযোগ করে।
বন্ধন ব্যাঙ্কের অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্তে নেমে পুলিশ জানতে পারে, এই প্রতারণা চক্রের পেছনে কাজ করছে একটি ভুয়ো কল সেন্টার। তবে সেই কল সেন্টারটি নির্দিষ্ট কোনও অফিস থেকে চালানো হয় না। ওয়ার্ক ফ্রম হোম পদ্ধতিতে এই ভুয়ো কল সেন্টারটি চলে।
এরপরই শুক্রবার বিধাননগর সাইবার ক্রাইম থানার পুলিশ হানা দেয় রানাঘাটে। সেখান থেকে এই চক্রের মূল অভিযুক্ত রিষভ বাচ্ছার ও নিলয় দে-কে গ্রেফতার করে। তাদের কাছ থেকে মোট ১১ টি মোবাইল ফোন, ৬ টি ব্যাঙ্কের এটিএম কার্ড, পাস বই, দুটি সিমকার্ড, একটি ল্যাপটপ উদ্ধার হয়। কীভাবে তারা প্রতারণা করত তা ব্যাখ্যা করতে গিয়ে বিধাননগর সাইবার ক্রাইম থানার পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, এই প্রতারনা চক্র প্রথমে একটি ভুয়ো ওয়েবসাইট তৈরি করে সেখান থেকে চাকরিপ্রার্থীদের সঙ্গে যোগাযোগ করত। এরপর তারা ভুয়ো মেল আইডি মারফত সেই চাকরিপ্রার্থীদের মেল করে তাদের বিশ্বাস অর্জন করত। বেশ কিছু চাকরিপ্রার্থীদের ভুয়ো অ্যাপয়েন্টমেন্ট লেটার পর্যন্ত দেওয়া হতো। এই চক্রের সঙ্গে আর কারা জড়িত আছে তা তদন্ত করে দেখছে বিধাননগর সাইবার ক্রাইম থানার পুলিশ।
অনুপ চক্রবর্তী