মালদহ জেলার ইংরেজবাজার ব্লকের ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী মহদীপুর গ্রামে এই মিষ্টি পাওয়া যায়। গ্রামের একমাত্র কারিগর অজিত গুপ্ত রয়েছেন। যিনি বংশ পরম্পরা এই মিষ্টি তৈরি করে আসেন। অজিত বাবুর বাবা স্বর্গীয় অনন্ত লাল গুপ্তর হাত ধরেই বাংলাদেশের পাবনা থেকে মিষ্টি এসেছিল দেশে। একসময় এই মিষ্টির খুব কদর ছিল। মালদহ শহর থেকে মিষ্টান্ন দোকানীরা, মহদীপুর এসে পাইকারি মূল্যে মনোহরা নিয়ে যেতেন। মালদহ শহরে বিক্রি করতেন ব্যবসায়ীরা।
advertisement
আরও পড়ুনঃ রেললাইনের কাজের জন্য টানা ১০ দিন বাতিল একগুচ্ছ লোকাল ট্রেন, কোন কোন ট্রেন বাতিল জানুন
বাবা অনন্তলাল গুপ্তের হাত ধরেই মনোহরা তৈরি শিখেছিলেন অজিত গুপ্ত। দীর্ঘ ৫০ বছর ধরে এই মিষ্টির পেশার সঙ্গে যুক্ত রয়েছেন তিনি। শুধুমাত্র মালদহ বা পশ্চিমবঙ্গ নয়, অজিত গুপ্তর হাতে তৈরি মিষ্টি উত্তরের কাশ্মীর থেকে দক্ষিণের হায়দ্রাবাদ পর্যন্ত খ্যাতি ছাড়িয়েছে। এমনকি এখনও গৌড়ে ঘুরতে আসা পর্যটকেরা তাঁর হাতের মনোহরার টানে মহদীপুর আসেন।
একসময় কলকাতাতেও বরাত পেয়েছেন। তবে ধীরে ধীরে চাহিদা অনেকটাই কমেছে বাংলার এই মিষ্টির। তা ছাড়া আগের মত প্রচুর পরিমাণে মিষ্টি ও তৈরি করতে পারছেন না অজিত গুপ্ত। মনোহরা বর্তমানে ২৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়। তা ছাড়া ৫ টাকা পিস হিসাবে বিক্রি করেন। বর্তমানে অজিত গুপ্ত ছাড়াও মহদীপুর বাস স্ট্যান্ড ও বাজার চত্বরে প্রায় প্রতিটি মিষ্টির দোকানে মনোহরা পাওয়া যায়। বাজারের চাহিদা রয়েছে মনোহরা মিষ্টির।
তবে কারিগরের অভাবে আগের মতো মহদীপুর গ্রামে আর তৈরি হচ্ছে না মনোহরা। অজিত গুপ্ত ও তাঁর ভাই একসময় গোটা বাজার সামলেছেন মনোহরা তৈরি করে। এখন বাজারে চাহিদা থাকলেও পর্যাপ্ত পরিমাণে মিলছে না মনোহরা। অজিত গুপ্তর পরবর্তী সময়ে হয়তো এমন সুস্বাদু মনোহরা মিলবে না আর মহদীপুরে। অজিত গুপ্ত প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন বর্তমান প্রজন্মকে শিখিয়ে দিয়ে এই মনোহরা আগামীতে টিকিয়ে রাখার।
হরষিত সিংহ