আরও পড়ুন: বিশেষ চাহিদা সম্পন্নদের রাখি উৎসব শিলিগুড়িতে
এই মুহূর্তে মোচপোলের মফিজউদ্দিন আলির বাড়ি দেখলে আস্তাকুঁড় মনে হতে পারে! বাড়ির সামনের অংশ একেবারে ভেঙেচুরে নষ্ট হয়ে গিয়েছে। গোয়ালঘরটা আর নেই। সাধের দুই গরু পঞ্চাশ ও মরার জন্য টেবিল ফ্যান লাগিয়ে ছিলেন গোয়ালঘরে। বিস্ফোরনের ধাক্কায় পঞ্চাশ মৃত। মরা বেঁচে থাকলেও তার থাকার জায়গা নেই। ফলে বাধ্য হয়ে তাকে বাইরে গাছ তলায় বেঁধে রাখতে হচ্ছে। বাড়ির পিছনের দিকে কিছু অংশ অবশিষ্ট আছে। এখন এই ভাঙাচোরা বাড়িতেই পরিবার নিয়ে বসবাস করছেন বৃদ্ধ মফিজউদ্দিন।
advertisement
এই দুর্দশায় গোটা পরিবার হতভম্ব হয়ে গিয়েছে। কোথা থেকে কী হয়ে গেল বুঝে উঠতে পারছেন না। চোখের জলে ভেসে মফিজউদ্দিনের বিবাহিতা মেয়ে জানালেন, বাবা ছোটবেলায় অসম্ভব কষ্ট করেছেন। সেই কষ্টের ফলেই মাস চারেক আগে এক কাঠা জমির উপর এই ছোট বাড়িটা তৈরি করেন। এখনও সব কাজ মেটেনি, তার আগেই সব শেষ হয়ে গেল। তাঁর থেকেই জানা গেল, ছেলের জন্য দোতলা তৈরির পরিকল্পনা করছিলেন মফিজউদ্দিন। কিন্তু এখন যা অবস্থা দোতলা তো দূরস্ত, এই নতুন তৈরি বাড়ি পুরোপুরি ভেঙে ফেলে নতুনভাবে আবার গড়তে হবে। না হলে এখানে বসবাস করা যাবে না।
তবে একশ্রেণির মানুষ যে বিপর্যয়েও সুযোগ খোঁজে তা জানা কথা। এই বিধ্বস্ত পরিবারটির অভিযোগ তাঁদের ভাঙা বাড়ি থেকে নানান মূল্যবান জিনিস গত কয়েকদিনে চুরি করে নিয়ে গিয়েছে লোকজন, সংসারের অনেক গুরুত্বপূর্ণ জিনিস খুঁজে পাচ্ছেন না। এই পরিস্থিতিতে প্রশাসন সাহায্যের হাত বাড়িয়ে না দিলে কী হবে জানে না গোটা পরিবার। বিপর্যয়ের পর প্রশাসনের পক্ষ থেকে কেউ খোঁজ নিতে না আসায় বা ক্ষতিপূরণ ঘোষণা না করায় অবাক সকলেই। রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর উদ্দেশ্যে হাতজোড় করে তাঁদের আবেদন, দয়া করে সাহায্য করুন, না হলে বেঁচে থাকা কঠিন।
এদিকে জীবনে অনেক লড়াই করলেও এই বিপর্যয়ের পর মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছেন মফিজউদ্দিন আলি। কী করবেন বুঝে উঠতে পারছেন না।
রুদ্রনারায়ণ রায়