প্রাথমিকে নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় সিবিআইয়ের হাতে গ্রেফতার চন্দন মণ্ডলের ৪ দিনের সিবিআই হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছে আদালত। প্রসঙ্গত, শিক্ষক-নিয়োগ কেলেঙ্কারিতে রঞ্জন-বোমাটি প্রথম ফাটিয়েছিলেন রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী তথা সিবিআইয়ের প্রাক্তন যুগ্ম অধিকর্তা উপেন বিশ্বাস। এরপর আইনজীবীরা হাই কোর্টে জানান, উপেন-কথিত রঞ্জন আদতে উত্তর ২৪ পরগনা বাগদার মামাভাগনে গ্রামের বাসিন্দা চন্দন মণ্ডল।
তারপরই এই মামলায় সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দেয় কলকাতা হাই কোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। নির্দেশ দিয়েছিলেন প্রয়োজনে চন্দনকে নিজেদের হেফাজতে নিয়ে জেরা করতে পারবে সিবিআই। সৌমেন নন্দী নামে এক চাকরিপ্রার্থী প্রাথমিকে নিয়োগ-কেলেঙ্কারি নিয়ে মামলা করেছিলেন। সেখানে ৮৭ জনকে বেআইনি ভাবে নিয়োগ করা হয়েছে বলে তুলে ধরা হয়। সেই মামলাতেই এবার সিবিআই হেফাজতে বাগদার চন্দন মণ্ডল।
advertisement
আরও পড়ুন: এবার ঝেঁপে বৃষ্টি, বাদ নেই কলকাতাও! বিরাট পূর্বাভাস হাওয়া অফিসের, সতর্ক থাকতেই হবে
ইউটিউব ভিডিওয় উপেন বিশ্বাস দাবি করেছিলেন, এলাকায় লোকে রঞ্জনকে ‘সৎ’ বলে মানেন। কারণ, তিনি নাকি টাকা নিয়ে চাকরি দেননি, এমনটা হয়নি। চাকরি না দিতে পারলে সুদ-সহ টাকা ফিরিয়ে দিয়েছেন, এমন উদাহরণও আছে। তিনি ‘গোপনীয়তার স্বার্থে’ রঞ্জনের আসল নাম ভিডিও টিতে না জানালেও পরে প্রকাশ্যে আসে চন্দনের নাম। ভিডিওটিতে উপেনবাবু দাবি করেছিলেন, প্রাথমিকে ১০ লক্ষ, উচ্চ প্রাথমিকে ১৫ লক্ষ, হাইস্কুলের চাকরি ১৮-২০ লক্ষ টাকায় পাইয়ে দিতেন রঞ্জন। এলাকায় গিয়ে জানা গিয়েছে, লক্ষ লক্ষ টাকা তাঁর হাত দিয়ে আদানপ্রদান হত।
আরও পড়ুন: দুর্গাপুরে ঘুরে বেড়াচ্ছে মৌমাছির দল, বিষকামড়ে হাসপাতালে দলেদলে মানুষ! পরিস্থিতি ভয়ানক
আদালতে অভিযুক্তের জামিনের আবেদন জানিয়ে তাঁর আইনজীবী বিচারককে জানান, চন্দন মণ্ডল একজন শিক্ষক, সেইসঙ্গে চাষের কাজও করেন। স্থানীয় একজন প্রভাবশালী ব্যক্তি (প্রাক্তন সিবিআই কর্তা উপেন বিশ্বাস) ব্যক্তিগত শত্রুতার জেরে চন্দনের বিরুদ্ধে বদনাম রটান। এদিন আরও ৫ জন এজেন্টকে গ্রেফতার করেছে সিবিআই বলেই জানা গিয়েছে। চন্দনের এর গ্রেফতারের পরই বাগদার মানুষ প্রশ্ন তুলতে শুরু করেছে এর পেছনে রয়েছে আরও বড় কারও হাত, প্রশাসনের উচিত তাদের খুঁজে বার করা।
নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় বিপুল টাকা নেওয়ার অভিযোগে বাগদার রঞ্জন ওরফে চন্দন মন্ডলকে গ্রেফতার করেছে সিবিআই। তবে চন্দন মন্ডলের বাড়িতে এদিন লক্ষ করা গেল তার কেউ নেই। পাশাপাশি তার বাড়িতে সিবিআই এর তরফ থেকে একটি নোটিশ ঝোলানো রয়েছে, যেখান উল্লেখ করা আছে যে তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করার জন্য সিবিআই দফতরে আসতে হবে। তবে এলাকাবাসীর অনেকেরই মত, এই টাকা চন্দন একা নেয় নি, চন্দন এই টাকা নিয়ে পৌছে দিত। বিনিময়ে চাকরি পেত যারা টাকা দিত। চন্দন মন্ডল গ্রেফতার হওয়া নিয়ে কেউ চিন্তিত নয়, তারা দেখেতে চান এর আগে যারা উপর মহলে বসে আছেন, যাদের অনেকেই গ্রেফতার হয়েছে তাদের কি হয়। তবে এই গ্রেপ্তারের খবর জানতেই এলাকা জুড়ে এক নিস্তব্ধতা গ্রাস করেছে, কারণ চাকরি গেলে বহু মানুষ কাজ হারাবেন।
-----Rudra Narayan Roy