লোকমুখে জানা যায়, চড়ক পুজোর আগের দিন চড়ক গাছকে পরিষ্কার করে জলভরা একটি পাত্রে শিবের (Lord Shiva) প্রতীক শিবলিঙ্গ রাখা হয়। এই প্রতীক শিবলিঙ্গ বুড়োশিব বলেই পরিচিত ভক্তদের কাছে। চৈত্রমাসে গাজনের সন্ন্যাসীরা বা ভক্তরা নিজেদের শরীরকে বিভিন্ন উপায়ে যন্ত্রণা দিয়ে কৃচ্ছ্রসাধনের মাধ্যমে ইষ্ট দেবতাকে সন্তুষ্ট রাখার চেষ্টা করেন। এই সময় ভক্তরা শিব, গৌরী, কালী সহ একাধিক দেবতার রূপে সেজে বিভিন্ন জায়গায় ঘুরে শিবের লৌকিক ছড়া, গান পরিবেশন করে থাকেন।
advertisement
এমনই এক বহুরূপীর দেখা মিলল উত্তর ২৪ পরগনার (North 24 Parganas) ঠাকুরনগর এলাকায়। গোবিন্দ নন্দী নামে ওই ব্যক্তি জানালেন, তাঁতের কাজ করলেও সেভাবে না চলায়, তিনি পেশা বদলে ফেলেন। বিগত সাত বছর ধরে বহুরূপী সেজে ঘুরে বেড়াচ্ছেন জেলার বিভিন্ন প্রান্তে। রীতিমতো আনন্দ সহকারে এই কাজটি করেন তিনি। দিন শেষে পাঁচ থেকে সাতশো টাকা উপার্জনও হয় এই বহুরূপী সাজ এর মধ্য দিয়ে। তিনি গোপালনগর, রামনগর, গাইঘাটা সহ জেলার বিভিন্ন গ্রামাঞ্চলে শিব সেজে ঘুরে বেড়ান।
চৈত্রমাসের শেষ সপ্তাহ জুড়ে সন্ন্যাসী বা ভক্তদের মাধ্যমে শিবের গাজন অনুষ্ঠিত হয়। চৈত্র সংক্রান্তিতে চড়কের পুজোর সঙ্গে এই উৎসবের সমাপ্তি ঘটে। এই গাজন উৎসবকে ঘিরে গ্রামে গ্রামে বিভিন্ন সাজে সজ্জিত হয়ে বেরিয়ে পড়েন বহুরূপী শিল্পীরা। কেউ শিব, কেউ আবার সেজে থাকেন গৌরী। তাদের সঙ্গে কেউ কেউ কালী সেজেও ঢুকে পড়েন। গায়ে নানা রং মেখে নিজেদের হাতে তৈরি গহনায় সাজিয়ে নেন নিজেদেরকে। আর যখন তারা গ্রামের এপ্রান্ত থেকে ওপ্রান্ত ঘুরে বেড়ান, তখন তারাই হয়ে ওঠেন আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দু। এই উৎসব ঘিরে নানা জায়গায় মেলাও বসে। যা চড়কের মেলা নামে পরিচিত। চৈত্রের শেষদিনে চড়ক বা গাজনের উৎসব শেষ হতেই আবারও একবছরের প্রতিক্ষায় দিন গুনতে থাকেন ভক্তরা।
Rudra Narayan Roy