তবে, সম্প্রতি গোবরডাঙা শহরের ইতিহাস বিজড়িত বেশ কয়েকটি স্থানের মধ্যে থেকে পাঁচটি স্থানকে বেছে নিয়ে হেরিটেজ স্বীকৃতি দিয়েছে হেরিটেজ কমিটি। আর তাই কিছুটা হলেও খুশি গোবরডাঙ্গাবাসিরা। স্বাধীনতা দিবস উদযাপনেও যেন বাড়তি মাত্রা যোগ করেছে এই আনন্দ।
আরও পড়ুন: তেরঙ্গা রঙে রঙিন রকমারি জিনিসের সম্ভার ! কিনতে মানুষের ভিড়
advertisement
আপাতত হেরিটেজ ঘোষণা করা হয়েছে গোবরডাঙা খাঁটুরা উচ্চ বিদ্যালয়, চন্ডীতলা জোড়া শিব মন্দির, গোবরডাঙা প্রসন্নময়ী কালী মন্দির, নহবত খানা ও সিংহ দুয়ার। জানা যায়, গোবরডাঙ্গা শহরের অন্যতম প্রাচীন বিদ্যালয় গোবরডাঙা খাঁটুরা উচ্চ বিদ্যালয়। ১৮৫৬ সালে এই বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা হয়। বর্তমানে তা ১৬৮ বছরে পড়ল। এই বিদ্যালয় তৈরিতে প্রধান ভূমিকায় ছিলেন সারদা প্রসন্ন মুখোপাধ্যায় তার সঙ্গে বিশেষ ভূমিকা নিয়েছিলেন এলাকারই বাসিন্দা বিনোদিনী দাসী।
আরও পড়ুন: অভিনব উদ্যোগ বালুরঘাট থানায়! দেখলে অবাক হতেই হবে
হেরিটেজ ঘোষণা করা হয়েছে চন্ডীতলার জোড়া শিব মন্দির, যা তৈরি করেছিলেন ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের সহযোগী প্রথম বিধবা বিবাহ যিনি করেছিলেন সেই শ্রীশচন্দ্র বিদ্যারত্ন। তার মায়ের স্মৃতির উদ্দেশ্যে গোবরডাঙ্গা পুরসভার ১৫ নম্বর ওয়ার্ডে এই মন্দির ও তৎসংলগ্ন বাওড়ের ঘাট তৈরি করেছিলেন। জোড়া শিব মন্দিরের স্বাস্থ্য কিছুটা খারাপ হয়ে পরায়, বর্তমান জমির মালিক তা কিছুটা সংস্কার করেছেন। তবে জরাজীর্ণ ঘাটের যে অবস্থা তা ব্যবহার করে আর কেউ স্নান করতে নামতে পারেন না। শ্রীশচন্দ্র বিদ্যারত্ন ছিলেন বর্তমানে ১৫২ বছরের পুরনো গোবরডাঙ্গা পুরসভার প্রথম মনোনীত চেয়ারম্যান।
হেরিটেজ তকমা পেয়েছে গোবরডাঙ্গা প্রসন্নময়ী কালী মন্দির। ১২২৯ বঙ্গাব্দে গোবরডাঙ্গার তৎকালীন জমিদার খেলারাম মুখোপাধ্যায় ও পরবর্তীতে তার ছেলে কালীপ্রসন্ন মুখোপাধ্যায়ের হাত ধরে তৈরি হয়েছিল গোবরডাঙ্গার প্রসন্নময়ী কালী মন্দির। যা বর্তমানে ২০১ বছরে পড়ল। প্রসন্নময়ী কালী মন্দিরে প্রবেশ পথের ঠিক ডানদিকে গা-ঘেঁষে একই সময় তৈরি হয়েছিল নওবত খানা, এক সময় দুরদুরান্ত থেকে বাদ্যকার ও শিল্পীরা এসে নওবদ খানায় আশ্রয় নিতেন ও অনুষ্ঠানে গান বাজনা করতেন। এটিও স্থান পেয়েছে হেরিটেজ কমিশনের তালিকায়।
হেরিটেজ কমিটির তালিকায় রয়েছে, গোবরডাঙ্গার আরও একটি প্রাচীন নিদর্শন, ইংরেজ আমলে গোবরডাঙ্গা জমিদার বাড়ির মূল ভবন যেখানে ছিল, তার ঠিক সামনেই এখনও রয়েছে সিংহ দুয়ার। মূল ভবনের স্থান পরিবর্তন হলেও রয়ে গিয়েছে প্রবেশদ্বারের দুদিকে সিংহ দেওয়া স্তম্ভ। যা এখনও সেই ইতিহাস বহন করে চলেছে। সব মিলিয়ে জেলার এই পাঁচ বিশেষ প্রাচীন নিদর্শনকে হেরিটেজ তালিকায় নিয়ে আসায় খুশি জেলার মানুষও।
Rudra Narayan Roy