সংস্কৃত শব্দ ‘যুজ’ থেকে আহরিত যোগ এর অর্থ হল ব্যক্তি সত্তার সঙ্গে বিশ্ব সত্তার মিলন। যোগের জ্ঞান ৫০০০ বছরের পুরানো ভারতীয় জ্ঞান। যদিও অনেকেই মনে করেন যোগ মানে শুধুই শারীরিক কসরৎ, যেখানে জটিল পদ্ধতিতে শরীরটাকে মুচড়িয়ে, ঘুরিয়ে, টেনে ফেলতে হয় এবং কিছু কঠিন শ্বাসের ক্রিয়া করা হয়ে থাকে। এসব কিছু আসলে মানুষের মন ও আত্মার ভেতরে যে অনন্ত শক্তি ও সম্ভাবনা আছে, সেই সম্ভাবনাকে বিকশিত করে তোলবার বৈজ্ঞানিক পদ্ধতি।
advertisement
আরও পড়ুন ঃ বর্ষার বৃষ্টি থেকে পাখিদের বাঁচাতে মানুষ তার হয়ে গাছে বাঁধবে বাসা!
তবে এর সঙ্গে আধ্যাত্মিকতার সম্পর্ক কি? অ্যাড্রিনাল, পিটুইটারি বিভিন্ন গ্র্যান্ড থেকে ক্ষরিত রসের অল্প ক্ষরণ অথবা অতিক্ষরণের প্রভাব জীবজগতে খুব সাধারণ বিষয়। সেই কারণেই চোখ কান নাক, জিভ, ত্বক, পঞ্চ ইন্দ্রিয় ছাড়াও মনের ওপর অনেকটাই নির্ভর। আর সেই কারণে তো, চিন্তা অর্থাৎ টেনশন এখন সব রোগের উপর প্রভাব বিস্তার করে বসেছে। আর সেখান থেকে মুক্তি পেতে যোগ, ধ্যান, প্রাণায়াম অত্যন্ত প্রয়োজন হয়ে দাঁড়িয়েছে।
ভারতেই প্রথম যোগচর্চা শুরু হয়েছিল। তার উল্লেখও পাওয়া যায় ঋক বেদের মতো প্রাচীন পৌরাণিক বইগুলিতে। শরীর ও মনকে সুস্থ রাখতে যোগব্যায়ামের কার্যকারিতা অনেক। তাই প্রত্যেক মানুষের যোগব্যায়াম করা প্রয়োজন। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী UNGA-তে বক্তৃতার সময় প্রথম আন্তর্জাতিক যোগ দিবসের ধারণাটি উপস্থাপন করেছিলেন। এরপর ২০১৪ সালে ২১ শে জুন তারিখকে আন্তর্জাতিক যোগ দিবস হিসাবে ঘোষণা করেছে UNGA।
প্রাচীন কাল থেকে সমৃদ্ধশালী ভারতবর্ষের সংস্কৃতি শিল্পকলা, ধন-সম্পদ, আধ্যাত্বিক চেতনা এমনকি চিকিৎসা বিজ্ঞান পর্যন্ত বিভিন্ন দেশ তা নিয়ে গবেষণা করে আজ সমৃদ্ধ হয়েছে। চরক সুশ্রুত, আর্য ভট্ট, রামানুজনদের মত বহু মহামানবের নজির এই ভারতবর্ষে। এমন কি বর্তমান চিকিৎসা ব্যবস্থার আয়ুর্বেদিক, ইউনানী, আকুপ্রেশার ও সেই আমলে ভারতের সৃষ্ট।
সেই আকুপ্রেসারকে আজ আকুপাংচার নামে প্রচার করে, সারা পৃথিবীতে বিখ্যাত হয়ে উঠেছে চীন। তাই ভারতীয়, মহামূল্যবান তথ্য অনুযায়ী শারীরিক অনুশীলন, খাদ্যাভ্যাস, যোগ অনুশীলন, প্রাণায়াম আবারও স্বমহিমায় ফিরিয়ে নিয়ে আসতে, সারা পৃথিবী জুড়ে প্রচার এবং প্রসার ঘটাচ্ছে পতঞ্জলি যোগ সমিতি, ভারত স্বাভিমান। আর তারই শাখা হিসেবে সারা ভারত তথা রাজ্যে এমনকি জেলায় জেলায় প্রতিটা ব্লকে গড়ে উঠেছে সংগঠন।
শান্তিপুরের ওম যোগা সেন্টার তাদের ছাত্রছাত্রীদের নিয়ে সারা বছর নিয়মিত অনুশীলন করিয়ে থাকেন যোগা। তবে আক্ষেপ প্রকাশ করে সংগঠনের প্রশিক্ষক জানান সরকারি বিধি ব্যবস্থা তাদের কাছে এসে পৌঁছায় না। তার মধ্য দিয়েও তাদের ছাত্রছাত্রীরা জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পুরস্কার পেয়ে থাকে। অন্যদিকে গত কাল, যোগা দিবস উপলক্ষে ফুলিয়া জন রঞ্জন কেন্দ্রের মাঠে, নদিয়া জেলার পতঞ্জলি যোগ সমিতির আয়োজনে ৮০০ জন নিয়মিত অনুশীলনকারী এক প্রদর্শনীর আয়োজন করেন।
Mainak Debnath