মুর্শিদাবাদের খড়গ্রামের খাসপুর একটি প্রত্যন্ত গ্রাম। এই গ্রামের অধিকাংশ বাসিন্দাই দরিদ্র পরিবারের। অভিভাবকরা বাধ্য হয়েই তাদের পরিবারের মেয়েদের এই স্কুলে ভর্তি করেছেন কারণ বেসরকারি বিদ্যালয়ে পড়ানোর মতো তাঁদের আর্থিক সঙ্গতি নেই। তাই পরিবারের মেয়েদের স্বাক্ষর বা শিক্ষিত করে তোলার জন্য একমাত্র ভরসা এই স্কুল। শিক্ষক শিক্ষিকা না থাকলেও ছাত্রীরা প্রতিদিন বিদ্যালয়ে এসে তাদের নিজেদের মতো করে একসঙ্গে বসে পড়াশোনা করে তারপর মিড ডে মিল খেয়ে খেলাধুলা করে বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা দেয়। যদিও মিড ডে মিল নিয়েও রয়েছে বিস্তর অভিযোগ।
advertisement
আরও পড়ুন: মাইক্রোসফট ওয়ার্ডের এই ৫ ট্রিক আসান করে দেবে লেখালিখি
আরও পড়ুন: হেলমেট না থাকার মাসুল! বেলডাঙায় পথ দুর্ঘটনায় মৃত্যু তিনজনের
পড়ুয়াদের দাবি, মিড ডে মিলের খাবারটাও তাদের নিয়মিত দেওয়া হয় না। যদিও স্কুলের প্রাক্তন ছাত্রীরা জানালো, 'এই স্কুলের প্রতিষ্ঠার প্রথমদিকের ছাত্রী ছিলাম আমরা। অনেক স্মৃতি জড়িয়ে আছে। তখন খুব ভালো চলত স্কুল কিন্তু এখন শিক্ষিকাদের বদলি হয়ে প্রায় বন্ধ হয়ে যেতে চলেছে। খুব খারাপ লাগছে।' ওই স্কুলের সভাপতি শওকত আলি মণ্ডল বলেন, 'মেয়েদের শিক্ষার প্রসারের স্বপ্ন নিয়ে বড় আশা করে আমি স্কুলের জন্য জমি দান করেছিলাম । কিন্তু সেই স্বপ্ন ধুলোয় মিশে গেল। পরিস্থিতি জটিল হয়ে উঠেছে। দ্রুত ব্যবস্থা না নিলে এলাকার মেয়েরা পিছিয়ে পড়বে।'
এই অবস্থায় প্রশাসনের কাছে স্কুলের অভিভাবকদের দাবি, বিদ্যালয়ে যেন অবিলম্বে শিক্ষক-শিক্ষিকা নিয়োগ করা হয়। দেশের সরকার যখন 'বেটি বাঁচাও বেটি পড়াও' বলে স্লোগান তুলছেন, স্কুল ছুট কমাতে ও বাল্যবিবাহ রোধে নানান প্রকল্পের ঘোষণা করা হচ্ছে ও নারী শিক্ষার উদ্দেশ্যে বিশেষভাবে জোর দেওয়া হচ্ছে সেখানে মুর্শিদাবাদের মতো পিছিয়ে পড়া ও সংখ্যাতত্ত্বের হিসেবে বাল্যবিবাহের শীর্ষে থাকা জেলার, প্রত্যন্ত গ্রামের এই গার্লস জুনিয়র হাই স্কুলের এমন অবস্থা সত্যিই শিক্ষা ব্যবস্থার দুর্দশা চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিচ্ছে।
KOUSHIK ADHIKARY