কয়েক মাস আগেই শিশুদের ওয়ার্ডে এবং প্রসূতি মহিলাদের বিভাগে পরীক্ষামূলক ভাবে চালু করা হয়েছিল মিউজিক থেরাপি। মূল রোগের পাশাপাশি রোগীকে মানসিক ভাবে সুস্থ করার কাজেই ব্যবহার করা হচ্ছে এই বিশেষ পদ্ধতি। উত্তর ২৪ পরগনা জেলার বারাসাত গভমেন্ট মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে এখন চলছে এই মিউজিক থেরাপি।
advertisement
হাসপাতালের বিভিন্ন ওয়ার্ডে বাজতে শোনা যাচ্ছে রবীন্দ্র সংগীত বিভিন্ন ধরনের ইন্সট্রুমেন্টাল মিউজিক। আর সেই গানের সুরে গলা মেলাচ্ছেন চিকিৎসাধীন রোগীরা। শুধু রোগীরাই নন, চিকিৎসক ও নার্সরাও গানের সুরে গলা মিলিয়ে মনকে সতেজ রাখছেন। হাসপাতালের তরফ থেকে জানা গিয়েছে, বর্তমানে বারাসাত গভমেন্ট মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের মহিলা ও পুরুষদের দুটি মেডিসিন ওয়ার্ড, একটি শিশু বিভাগ ও একটি প্রসূতি বিভাগে বসানো হয়েছে সাউন্ড সিস্টেম। আর তাতেই সারাদিন বাজছে রবীন্দ্র সংগীত, নজরুল গীতি, শিশুদের গান ও বিভিন্ন মিউজিক।
এই গান-থেরাপিতে হাসপাতালে ভর্তি রোগীদের মানসিক বিকাশ ঘটছে বলে মনে করছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। গান ভালোবাসেন না এমন মানুষ পাওয়া বোধহয় অসম্ভব, অবসর সময় হোক বা চরম ব্যস্ততার মাঝে কানে একটু গানের সুর পৌছলেই অনেকটাই কেটে যায় অবসন্নতা। গান মানুষের স্মৃতি ও আবেগকেও নিয়ন্ত্রণ করে। তাই গানের মাধ্যমে অশান্ত মনও দ্রুত শান্ত হয়ে যায় বলেও মনে করেন বিশেষজ্ঞরা।
শুধু গান শুনেই অনেক অসুস্থ মানুষ মানসিকভাবে সুস্থ হয়ে ওঠেন এবং সেই কারণেই রোগমুক্তির জন্য মিউজিক থেরাপির প্রচলন হয়েছে। ভারতের বিভিন্ন রাজ্যের পাশাপাশি এবার বাংলাতেও সেই পদ্ধতি শুরু হয়েছে জেলার এই গুরুত্বপূর্ণ মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে। হাসপাতাল সুপার ডা: সুব্রত মন্ডল জানান, হাসপাতালের মোট চারটি ওয়ার্ডে বেশ কয়েকটি মিউজিক সিস্টেম বসানো হয়েছে। এর ফলে একদিকে যেমন হাসপাতালে ভর্তি থাকা রোগীরা মানসিকভাবে ঠিক থাকছেন, তেমনই নার্স ও স্বাস্থ্যকর্মীরাও উৎসাহ পাচ্ছেন কাজে।
হাসপাতালে ভর্তি থাকলে অনেকেই মানসিকভাবে ভেঙে পড়েন, সেই জায়গা থেকে মিউজিক থেরাপির ফলে অনেকটাই সুফল মিলছে। প্রায় ছশোর মত রোগী এই মিউজিক থেরাপির আওতায় আছেন বলেও জানা গিয়েছে। শারীরিক সমস্যা নিয়ে ভর্তি হওয়া রোগীরা দ্রুত সুস্থ হয়ে ওঠায়, খুশি হচ্ছেন রোগীর পরিবার পরিজনেরাও।
রুদ্র নারায়ণ রায়