ত্রিপুরার মহারাজা বীর বিক্রম মাণিক্য বাহাদুরের দান করা জমিতে ১৯৪২ সালে প্রথম সামরিক বিমান বন্দর তৈরি হয়েছিল। পরে ২০১৮ সালে মহারাজের নামে এটির নামকরণ করা হয়। নতুন টার্মিনাল ভবনটি অন্তর্দেশীয় এবং প্রস্তাবিত আন্তর্জাতিক উড়ান মিলিয়ে ১২০০ জন যাত্রী থাকতে পারবেন। নতুন টার্মিনালে ২০ টি চেক-ইন কাউন্টার, একটি হ্যাঙ্গার, ছয়টি বে, ১০ টি ইমিগ্রেশন কাউন্টার, পাঁচটি কাস্টমস কাউন্টার, লিঙ্ক ক্যাবের ব্যবস্থা, ব্যাগিং স্টোর থাকবে।
advertisement
আরও পড়ুন-নতুন বছরে স্বাদবদল, ঘরোয়া উপকরণ দিয়েই চটজলদি বানিয়ে ফেলুন প্রোটিন সমৃদ্ধ এই পাঁচ সস
বিমানবন্দর এমন ভাবে নির্মাণ করা হয়েছে যাতে বছরে ৩০ লক্ষ যাত্রী যাতায়াত করতে পারে। এমনই নতুন টার্মিনাল তৈরি হল আগরতলা বিমানবন্দরের জন্য। বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, আগামী কয়েকদিনের মধ্যেই নতুন এই টার্মিনাল যাত্রীদের জন্য চালু করে দেওয়া হবে।ত্রিপুরার রাজধানী আগরতলার এই মহারাজা বীর বিক্রম বিমানবন্দর শুধু ত্রিপুরার নয়, উত্তর-পূর্ব ভারতের অন্যতম প্রধান বিমানবন্দর।
বাগডোগরা ও গুয়াহাটির পরে ত্রিপুরার এই বিমানবন্দরে সবচেয়ে বেশি মানুষ যাতায়াত করেন। ত্রিপুরা থেকে সহজে বিমানের মাধ্যমেই কলকাতা ও দিল্লি-সহ ভারতের অন্য রাজ্যের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়। ত্রিপুরা তথা উত্তর-পূর্বের, এমনকি বাংলাদেশেরও বহু মানুষ প্রধানত চিকিৎসার কারণে বিমানে কলকাতা, দিল্লি, মুম্বই, চেন্নাই, বেঙ্গালুরু যাতায়াত করেন। কলকাতা ছাড়াও সরাসরি দিল্লি, চেন্নাই, বেঙ্গালুরু, শিলং, ইম্ফল, গুয়াহাটির উড়ান রয়েছে আগরতলা থেকে। বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষের দাবি, পুরনো যে টার্মিনাল রয়েছে, সেটিতে আর জায়গা নেই। যে সময়ে সবচেয়ে বেশি উড়ান থাকে, তখন সেখানে একসঙ্গে পাঁচশোর বেশি যাত্রী হয়ে গেলে ভালোভাবে বসার জায়গা থাকে না। যাত্রীদের পর্যাপ্ত দাঁড়ানোর জায়গাও থাকে না। এই অবস্থায় প্রায় ৫০০ কোটি টাকা খরচ করে নয়া টার্মিনাল তৈরি করা হল।
কেন্দ্রীয় মন্ত্রী প্রতিমা ভৌমিক জানিয়েছেন, "এবার আগরতলা থেকে আন্তর্জাতিক উড়ান চালানোরও পরিকল্পনা হচ্ছে। তাই, অভ্যন্তরীণ ও আন্তর্জাতিক দুটি ক্ষেত্র নিয়ে ইন্টিগ্রেটেড টার্মিনাল তৈরি হল আমাদের রাজ্যে। এর ফলে আমাদের রাজ্যে অর্থনৈতিক ও পর্যটন ক্ষেত্রেও সুবিধা হবে।" এখন একসাথে খুব বেশি উড়ান থাকলেও সর্বোচ্চ ১০০০ অভ্যন্তরীণ যাত্রী এবং ২০০ আন্তর্জাতিক যাত্রী বসতে পারবেন। ৩০ হাজার বর্গ মিটার জায়গা জুড়ে তৈরি এই টার্মিনালে ২০টি চেক-ইন কাউন্টার, ৪টি এরোব্রিজ, চারটি কনভেয়ার বেল্ট বসানো হয়েছে।
আরও পড়ুন-রাশিফল ৪ জানুয়ারি; দেখে নিন কেমন যাবে আজকের দিন
উড়ান বাড়ার কথা মাথায় রেখে বাড়ানো হচ্ছে বিমান দাঁড়ানোর অ্যাপ্রন এলাকাও। সেখানে নতুন ছ’টি পার্কিং বে-ও তৈরি করা হচ্ছে। বিমানবন্দরের নয়া টার্মিনালে স্থানীয় সংস্কৃতির পরিচয় বহন করে, নতুন টার্মিনাল তৈরির সময় ব্যবহার করা হয়েছে বাঁশ, জালি এবং ম্যুরাল। বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, ত্রিপুরার গ্রামে ও শহরে বাড়ি তৈরির ক্ষেত্রে এই বাঁশ ও জালির ব্যবহার বহুল প্রচলিত। এমন ভাবে জালি ব্যবহার করা হচ্ছে, যাতে দিনের বেলায় পর্যাপ্ত সূর্যালোক টার্মিনালের ভিতরে ঢুকতে পারে। জালি ব্যবহার করে প্রাকৃতিক আলোকে কাজে লাগিয়ে শক্তি সঞ্চয়ও হবে বলে বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষের দাবি। অন্যদিকে, আগরতলার এই নয়া টার্মিনালের পাশাপাশি কৈলাশহর বিমানবন্দরকেও আধুনিক করা হচ্ছে। আর তা হয়ে গেলে শিলচর, করিমগঞ্জের মানুষও সুবিধা পাবেন।
আবীর ঘোষাল