কৌশিক ঘোষ নিজে বড়ঞার বিধায়ক জীবন কৃষ্ণ সাহার ২০২১ সালে ভোটের নির্বাচনী প্রচারে নাম ব্যবহার করেছিলেন। একদা বড়ঞার বাসিন্দা কৌশিক ঘোষ তিনিও চাকরির নিয়োগ দুর্নীতির কাণ্ডে জড়িত রয়েছেন। গত দু'মাস ধরে সিবিআইয়ের হেফাজতে রয়েছেন তিনি। তাঁর আত্মীয়ের চাকরি গিয়েছে ইতিমধ্যেই।
আরও পড়ুন: এতবড় ধাপ্পাবাজি! জীবনকৃষ্ণের চাকরি নিয়ে যা জানল সিবিআই, জানলে মাথায় হাত পড়বে যে কারও
advertisement
সূত্রের খবর, মুর্শিদাবাদ এবং বীরভূম জেলায় চাকরি বিক্রির র্যাকেটে যুক্ত ছিলেন কৌশিক ঘোষ, জীবন কৃষ্ণ সাহা-সহ বহু এজেন্ট। লেনদেন হত কোটি কোটি টাকায়। জানা যায়, কৌশিক ঘোষের সঙ্গে জীবন কৃষ্ণ সাহার পরিচয় করিয়ে দিয়েছিলেন কৌশিকের দাদা শিক্ষক সৌমিত্র ঘোষ। এই সৌমিত্র ঘোষ এবং জীবন কৃষ্ণ দু'জনেই বীরভূমের নানুর এলাকার একটি প্রাথমিক স্কুলে শিক্ষকতা করতেন।
পরে কৌশিক ঘোষ ও জীবন কৃষ্ণের মধ্যে বন্ধুত্ব হয়। তৈরি হয় এক অটুট বন্ধুত্বের সম্পর্ক। কিন্তু কৌশিক ঘোষ ছিলেন জীবন কৃষ্ণ সাহার গুরু। কে এই কৌশিক ঘোষ? কৌশিক ঘোষের বাড়ি মুর্শিদাবাদের বড়ঞা থানার ভড়ঞা গ্রামে। বাবার নাম মহিপতি ঘোষ। পড়াশোনার সুবাদে ছোট থেকেই কৌশিক ঘোষ ভাড়াবাড়িতে সাঁতরাগাছিতে থাকতেন। ওখানেই একটি বেসরকারি সংস্থায় কাজ করতেন। গত দু’মাস আগে সিবিআইয়ের হাতে গ্রেফতার হন কৌশিক ঘোষ-সহ আরও কিছু এজেন্ট।
তাঁদের জিজ্ঞাসাবাদ করেই সিবিআই জানতে পারে একটা সময় কৌশিক ঘোষ শিক্ষক দুর্নীতি মামলায় কোটি কোটি টাকা তুলেছেন। কৌশিকের জাল বিছানো ছিল মুর্শিদাবাদ, বীরভূম-সহ বিভিন্ন এলাকায়। প্রথমে কৌশিক ঘোষের এজেন্ট হিসাবেই কাজ করতেন বিধায়ক জীবনকৃষ্ণ সাহা। যদিও ২০২১ সালে বিধায়ক হওয়ার পর থেকেই শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতির ব্যবসা নিজেই শুরু করেন জীবনকৃষ্ণ। পরে কৌশিক ঘোষ এবং জীবন কৃষ্ণ সাহা দুজনেই চাকরি বিক্রির মূল পাণ্ডা হয়ে ওঠেন। পরবর্তী সময়ে কৌশিকের সঙ্গে জীবনের বাবার পারিবারিক সম্পর্ক তৈরি হয়।
সূত্রের খবর, দিল্লিতে একটি পেট্রোলিয়াম সংস্থায় মোটা বেতনের চাকরি করত কৌশিক। কিন্তু সেটা ছেড়ে দিয়ে চাকরির মিডলম্যান হিসাবে কাজ শুরু করেন। গ্রুপ-সি থেকে গ্রুপ-ডি, বিভিন্ন চাকরি বিক্রির ক্ষেত্রে মিডলম্যান হিসাবে কাজ করেছেন কৌশিক ঘোষ। এমনটাই দাবি, সিবিআইয়ের। ২০২১ সালে এলাকায় তৃণমূলের প্রচারের বেশিরভাগ ফেস্টুন, পোস্টারে প্রচারক হিসাবে লেখা থাকত কৌশিক ঘোষের নাম। প্রতিবেশীদের বক্তব্য এলাকায় যথেষ্ট মেজাজ নিয়ে চলত কৌশিক। কেউ অন্য কোনও দল করলে নাকি মাটিতে পুঁতে দেওয়ার হুমকিও দিতেন। তবে এই দুই গুরুশিষ্য এখন সিবিআইয়ের হেফাজতে রয়েছেন।
কৌশিক অধিকারী