কদিন আগেই এই মালদহতেই রোগীকে অ্যাম্বুলেন্সে তোলা নিয়ে চালকদের মধ্যে ঝামেলার লজ্জাজনক খবর সামনে এসেছিল। কার অ্যাম্বুলেন্সে ওই রোগী উঠবেন তাই নিয়ে বিবাদের জেরে সময়মতো হাসপাতালে পৌঁছতে না পেরে সেই ব্যক্তির মৃত্যু হয় বলে পরিবারের অভিযোগ। সেই মালদহ শহরেই আশ্চর্যজনকভাবে প্রায় দু’মাস ধরে একের পর এক রোগীকে বিনামূল্যে হাসপাতালে পৌঁছে দিচ্ছেন এই টোটো চালক। মাত্র তিন মাস আগে এই টোটোটি কেনেন জিতেন। টোটো চালিয়েই যা রোজগার হয় তা দিয়েই চলে সংসার।
advertisement
আরও পড়ুন: হঠাৎ টিবি আক্রান্তের সংখ্যা বাড়লো আলিপুরদুয়ারে, পরিস্থিতি সামলাতে টাস্ক ফোর্স
পরিবারের তরফ থেকে জানা গিয়েছে ছোটবেলা থেকেই জিতেনের ইচ্ছে ছিল সমাজসেবা করার।ইচ্ছে থাকলেও আর্থিক সামর্থ্য না থাকায় তা এতদিন হয়নি। এখনও আর্থিক অনটন আছে। তবে মানুষের পাশে দাঁড়ানোর তাগিদ থেকেই বুদ্ধি খাটিয়ে নিজের টোটোকে অ্যাম্বুলেন্স বানিয়ে ফেলেছেন। সারাদিন টোটো চালানোর মধ্যেই কেউ অসুস্থ হয়ে পড়েছেন খবর পেলেই টোটো নিয়ে তাঁর বাড়িতে হাজির হয়ে যান। সম্পূর্ণ বিনামূল্যে পৌঁছে দেন হাসপাতালে। এভাবেই সমাজের কাজ করে আসছেন জিতেন চৌধুরী
টোটো চালকের এই অসামান্য কীর্তি প্রসঙ্গে প্রতিবেশী অনুপম সরকার বলেন, আমাদের পাড়ার জিতেন খুব ভালো কাজ করছে সমাজের জন্য। কয়েকদিন আগে আমার মা হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়ে। তখন জিতেন বিনামূল্যে টোটো অ্যাম্বুলেন্সে করে মাকে হাসপাতালে পৌঁছে দেয়।
জিতেনের টোটোর সামনে বড় বড় হরফে লেখা আছে অ্যাম্বুলেন্স। সেই সঙ্গে দেওয়া আছে তাঁর মোবাইল নম্বর। ৮৪৩৬৯১৯৩৬৬ এই নম্বরে ফোন করলেই টোটো অ্যাম্বুলেন্স নিয়ে বাড়ির দোরগোড়ায় গিয়ে হাজির হবেনি জিতেন। সাধারণ অ্যাম্বুলেন্স অলিগলিতে ঢুকতে পারে না। কিন্তু ওই সমস্ত সরু রাস্তায় টোটো সহজেই ঢুকে যায়। তাই জিতেনের টোটো অ্যাম্বুলেন্সের গুরুত্ব মালদহ শহরে দিন দিন বাড়ছে।
এদিকে টোটো অ্যাম্বুলেন্সের প্রাণপুরুষ জিতেন মানুষের পাশে দাঁড়ানোর জন্য আগামী দিনে আরও বড় করে কোনও কিছু করতে চান। সত্যিকারের অ্যাম্বুলেন্স কেনার ইচ্ছে আছে। এবং সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হল, ওই অ্যাম্বুলেন্স নিয়েও সকলকে বিনা পয়সায় পরিষেবা দিতে চান তিনি। পাশাপাশি আগামী দিনে আরও টোটো কিনে টোটো অ্যাম্বুলেন্স তৈরি করে সাধারণ মানুষকে পরিষেবা দিতে চান। জিতেন চৌধুরীর এই কাজকে সাধুবাদ জানিয়েছে সকলে।
হরষিত সিংহ