এবারের মাধ্যমিক পরীক্ষা শুক্রবারই কার্যত শেষ হয়েছিল। শনিবার ছিল অ্যাডিশনাল সাবজেক্টের পরীক্ষা। যা পুরোপুরিভাবে ঐচ্ছিক। ফলে তুলনায় অনেক কম ছাত্র-ছাত্রী এই পরীক্ষায় বসেছিল। কিন্তু এদিন পরীক্ষা শেষের পরের দৃশ্য শক্তি দেখার মত ছিল। বিভিন্ন পরীক্ষা কেন্দ্রের বাইরে যেন অকাল দোল শুরু হয়ে যায়।
আরও পড়ুন: রামকৃষ্ণ পরমহংসদেবের নামাঙ্কিত মেলার গায়ে চুরির কলঙ্ক, বাদ যাচ্ছেন না সাংবাদিকও
advertisement
শুধু পরীক্ষার্থীরা নয়, অভিভাবকদের মধ্যেও যথেষ্ট উৎসাহ ছিল। তাঁরাও একে অপরকে রং মাখাতে ব্যস্ত হয়ে পড়েন। একজন অভিভাবক বলেন, আমাদের মেয়েদের ফার্স্ট ডিভিশন পেতে হবে এমনটা আশা করি না। পাশ করলেই হবে এবং মেয়েরা পাশ করবে।দিদি যখন আছেন তখন সবাই পাশ! মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উপর ভরসা রেখেই রীতিমত মাধ্যমিকের রেজাল্ট আউট করে দিতে দেখা গেল এই অভিভাবকদের। সেইসঙ্গে চলল আবির খেলা।
এই অভিভাবকরা অবশ্য দোলের পরিচিত লাল আবির মাখেননি। তাঁরা সবুজ রং ও আবির নিয়ে আনন্দে মেতে ওঠেন। এ যেন 'দিদির প্রতি আনুগত্যের' প্রমাণ তুলে ধরার ব্যাকুল বাসনা। উল্লেখ্য, এই বছর মাধ্যমিকের অঙ্ক পরীক্ষার প্রশ্ন নিয়ে দেখা দিয়েছে তীব্র বিতর্ক। প্রশ্নপত্র কঠিন থেকে গ্রাফ পেপার না দেওয়া নানান অভিযোগ উঠেছে। পরীক্ষা দিয়ে বেড়িয়েই রীতিমত কান্নাকাটি করতেও দেখা যায় পড়ুয়াদের। পাশ নম্বরও উঠবে না বলে জানায় অনেকে। এই পরিস্থিতিতে অভিভাবকদের একাংশের মুখ্যমন্ত্রীকে জড়িয়ে করা মন্তব্যে গোটা সমাজের অবক্ষয়ের চিহ্ন খুঁজে পাচ্ছেন শিক্ষাবিদরা। তাঁদের মতে, মুখ্যমন্ত্রী তিনি তাঁর দায়িত্ব পালন করেন। কিন্তু পরীক্ষার্থীর অভিভাবক হিসেবে এই ধরনের মন্তব্য করে আসলে রাজনীতিবিদদের কাছ থেকে অন্যায় সুবিধা চান সাধারণ মানুষ। তাঁদের দাবি, রাজনীতিবিদরা অন্যায় করলে সব সময় তাঁদের কাঠগড়ায় তোলা হয়। কিন্তু বহু ক্ষেত্রে তাঁদের সেই অন্যায়ের প্রবণতার পিছনে ভূমিকা থাকে সমাজের একাংশের।
রুদ্রনারায়ণ রায়