দীর্ঘ বছর ধরে কখনো অসুরের ভূমিকায়, কখনো বা যমরাজের অট্টহাস্যতে দর্শকের মন জয় করে নিয়েছেন এই অভিনেতা। কিন্তু আজ সে সব অতীত। পুজো আসলেই সোনালী দিনগুলির কথা ভেবে, যেন মন খারাপ হয়ে যায় অমল বাবুর। সে সময়, দু’জন টেকনিশিয়ানের নজরে এসে রুপোলি পর্দার যাত্রা শুরু করেছিলেন অমল চৌধুরী। তার সেই চেহারা ও রূপ দেখলে রীতিমতো ভয়ে কাঁপত ছোট শিশুরা। মহালয়ার অনুষ্ঠান ছাড়াও বাংলা ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রিতে অন্যান্য কাজও করেছেন তিনি। প্রথম সারির অভিনেতা-অভিনেত্রী, পরিচালকদের সঙ্গে কাজ করলেও, আজ সকলের চোখের আড়ালে অমল চৌধুরী। গত বেশ কয়েক বছর ধরে আর ডাক পান না স্টুডিও পাড়া থেকে। আজ তাঁর দিন কাটছে চরম অভাবে। গত হয়েছেন দাদা, অসুস্থ বোন কে নিয়েই আজ টানাটানির সংসার অবিবাহিত অমল বাবুর। আর্থিক অসচ্ছলতার কারণে অভিনয় ভুলে আজ হাতে তুলে নিয়েছেন রং-তুলি।
advertisement
আরও পড়ুন: কেরালার অতি জনপ্রিয় “ক্যারিমীন” মাছের চাষ হচ্ছে নন্দীগ্রামে
হাতেগোনা কয়েকটি আঁকার টিউশনি করেই যা আসে, তা দিয়েই কোনরকমে চলে দু'জনের সংসার। অতীতের সেই সময়ের ছবি দেখলেই ভারাক্রান্ত হয়ে যায় অমল বাবুর মন। আত্মীয়রাও আজ মুখ ফিরিয়ে নিয়েছেন তাদের থেকে। দারিদ্রতার সাথে প্রতি মুহূর্তে লড়াই করে আজ চলছে দিন গুজরান। এখনও পর্যন্ত মেলেনি কোনও সরকারি সুযোগ সুবিধা। বয়সের ভারে এখন অনেকটাই হারিয়েছে সেই রূপ। বার্ধক্য থাবা বসিয়েছে জীবনে। তবুও, বড় বড় সেই চোখ ও পাকানো গোঁফ দেখলে চিনতে খুব একটা অসুবিধা হয় না কারোরই। অশোকনগরে নাট্য চর্চায় অমল বাবুর অভিনয় সারা ফেলে দিয়েছিল এক সময়। টিভির পর্দায় দাদাকে দেখে রীতিমতো উত্তেজিত হয়ে উঠতেন বোন। সকলেই জিজ্ঞেস করতেন দাদার অভিনয়ের ব্যাপারে। আজ আর অভিনয়ের জন্য ডাক আসে না এই অভিনেতার। সেই আক্ষেপের কথাই শোনা গেল শিল্পীর গলায়।
রুদ্র নারায়ণ রায়