গত দশ বছর ধরে দেবব্রত সরকার নিজের প্রচেষ্টায় গাঁদা ফুল চাষ করছেন। প্রথমদিকে তেমন লাভ করতে পারতেন না। ধীরে ধীরে চাষের ভুলত্রুটি শুধরে নিতেই পেয়েছেন সাফল্য। এখন তিনি সঠিকভাবে চাষ করেন। প্রতি সপ্তাহে একবিঘা জমি থেকে দুই থেকে তিন ক্যুইন্ট্যাল গাঁদা ফুল উৎপাদন হচ্ছে। বাজারে ভালো দামে বিক্রি হচ্ছে এই ফুল। একসময় গোটা শিবগঞ্জ গ্রামের মাঠে শুধুমাত্র দেবব্রতবাবুই গাঁদা ফুল চাষ করতেন। তাঁর লাভ হচ্ছে দেখে বর্তমানে আশেপাশের কৃষকরাও গাঁদা চাষে এগিয়ে এসেছেন। ফলে শিবগঞ্জ এলাকায় গাঁদা ফুলের চাষ ক্রমশ বাড়ছে।
advertisement
আরও পড়ুন: তর্কাতর্কির সময় হঠাৎই কোপাতে শুরু করল রাজমিস্ত্রি! হাঁসখালিতে বাড়ির সামনে খুন মালিক
প্রথম দিকে বাকি কৃষকেরা অল্প পরিমাণ জমিতে চাষ করেছেন। তাতে হাতে গরম ফল পেয়ে গাঁদা ফুল চাষের পরিমান বাড়িয়েছেন। মালদহে এমনিতে গাঁদা ফুল চাষ তেমনভাবে হয় না। তাই এখানে ভালো মানের চারা পাওয়া যায় না। দেবব্রতবাবু নদিয়া থেকে গাছের চারা নিয়ে আসেন। বছরের বিভিন্ন সময়ে গাঁদা চাষ হলেও দেবব্রত সরকার শুধু শীতের মরশুমেই চাষ করছেন। সেপ্টেম্বর মাসের প্রথম দিকে গাছের চারা লাগান। দু'মাস পর থেকেই ফুল ফুটতে শুরু করে। ফুল ফোটা শুরু হলে নিয়মিত গাছের পরিচর্যা ও জল দিতে হয়। তাছাড়া কোনও কিছু দেওয়ার প্রয়োজন নেই।
নভেম্বর মাস থেকে ফেব্রুয়ারি মাস পর্যন্ত গাছে ফুল ফোটে। বর্তমানে মালদহের বাজারে ৮০ টাকা কেজি দরে পাইকারি মূল্যে ফুল বিক্রি করছেন কৃষকেরা। দেবব্রতবাবু প্রতি সপ্তাহে প্রায় তিন ক্যুইন্ট্যাল ফুল বিক্রি করছেন। চার মাস ফুল বিক্রি করে লক্ষাধিক টাকা উপার্জন। এক বিঘা ফুল চাষে খরচ প্রায় ২০ হাজার টাকা। মালদহে ধীরে ধীরে কৃষকদের মধ্যে গাঁদা ফুল চাষের প্রবণতা বাড়ছে। স্থানীয় বাজার ছাড়া অন্য কোথাও বিক্রির সুযোগ নেই। তাই কৃষকেরা চাইছেন সরকারি উদ্যোগে ফুল বাইরে পাঠানোর পরিকল্পনা গ্রহণ করলে আরও ভালো দাম মিলবে। ফুল চাষ করে লাভবান হবেন জেলার কৃষকেরা। জেলার অর্থনীতি অনেকটাই সমৃদ্ধ হবে বিকল্প ফুল চাষের মাধ্যমে।
হরষিত সিংহ