কিন্তু বাড়ি তৈরীর স্বপ্ন অধরাই থেকে গেল। রোজগার করতে গিয়েই নির্মীয়মাণ সেতু ভেঙে মিজোরামে মৃত্যু হল মালদহের পরিযায়ী শ্রমিক ঝাল্লু সরকার ও তাঁর ছেলের। শ্বশুরমশাইয়ের সঙ্গে নিজের উনিশ বছরের ছেলেকেও শ্রমিকের কাজে গিয়েছিলেন জামাই। দুর্ঘটনায় তাঁদেরও মৃত্যু হয়েছে। পরিবারের সব পুরুষ সদস্যের ভিনরাজ্যে শ্রমিকের কাজে গিয়ে মর্মান্তিক মৃত্যুতে শোকের ছায়া নেমেছে মালদহের ইংরেজবাজার ব্লকের সাতটারি নাগরপাড়ায়।
advertisement
পাড়া-প্রতিবেশী সকলের মুখে এখন একটাই প্রশ্ন কি করে চলবে সংসার? পুরুষশূন্য পরিবারের ভবিষ্যৎ কী হবে, তা ভেবে উঠতে পারছেন না কেউ। অত্যন্ত দুঃস্থ এই পরিবারের না রয়েছে চাষের জমি, আর না থাকল রোজগেরে কেউ?
আরও পড়ুনঃ যাদবপুর র্যাগিং কাণ্ডের মধ্যেই বড় ঘটনা, এসএসকেএম হস্টেলে নার্সিং পড়ুয়ার রহস্যমৃত্যু!
মালদহের ইংরেজবাজার ব্লকের সাতটারি নাগরপাড়া গ্রামের বাসিন্দা ঝাল্লু সরকার দীর্ঘদিন ধরেই পরিযায়ী শ্রমিকের কাজ করেন। এলাকায় তেমন কাজ না মেলায় ভিন রাজ্যে কাজে যেতে বাধ্য হন। পরিযায়ী শ্রমিকের কাজ করে সামান্য কিছু রোজগার হওয়ায় বাড়ি তৈরি স্বপ্ন দেখেছিলেন। অল্প অল্প করে টাকা জমিয়ে বাড়িও তৈরি হয়েছে।
মৃতের আত্মীয় অনুপ সরকার বলেন, দাদা, ছেলে, জামাই, নাতি সকলে মিলে পরিযায়ী শ্রমিকের কাজে গিয়েছিল। দাদা এ ভাবেই পরিশ্রম করে বাড়ি তৈরি করছিলেন। এখনও বাড়ির কাজ শেষ হয়নি। তিন লক্ষ টাকা ঋণ নিয়ে বাড়ির ছাদ দিয়েছে। আরও কাজ বাকি রয়েছে। এমন অবস্থায় প্রত্যেকের মৃত্যু হল। পরিবারে পুরুষ সদস্য আর কেউ রইল।
ঝাল্লু সরকারের ছেলে জয়ন্ত সরকারের পরিবারে রয়েছে স্ত্রী ও ছোট্ট কন্যা সন্তান। ছোট্ট কন্যা সন্তানকে নিয়ে জয়ন্ত সরকারের স্ত্রী কী করবেন তা ভেবে উঠতেই পারছেন না। মিজোরামে মর্মান্তিক নির্মীয়মাণ ব্রিজ দুর্ঘটনায় একেবারে সর্বহারা সাতটারির এই পরিবার। শোকস্তব্ধ পরিবারের এখন ভরসা আত্মীয়-স্বজন, প্রতিবেশীরাই।
হরষিত সিংহ