নবাব মুর্শিদ কুলি খান তাঁর রাজধানী ঢাকা থেকে মকসুদাবাদে স্থানান্তরিত করার পর, নবাব মুর্শিদ কুলি বেগমদের জন্য শাড়ি বোনার বরাত দেন মুর্শিদাবাদের বালুচর গ্রামের দক্ষ কারিগরদের। তাঁদের হাতের ছোঁয়ায় নানান পৌরাণিক কাহিনী কে বুকে নিয়ে গড়ে ওঠে রেশমের বালুচরী শাড়ি। কিন্তু বর্তমানে রেশম শিল্পীরা বর্তমানে দুরবস্থার মধ্যে দিয়ে দিন কাটাচ্ছেন। বর্তমানে মূল্যবৃদ্ধির বাজারে মুর্শিদাবাদে রেশম শিল্পীদের এমন দৈন্যদশা।
advertisement
কারিগরদের জন্যও যেমন কিছু ভাবা হয়নি, তেমনই বাজার ধরে রাখতেও চোখে পড়েনি সরকারি উদ্যোগ। যে সিল্কের খ্যাতি বিশ্বজুড়ে সেই রেশম কারিগরদের নুন আনতে পান্তা ফুরোয়। অনিশ্চিত এই পেশা থেকে মুখ ফেরাতে শুরু করেছেন বহু শিল্পী। তবে দীর্ঘদিন ধরে এমন পেশাকে ভালোবেসে অন্য পেশায় যেতে পারেননি অনেকেই। তবে তাদের আগামী প্রজন্ম আদৌ কতদিন এই পেশাকে ধরে রাখতে পারবে তা জানা নেই তাদেরও। এমন সংকটের মুখে দাঁড়িয়ে ঐতিহ্যবাহী মুর্শিদাবাদ সিল্ক বা রেশম শিল্প নিজের অস্তিত্ব সংকটে লিপ্ত।
আরও পড়ুনঃ জেলায় একের পর আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধারে সাফল্য পেল পুলিশ
ষোড়শ ও সপ্তদশ শতাব্দীতে মোঘল সম্রাটদের সর্বাঙ্গীন পৃষ্ঠপোষকতায় তৎকালীন অবিভক্ত বাংলায় রেশমশিল্প ব্যাপকতায় উন্নীত হয়। অধুনা বাংলাদেশের রাজশাহী জেলা ও ভারতের মালদা ও মুর্শিদাবাদ বেঙ্গল সিল্কের প্রধান উৎপাদনস্থল হিসেবে গন্য হয়। রাজশাহী ও মালদা, সিল্ক ইতিহাসের সেই নজিরই বহন করে এখনও। এক সময় মুর্শিদাবাদ খ্যাতি লাভ করেছিল পূর্ব ভারতের ‘সিল্ক মক্কা’ হিসেবে। মুর্শিদাবাদ সিল্কের কদর ছিল দেশ-বিদেশে।
আরও পড়ুনঃ ফের আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার মুর্শিদাবাদে! ৫টি বন্দুক ও কার্তুজ বাজেয়াপ্ত করল পুলিশ
এখনও ভিন্ন দেশীয় মানুষের মধ্যে সিল্কের সেই চাহিদা রয়েছে। কিন্তু উৎপাদন কমে যাওয়ায় বাজারে সে ভাবে মেলে না উঁচু দরের মুর্শিদাবাদ সিল্ক। রেশমশিল্প একপ্রকার হস্তশিল্প। রেশম শব্দটি ফার্সি ভাষা থেকে এসেছে। তবে মুর্শিদাবাদ সিল্কের গুনমান ও মর্যাদা রয়েছে যথেষ্টই। তবে এই শিল্পের সাথে জড়িত কারিগরদের আক্ষেপ পাহাড়প্রমান। প্রশাসনিক উদাসীনতার কারণ তো আছেই। পাশাপাশি পরিশ্রমের মূল্য একেবারেই নগন্য। এক কারিগরের বক্তব্য, একটি সিল্ক শাড়ী তৈরী করতে লাগে দুদিন। প্রয়োজন হয় দুজন কারিগরের। যার মূল্য পান তারা ২৫০ টাকা মাত্র।
Koushik Adhikary