বর্তমান শিক্ষক সমাজে বিভিন্ন অভাব অভিযোগ, সমস্ত কিছুর ঊর্ধ্বে গিয়ে এক ব্যতিক্রমী উদাহরণ তৈরি করে চলেছেন মালদহের ইংরেজবাজার ব্লকের কমলাবাড়ি হাইস্কুলের অবসরপ্রাপ্ত অংকের শিক্ষিকা স্বপ্না রায় ঘোষ দাস। ২০১৫ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি খাতায়-কলমে স্কুল থেকে অবসর নিয়েছেন তিনি। তবে বাড়িতে বসে থাকেননি। অবসর গ্রহণের পরের দিন থেকেই স্কুল এসেছেন, ক্লাস নিয়েছেন, অংক বুঝিয়েছেন শিখিয়েছেন।
advertisement
আরও পড়ুন: নদীতে তিন দিন ধরে আটকে ৭ ফুট লম্বা দৈত্য! কাছে যেতেই আতঙ্ক! রূপনারায়ণে যা ঘটল!
গত আট বছর ধরে নিয়মিত স্কুলে এসে ক্লাস করে চলেছেন তিনি। তাঁর এমন উদ্যোগকে সাধুবাদ জানিয়ে স্কুল কর্তৃপক্ষ কিছু পারিশ্রমিক দেওয়ার জন্য আবেদন করেছিলেন। কিন্তু তিনি মঞ্জুর করেননি। এমনকি সরকারি অতিথি শিক্ষক হিসাবে নিয়োগের সুযোগ পেয়েছিলেন। কিন্তু তাতেও তিনি রাজি হননি। নিয়মিত অন্যান্য শিক্ষক-শিক্ষিকাদের মত ক্লাস নিয়েই চলেছেন তিনি। শিক্ষিকা স্বপ্না রায় ঘোষ দাস বলেন, যতদিন শরীর সুস্থ থাকবে আমি পড়ে যাব। পড়ানোই আমার নেশা। আমার খুব ভালো লাগে, ছাত্র-ছাত্রীদের সঙ্গে সময় কাটাতে। এর জন্য আমি কোন পারিশ্রমিক চাই না।
মালদহ শহরের বাসিন্দা সপ্না রায় ঘোষ দাস। পীযূষ দাস বেসরকারি সংস্থার কর্মী।১৯৯৮ সালে মালদহের ইংরেজবাজার ব্লকের কমলাবাড়ী হাই স্কুলে শিক্ষকতা শুরু করেন তিনি। অংকের শিক্ষিকা তিনি। ২০১৫ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি অবসর গ্রহণ করেন। পড়ানো তার নেশা, পড়িয়ে তিনি মানসিক শান্তি পান। তাই অবসর গ্রহণের পরও থেমে থাকেননি। নিয়মিত ক্লাস নিয়ে চলেছেন। যতদিন শরীরে সুস্থ থাকবে তিনি পড়াতে চান।কমলাবাড়ি হাইস্কুলে ছাত্র শিক্ষক অনুপাতে যে পরিমাণ শিক্ষক থাকার কথা তার থেকে অনেক কমই শিক্ষক রয়েছেন। এই কথা স্বীকার করেছেন স্কুলের প্রধান শিক্ষক। স্কুলের এমন অবস্থায় একজন অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষিকা নিয়মিত এইভাবে ক্লাস করিয়ে যাওয়াই স্কুলের অনেকটাই সুবিধা হচ্ছে জানিয়েছেন প্রধান শিক্ষক। কমলাবাড়ি হাই স্কুলের প্রধান শিক্ষক মোঃ মতিউর রহমান বলেন, গত ৮ বছর ধরে তিনি বিনা পারিশ্রমিকে পড়িয়ে যাচ্ছেন। ছাত্র-ছাত্রীদের সন্তানের স্নেহে এখনো তিনি পড়াচ্ছেন।
হরষিত সিংহ