দত্তপুকুর স্টেশন থেকে ঢিল ছড়া দূরত্বে, স্কুল পাড়ার বাসিন্দা তৃষা মল্লিক এখন ইস্টবেঙ্গলের মহিলা ফুটবল দলের ক্যাপ্টেন। অধিনায়ক হিসেবে এই মরশুমে ময়দান কাঁপাচ্ছেন তিনি। ক্যাপ্টেন হওয়ার পর থেকেই একের পর এক সাফল্য কন্যাশ্রী কাপেও ইস্টবেঙ্গল মহিলা দল জিতেছে সব মিলিয়ে এখন এই মহিলা ফুটবলারকে নিয়েই উচ্ছ্বাসে মেতেছেন ইস্টবেঙ্গল সমর্থকরা। মেয়ের এই সাফল্যে রীতিমতো চোখে জল মা সোমা মল্লিকের।
advertisement
ইস্টবেঙ্গল সমর্থক বাবা বিশ্বজিৎ মল্লিকও আজ মেয়ের সাফল্যে গর্বিত। দীর্ঘদিন ধরে অসুস্থ থাকার কারণে সেভাবে মেয়ের পাশে দাঁড়াতে না পারলেও, মানসিকভাবে মেয়েকে সমর্থন করেন তিনিও। তৃষার এই সাফল্যে আজ গোটা স্কুল পাড়া মানুষজন নিয়ম করে দেখছেন মহিলাদের ফুটবল খেলা।
আরও পড়ুন – U 19 World Cup 2024: ভারতীয় অনুর্ধ্ব ১৯ দলের সামনে ‘সিক্সার’-এর হাতছানি, কখন, কোথায় দেখবেন রইল সব তথ্য
পাড়ার মেয়ের নেতৃত্বে লাল হলুদ শিবিরে আসছে একের পর এক জয়, আর তাতেই তৃষাকে বিশেষ সংবর্ধনা দেওয়ার কথাও ভাবছেন দত্তপুকুরের ইস্টবেঙ্গল সমর্থকরা। মা সোমা মল্লিক জানালেন, মেয়ে কখনও ইস্টবেঙ্গলের হয়ে খেলবে, তা যেন স্বপ্নেও ভাবেননি। প্রথম যখন তৃষার ইস্টবেঙ্গলে খেলার সুযোগ আছে, সেদিন সারারাত না ঘুমিয়েই কাটিয়েছেন মা। দিনটি যেন ভুলতে পারছেন না তিনি। টালির চালের ছোট্ট ঘরেই বড় হয়ে ওঠা তৃষার। দারিদ্রতার সঙ্গে লড়াই করেই আজ ইস্টবেঙ্গলের মত রাজ্যের প্রথম সারির মহিলা ফুটবল দলের দায়িত্ব সামলাচ্ছেন তিনি। ছোটবেলা থেকেই তৃষা পাড়ার ছেলেদের সঙ্গে মাঠে মাঠে পাল্লা দিয়ে খেলাধুলা করতো। সেই থেকেই শুরু ফুটবলের প্রতি ভালোবাসা। দত্তপুকুর গার্লস স্কুল টিম থেকে জেলা স্তর ও পরবর্তীতে রাজ্য স্তরে খেলার সুযোগ আসে তৃষার কাছে।
কলকাতার ফুটবল দলে খেলার সময়ই এই মহিলা ফুটবলারের প্রতি নজর পরে লাল হলুদ শিবিরের। পরবর্তীতে ইস্টবেঙ্গলের হয়ে খেলার সুযোগ মেলে। পাশাপাশি, তৃষা বর্তমানে বেসরকারি একটি কলেজ থেকে অনার্স নিয়ে পড়াশোনা করছে। আর তার সঙ্গেই সমানতালে চলছে খেলাধুলো। আর এখন তৃষার ওপর ভরসা করেই বদলাবে পরিবারের আর্থিক অবস্থা এমনটাই আশা মল্লিক পরিবারের। তবে তৃষাকে নিয়েই এখন মেতে রয়েছে দত্তপুকুর স্কুল পাড়ার মানুষজন।
Rudra Narayan Roy