দূর দূরান্ত দেশ-বিদেশ থেকেও ভক্তরা আসেন এই মন্দির দর্শনের জন্য। পাশাপাশি গঙ্গা তীরবর্তী হওয়ায় পঞ্চবটি সংলগ্ন গঙ্গার ধারে বহু মানুষকে বসে সময় কাটাতেও দেখা যায়। তবে প্রেমিক-প্রেমিকাদের অনেকের সঙ্গেই কথা বলে জানা গেল তাদের মধ্যে অনেকেরই বিশ্বাস গঙ্গা তীরবর্তী এলাকায় ঘুরলেও প্রেমিক যুগল একসঙ্গে এই মন্দিরে পুজো দিলে, সেই সম্পর্ক আর বেশি দিন এগোয় না বলেই বিশ্বাস। যদিও পুরোটাই অন্ধ বিশ্বাস ছাড়া কিছু নয়। এমনটাও মনে করেন অনেকে।
advertisement
শ্যামনগরের বাসিন্দা অরিন্দম দাস জানান, একদম সত্যি কথা এটি। আমি আমার গার্লফ্রেন্ডকে নিয়ে এসেছিলাম মন্দিরে, পূজাও দিয়েছি। তার তিন মাসের মাথায় আমি জানতে পারি আমার গার্লফ্রেন্ডের অন্য সম্পর্ক আছে। ভেঙে যায় আমাদের সম্পর্ক। আমার এক বন্ধুও এমনই অভিজ্ঞতার সাক্ষী। তবে বিয়ের পরে আসতেই পারেন। কারণ বিবাহিত দম্পতির জন্য এমন কোন ঘটনার কথা শোনা যায়নি বলেই জানি। তবে প্রেমিক-প্রেমিকারা অনেকেই এড়িয়ে চলেন এই মন্দির এটা আমিও শুনেছি।
আরও পড়ুন: এসির কাছাকাছি টিভি, কমপিউটার বা এলইডি আলো নেই তো? বড় বিপদ হতে পারে
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কিশোরী জানান, কলেজ থেকে বন্ধুকে নিয়ে ঘুরতে আসি মন্দিরে, গঙ্গার ঘাটে। তবে বয়ফ্রেন্ডকে নিয়ে আসিনি। অনেকেই বলে দুজনে একসঙ্গে আসলে নাকি সম্পর্ক ভেঙে যায়। সেই ভয়েই আর অন্যান্য জায়গায় গেলেও এই মন্দিরে আসি না বয়ফ্রেন্ড কে নিয়ে। কলেজের অনেকের কাছেই এরকম অভিজ্ঞতার কথা শুনেছি। তবে এর উল্টো কথাও শোনা গেল এক প্রেমিকের কাছে। প্রেমিকার হাত ধরে মন্দির চত্বরে দাঁড়িয়েই তিনি জানালেন, আমি আগেও এসেছি আবারও আজ এলাম। কই আমার তো এখনো পর্যন্ত এমন কোন ঘটনা ঘটেনি জানিনা ভবিষ্যতে হবে কিনা। তবে নিজেদের প্রতি ও সম্পর্কের প্রতি আমাদের বিশ্বাস আছে। এমন কোন ঘটনা ঘটে বলে আমার মনে হয় না। সম্মতি জানালেন পাশে থাকা প্রেমিকাও।
তবে বিষয়টি নিয়ে কানাঘুষো থাকলেও, প্রতিদিন মন্দিরের আশেপাশে বহু প্রেমিক যুগলকেই দেখা যায় সময় কাটাতে। যদিও এ বিষয়টি নিয়ে মন্দির কমিটির তরফ থেকে কোন প্রতিক্রিয়া মেলেনি। তবে প্রেমিক-প্রেমিকাদের জন্য বাড়তি নজরদারি অবশ্যই থাকে মন্দির চত্বরে। কিন্তু এখন লোকমুখে প্রচারিত এই কথায় অনেকে প্রেমিক প্রেমিকারাই এড়িয়ে চলেন এই মন্দির। তবে পরিবার-পরিজন এমনকি বিবাহের পরে সকলকে নিয়ে মন্দির দর্শনে কিন্তু কোন বাধা নেই বলেই জানা যায়। যদি এমন কোন ঘটনা ঘটেও থাকে, তবে তার সঠিক কোন ব্যাখ্যা এখনও পর্যন্ত পাওয়া যায়নি। ওই একবার কেউ অন্ধ বিশ্বাস করলে তা ছড়িয়ে পড়ে। কাকতালীয় ভাবে মিলে যাওয়া ঘটনাই হয়ত প্রেম ভাঙার ভয় দেখাচ্ছে। তবে কলকাতায় এই মন্দির ঐতিহ্যের। ভক্তের কাছে পরম পাওয়া। সব অন্ধ বিশ্বাসকে উড়িয়ে অনেক প্রেমিক-প্রেমিকাই দিব্যি মায়ের পায়ে পুজো দিচ্ছেন। এমন অন্ধ বিশ্বাস ধরে না রাখাই শ্রেয়!
Rudra Narayan Roy