সূত্রের খবর, নদিয়ার হরিপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের উত্তর কলোনি এলাকার এক বাসিন্দার চোদ্দ বছরের নাবালিকা মেয়েকে দাহ করেছেন। গত ফেব্রুয়ারি মাসের ২৫ তারিখে বাড়িতেই নাবালিকার অস্বাভাবিক মৃত্যু হয়। সূত্রের খবর, এর পরেই তড়িঘড়ি হরিপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের অধীন নৃসিংহপুর শ্মশানে দাহ করে ফেলা হয় ওই নাবালিকাকে। এখানেই উঠছে প্রশ্ন, কোনও রকম ডেথ সার্টিফিকেট ছাড়া কীভাবে রাতের অন্ধকারে দাহ করে ফেলা হল ওই নাবালিকাকে?
advertisement
আরও পড়ুন: অ্যাডিনোভাইরাসের শিকার ৮ থেকে ৮০! হাসপাতালে উপচে পড়ছে রোগীদের ভিড়, ভয়াবহ পরিস্থিতি
এলাকার স্থানীয় বাসিন্দাদের থেকে জানা যায়, ওই শ্মশানটিতে দাহ করার জন্য বৈধ কাগজপত্রের প্রয়োজন হয় না। প্রসঙ্গত, নদিয়ার হাঁসখালি কান্ডে ঠিক এইরকমই একটি শ্মশান নিয়ে তোলপাড় হয়ে উঠেছিল গোটা রাজ্য তথা দেশ। যেখানে কোনও বৈধ কাগজপত্র ছাড়াই হাঁসখালির নির্যাতিতা নাবালিকাকে দাহ করে ফেলা হয়েছিল বলে অভিযোগ ওঠে। ওই ঘটনার পরেও কীভাবে এখনও পর্যন্ত রমরমিয়ে বেআইনিভাবে চলতে পারে এই অবৈধ শ্মশান, তা নিয়ে স্থানীয়রা প্রশ্ন তুলেছেন।
আরও পড়ুন: নাকা চেকিং ভাঙতেই তাড়া করে লরি থামায় পুলিশ, ভিতরে উঁকি দিতেই চোখ কপালে, হরিণঘাটায় চাঞ্চল্যকর কাণ্ড!
ওই এলাকার পঞ্চায়েত সদস্য গোপাল মজুমদার জানান, যেহেতু এই শ্মশানটি বাড়ির কাছে সেই কারণে তাকে দাহ করে দেওয়া হয়েছে। তাকে ডেথ সার্টিফিকেট চাওয়া হলে তিনি বলেন , 'কোনও এক অশরীরী আত্মা ও মৃত নাবালিকা ডেথ সার্টিফিকেট এবং আধার কার্ড নিয়ে উধাও হয়ে গিয়েছে'। এবং জানা যায় ওই পঞ্চায়েত সদস্য গোপাল মজুমদার নিজে দায়িত্ব নিয়েই দেহ দাহ করে দেন ওই নাবালিকার। এ বিষয়ে হরিপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান শোভা সরকার বলেন, 'এ বিষয়ে তাঁর কিছু জানা নেই। বিষয়টি নিয়ে তদন্ত করা হচ্ছে প্রয়োজনে উপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে'।
হাঁসখালির ঘটনার পরেও কী ভাবে রমরমিয়ে অবৈধ শ্মশান চলতে পারে সে নিয়ে উঠছে প্রশ্ন। ওই শ্মশানের এক অস্থায়ী কর্মী কালো ভুঁইফোরের দাবি, তিনি ওই শ্মশানে উপস্থিত না থাকলেও অনেকেই এসে শ্মশানে দাহ করে চলে যান। যে রাতে নাবালিকাকে দাহ করা হয়েছিল সেই সময় তিনি উপস্থিত ছিলেন না। দাহ করার পর বেশ কিছুদিন হয়ে গেলেও কোনও রকম নাম নথিভুক্ত করাতে কেউ আসেনি বলে অভিযোগ করেন তিনি।
শান্তিপুরের বিধায়ক বিষয় গোস্বামী জানান, "যতদূর আমি জানি থানায় কোনও লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়নি। যদি তাঁরা কোনও ডাক্তারের থেকে নিজেদের মতো করে সার্টিফিকেট বার করে থাকেন সেই ডাক্তারবাবু এটা দিয়ে ঠিক কাজ করেননি। বিষয়টি আমি শুনলাম বিষয়টি তদন্ত করা হবে"। বৈধ কাগজপত্র ছাড়াই দিনের পর দিন রমরমিয়ে অবৈধ শ্মশানে দাহ করা হচ্ছে বলে অভিযোগ স্থানীয়দের।
মৈনাক দেবনাথ