লালু দাসের বাপ-ঠাকুরদাও ঢাকি ছিলেন। ফলে ছোট থেকেই ঢাক বাজানোয় হাত পাকিয়েছেন তিনি। ১৯৮৯ সালে মুম্বাইয়ের আরব সাগরের তীরে বাসিন্দাদের তাঁর বাদ্যে মশগুল করেন লালু দাস। তার পর থেকে প্রতি বছরই গায়ক অভিজিৎ ভট্টাচার্যের দুর্গাপুজোয় ডাক পড়ে তাঁর। ২০০৪ সালে হনলুলু অ্যাকাডেমি অফ আর্টস এর ডাকে যান হাওয়াই দ্বীপপুঞ্জে। ২০০৬ সালে ভয়েস অফ বেঙ্গল অনুষ্ঠানের মঞ্চে জাদু দেখায় তাঁর ঢাক। ২০০৭ সালে পাড়ি দিয়েছিলেন সিডনি-সহ অস্ট্রেলিয়ার শহরগুলিতে। এতো গেল বিদেশের কথা। দেশের এমন কোনও প্রান্ত নেই যেখানে তিনি ঢাক বাজাতে যাননি।
advertisement
আরও পড়ুনঃ ফিরল কফিন বন্দি পরিযায়ী শ্রমিকের মৃতদেহ, শোকের ছায়া পরিবারে
এ হেন প্রতিভাবান শিল্পীকে সারাটা বছর পেটের দায়ে টানতে হয় ভ্যান কিংবা রিক্সা। যদিও তা নিয়ে কোনও আক্ষেপ নেই তাঁর। ২২জন নিজের দলের ঢাকি ও কাঁসর বাদকদের নিয়ে মুম্বাই রওনা দেওয়ার আগে এখন জোড় প্রস্তুতি চলছে ঢাক বাজানোর। যদিও লালু দাস তিনি বলেন,' পুজোর সময় কিছুটা কাজ মিললেও, সারা বছর কিছু কাজ থাকে না তাই আগে রিক্সা, ভ্যান চালাতাম। টোটোও চালিয়েছি। কিন্তু এখন বয়স হয়ে যাওয়ায় সেসব ছেড়ে দিয়েছি। লোকের বাড়ির পুজোয় ডাক পেলে যাই। এভাবেই চলে যাচ্ছে। তবে কোভিডের পর এবছর আবার ডাক এসেছে লালু ঢাকির। পুজোর আগেই রওনা দেবেন মুম্বাই।
আরও পড়ুনঃ থামছেই না ভাঙন! এগিয়ে আসছে গঙ্গা, আতঙ্কে সামশেরগঞ্জবাসী
লালু দাস বলেন, ‘সব পেলাম কিন্তু কোনওদিন সরকারি স্বীকৃতি পেলাম না। সরকারের তরফ থেকে গাইয়েদের পুরস্কৃত করা হলেও, বাজিয়েদের জন্য কোনও পুরস্কার নেই।’ গলায় সন্তুষ্টির স্বর নিয়ে বললেন, ঢাক বাজিয়ে তাঁর মতো নাম কজনই বা পেয়েছেন? কিন্তু, তাঁর স্বপ্ন এই প্রজন্মকে এই পেশার প্রতি আকৃষ্ট করা। কিন্তু, তার জন্য কিছু সরকারি সাহায্যের প্রয়োজন। সরকার যদি পাশে দাঁড়ায় তা হলে আগামী দিনে আরও অনেক লালু দাস বিশ্বদরবারে বাংলাকে শ্রেষ্ঠত্বের আসনে বসাতে পারবেন।
Koushik Adhikary