জানার অধিকার সকলেরই রয়েছে। সেই জায়গা থেকেই এই মাদ্রাসার অমুসলিম সম্প্রদায়ের পড়ুয়ারা আরবি বিষয়টি পড়াশোনা করছে। পঞ্চম থেকে দশম শ্রেণি পর্যন্ত মাদ্রাসায় তৃতীয় ভাষা হিসেবে আরবি পড়ানো হয়। এই মাদ্রাসার অমুসলিম পড়ুয়ারাও এই বিষয়টি মাধ্যমিক পর্যন্ত পড়াশোনা করছে। একাদশ দ্বাদশ শ্রেণিতে ইচ্ছে হলে অমুসলিম সম্প্রদায়ের পড়ুয়ারা বিষয়টি নিচ্ছে। নয়তো অন্যান্য বিষয় নিয়ে মাদ্রাসায় উচ্চ মাধ্যমিক দিচ্ছে।
advertisement
এবছর ফতেখান বি.এম.এস হাই মাদ্রাসা থেকে ১০ জন অমুসলিম পড়ুয়া উচ্চ মাধ্যমিক দিচ্ছে। অমুসলিম মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী ছিল তিনজন। বর্তমানে ফতেখান বি.এম.এস হাই মাদ্রাসা পঞ্চম থেকে দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত ১৫ জন অমুসলিম পড়ুয়া রয়েছে। গত শিক্ষাবর্ষে এই মাদ্রাসায় অমুসলিম পড়ুয়ার সংখ্যা ছিল প্রায় ৪০ জন। উচ্চমাধ্যমিকে সবচেয়ে বেশি অমুসলিম পড়ুয়া এই মাদ্রাসায় ভর্তি হওয়ার আগ্রহ প্রকাশ করে। কারণ আশেপাশে যে সমস্ত মাদ্রাসা ও হাইস্কুল রয়েছে, সেগুলির থেকে পড়াশোনার মান অনেকটাই ভালো এই মাদ্রাসার। পাশাপাশি উচ্চ মাধ্যমিকের বিজ্ঞান ও কলা বিভাগের প্রায় সমস্ত বিষয় রয়েছে এখানে। তাই অন্যান্য স্কুল ও মাদ্রাসাগুলির থেকে পড়ুয়ারা মাধ্যমিক দেওয়ার পর এখানে ভর্তি হয়।
গত দুই-এক বছর ধরে সংখ্যাটা একটু কমেছে। কারণ আশেপাশের স্কুলগুলোতেও বর্তমানে কলা ও বিজ্ঞান বিভাগের প্রথম শ্রেণির বিষয়গুলির পঠন-পাঠন চালু করা হয়েছে। মাদ্রাসার শিক্ষকদের একাংশের দাবি, সমাজে মাদ্রাসা সম্পর্কে একটি ভুল ধারণা রয়েছে। অনেকেই মনে করেন মাদ্রাসায় পড়াশোনা ভালো হয় না। তাই ছেলেমেয়েদের সহজে কেউ মাদ্রাসায় ভর্তি করতে চায়না। অমুসলিম সম্প্রদায়ের মধ্যে একটি ভুল বার্তা প্রচলিত রয়েছে, আরবি বিষয়ে পড়াশোনা নিয়ে। তবে বর্তমানে দেখা যাচ্ছে বহু অমুসলিম পড়ুয়া উচ্চশিক্ষায় আরবি ভাষা পড়ছেন। কারণ আরবি ভাষায় পড়াশোনা করে চাকরির সুযোগ সুবিধা রয়েছে। যে কেউ আরবি ভাষা পড়ে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করতে পারবেন। ধীরে ধীরে সমাজের এই ভুল ধারণা অনেকটাই কেটে যাচ্ছে। তাই এখন অমুসলিম সম্প্রদায়ের বহু অভিভাবক তাদের ছেলেমেয়েদের মাদ্রাসায় ভর্তি করছেন। পড়ুয়ারাও আরবি ভাষা পড়ছে।
মাদ্রাসাগুলি মূলত সংখ্যালঘুদের জন্য। রাজ্য সরকারের সংখ্যালঘু দফতর থেকে মাদ্রাসাগুলির পরিকাঠামো উন্নয়ন থেকে পঠন পাঠনের যাবতীয় খরচ ও পড়ুয়াদের স্কলারশিপ থেকে অনান্য সুবিধা দেওয়া হয়। ফতেখান বি.এম. এস মাদ্রাসায় যে সমস্ত অমুসলিম পড়ুয়ারা রয়েছে তাদেরকেও সংখ্যালঘু দফতরের অধীনে সমস্ত সুযোগ সুবিধা প্রদান করা হয়। স্কুল কর্তৃপক্ষের ইচ্ছেতেই এমনটা সম্ভব হয়েছে বলে জানা গিয়েছে।
Harashit Singha