জ্ঞান ফিরতেই তিনি শুনতে পান চারিদিকে আর্তনাদ। চারিপাশে রক্তাক্ত দেহ পড়ে রয়েছে। সেই অবস্থায় কোনও ক্রমে কামরা থেকে বেরিয়ে আসেন। স্থানীয়রা ততক্ষণে উদ্ধার কাজ করছে। আতঙ্কে জঙ্গলের মধ্যে দিয়ে দৌড়াতে শুরু করেন।
আরও পড়ুন: ঘরে ফিরল দুই পরিযায়ী শ্রমিকের কফিন বন্দি দেহ! শোকের ছায়া জলপাইগুড়ির গ্রামে
অন্ধকারের মধ্যে প্রায় একঘন্টা চলার পর গাড়ির শব্দ পান। সেই শব্দ অনুসরণ করে সড়ক পথের রাস্তার খোঁজ মেলে। রাস্তায় উঠে একটি পেট্রোল পাম্প দেখে সেখানে যান। সেখানে সমস্ত ঘটনা বলেন পাম্প কর্মীকে। পাম্প কর্মীর সাহায্য সেখান থেকে কলকাতাগামী বাসে ওঠেন।
advertisement
সেখান থেকে ৬০০ টাকা ভাড়া দিয়ে কলকাতা পৌঁছন। কলকাতা থেকে আবার বাসে মালদহে ফিরে আসেন।মালদহে ফিরে তার অভিজ্ঞতার কথা জানালেন হাবিবুর ইসলাম। পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে হাবিবুর ইসলাম পেশায় রাজমিস্ত্রী। আন্ধ্রপ্রদেশে কাজ করতেন। বাড়ি মালদহের যদুপুর কমলাবাড়ি এলাকায়।পরিবারে রয়েছে স্ত্রী ও ছেলে। ঈদের মাসে বাড়িতে এসেছিলেন তিনি। এরপর কাজে যোগ দিয়ে ছিলেন। কাজ শেষ করে আবার বাড়ি ফিরছিলেন।
বালেশ্বরে করমন্ডল এক্সপ্রেসে দুর্ঘটনার আগের দিন যসবন্তপুর হাওড়া এক্সপ্রেস ট্রেনে করে হাওড়া ফিরছিলেন। যসবন্তপুর ট্রেনের শেষের আগের কামড়ার মাঝে ছিলেন হাবিবুর রহমান। যখন করমন্ডলের ধাক্কা মারেন তখন বিকট শব্দ পান। দেখতে পাই ট্রেনের কাঁচ ভেঙে অনেকে জখম হচ্ছে । তিনিও পাথরের আঘাতে অচৈতন্য হয়ে পড়েন। ঘন্টাখানেক পরে জ্ঞান ফিরলে স্থানীয়রা জানায় এখানে থাকলে মারধর করতে পারে।
আরও পড়ুন: ঘাপটি মেরেছিল অনেকদিন আগে! ফোঁস ফোঁস শব্দ শুনে একটু এগোতেই যা হল…
হাবিবুর ইসলাম বলেন, “দীর্ঘদিন ধরে আমি ভিন রাজ্যে কাজ করি। এমন দুর্ঘটনা আর কোনদিন দেখিনি। আতঙ্কে জঙ্গলের পথ দিয়ে চলতে শুরু করেছিলাম। শরীর চলছিল না তবুও হেঁটেছি। অবশেষে এক ঘণ্টার বেশি চলার পর বাস ধরে কলকাতায় ফিরে এসেছি। এখন বাড়িতেই রয়েছি ।”
জীবন বাঁচাত ভয়ে জঙ্গলের পথ ধরে পালাতে শুরু করেন। অবশেষে সুস্থ অবস্থায় বাড়ি ফিরে এসেছেন। তবে সংসার চালাত কাজ করতে হবে। আতঙ্ক গ্রাস করেছে এখনও। ট্রেন দূর্ঘটনায় মৃতদেহ আর আহতদের আর্তনাদ এখনও কানে বাজছে হাবিবুরের।
হরষিত সিংহ