প্রজাদের মঙ্গল কামনা করে উত্তর চব্বিশ পরগনার গোবরডাঙার জমিদার বাড়িতে দুর্গাপূজা চালু করেন তৎকালীন জমিদার ফেলারাম মুখোপাধ্যায়। সেই থেকেই বংশ পরম্পরায় এই পুজোহয়ে আসছে এখানে। গোবরডাঙ্গা জমিদার বাড়ির দুর্গাপুজো এ বছর ৩১২ বছরের পদার্পণ করল। জমিদার বাড়ির এই দুর্গা, প্রসন্নময়ী দুর্গা নামেই পরিচিত গোটা এলাকায়। করোনা কালীন পরিস্থিতিতে মূর্তি পুজোবন্ধ থাকলেও, বর্তমানে গত বছর থেকে ঠাকুর দালানে আবারও তৈরি হচ্ছে দেবী প্রতিমা। তাই জমিদার বাড়ি পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন করে সাজিয়ে তোলার কাজ চলছে। সবমিলিয়ে পুজোর শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি একেবারে তুঙ্গে বলা চলে।
advertisement
আরও পড়ুন: অন্য এক পুজো! চোখের দৃষ্টি নেই, মনের চোখ দিয়েই অদ্ভুত সুন্দর প্রতিমার চক্ষুদান
সময়ের সঙ্গে তাল মিলিয়ে বদলে গিয়েছে অনেক কিছুই। তবে পুরনো নিয়মেই আজও পুজো হয় এই বাড়িতে। সেই আগের মতোই হয় এক চালার ঠাকুর, ডাকের সাজ। বাবলা কাঠের কাঠামোয় তৈরি হয় প্রতিমা। জন্মাষ্টমীর দিন কাঠামো পুজোকরে শুরু হয় প্রতিমা নির্মাণের কাজ। প্রতিপদ থেকেই এই ঠাকুর দালানে ঘট বসিয়ে পুজোকরা হয়। বাকি সব পুজোর আচার এক থাকলেও বদলে গিয়েছে বলিদানের প্রথা। একসময় দুর্গাপুজোয় কামান দাগা হত, মহিষ বলি হত, পাঠা বলি হতো। ১৯৯৭ সাল থেকে বলি প্রথা বন্ধ। তার পরিবর্তে চাল কুমড়ো, আখ বলি দেওয়ার রীতিও বন্ধ করে দেওয়া হয়। এখন মধু, চিনি উৎসর্গ করা হয় দেবতার উদ্দেশে।
আরও পড়ুন: হাসপাতাল চত্বরই যেন ডেঙ্গির আঁতুড় ঘর, চিকিৎসা করাতে এসে আক্রান্ত হওয়ার উপক্রম
বিসর্জনের দিন আকাশে তারা দেখে বিসর্জন করার নিয়ম। এক সময় জমিদার বাড়ির প্রতিমা বিসর্জনের পর গ্রাম বা বারোয়ারী পুজোর প্রতিমা বিসর্জন হত। এখন আর সেই নিয়ম নেই। পরিবারের বেশির ভাগ সদস্যই থাকেন বিদেশে। সারা বছর হাতে গোনা কয়েকজন পরিবারের সদস্যরা থাকেন এই বাড়িতে। কিন্তু পুজোর সময় আত্মীয়-স্বজন থেকে শুরু করে সকলেই বাড়িতে আসেন বলেই জানালেন গোবরডাঙ্গা জমিদার বাড়ির দুই ভাই অঞ্জন প্রসন্ন মুখোপাধ্যায় ও নরণ প্রসন্ন মুখোপাধ্যায়। ওই কয়েকদিন জমজমাট থাকে গোবরডাঙ্গা জমিদার বাড়ির পুজো কে ঘিরে। বহু মানুষ ভিড় জমান ঐতিহ্যময় গোবরডাঙ্গা জমিদার বাড়ির পুজো দেখতে।
Rudra Narayan Roy