বাংলার বিভিন্ন গ্রাম থেকে শহরে নানান নামে নানান রূপে পূজিত হন দেবী কালী। তবে কালি মানেই কাল বা নীল নয়। পশ্চিম বর্ধমান জেলার কুলটিতে সাদা রঙে ফলহারিণী রূপে পুজো নেন দেবী কালী। দেবীর প্রতিষ্ঠাতা এবং পূজারী বলেন, এইরূপে ভবতারিণী প্রথম দর্শন দিয়েছিলেন সাধক রামকৃষ্ণ পরমহংসদেবকে। তিনিও স্বপ্নাদেশ পেয়ে পুজো শুরু করেছেন। তবে কালীর এমন সাদা রূপের আরাধনা, সচরাচর দেখতে পাওয়া যায়না এই বাংলার বুকে।
advertisement
কুলটির ১৭ নম্বর ওয়ার্ডের লাল বাজার এলাকায় দেবী ফলহারিনী কালী মূর্তি পূজা হয়। পুজোর প্রতিষ্ঠাতা এবং পূজারী মধুময় ঘোষ। তিনি বছর ১৫ আগে স্বপ্নাদেশ পেয়ে পুজো শুরু করেন। তাঁর দাবি, দেবী কালিকা তাকে নির্দেশ দিয়েছিলেন তার নিত্য পূজা করার জন্য। আর দেবী, এইরূপ আগে থেকেই নির্দিষ্ট করে দিয়েছিলেন। তারপর থেকে নিয়মিত পুজো নিয়ে আসছেন কুলটির ফলহারিনী কালী। মধুময় বাবু নিত্য পুজো করেন দেবীর। পাশাপাশি গ্রামের মানুষও দেবী কালিকার সাধনায় মেতে ওঠেন। প্রত্যেক অমাবস্যায় জাঁকজমক সহকারে হয় পুজো। স্থানীয় মানুষজনও সেই পুজোয় অংশগ্রহণ করেন। প্রতিষ্ঠাতার বাড়ির পাশেই এক চিলতে মন্দিরে পুজো নেন কালীসাধক রামকৃষ্ণ পরমহংসদেবকে দর্শন দেওয়া ভবতারিণী।
কুলটির ১৭ নম্বর ওয়ার্ডের লালবাজারে রয়েছে ভবতারিণী মন্দির। এখানে সম্পূর্ণ প্রস্থর নির্মিত মূর্তি রয়েছে দেবীর। পাশের জেলা বাঁকুড়ার শুশুনিয়া থেকে মূর্তিটি নিয়ে এসে প্রতিষ্ঠা করা হয়েছিল। সেই মূর্তির নিত্য পুজো হয়। প্রতিষ্ঠাতা মধুময় ঘোষ বলেন, স্বপ্নাদেশ পাওয়ার পরেই তিনি বাঁকুড়ায় উদ্দেশ্যে রওনা দেন। সেখানে গিয়ে তিনি মায়ের মূর্তিটি পান এই রূপেই। তাই সেই রুপেরই আরাধনা শুরু করেছেন তিনি।
একইসঙ্গে মধুময় ঘোষ বলেন, পশ্চিম বর্ধমান জেলায় একমাত্র এখানেই রয়েছে সাদা রংয়ের কালীমূর্তি। বাংলা জুড়ে সাদা রংয়ের কালীমূর্তি বিশেষ দেখতে পাওয়া যায় না। পাশের জেলা বাঁকুড়া একটি জায়গায় এই রূপে কালীপুজো (Kali Puja 2021) হয়। তবে কুলটির ফলহারিনী কালী জেলার একমাত্র সাদা রূপের কালীপুজো।
কুলটির ফলহারিনী কালী মন্দির (Kali Puja 2021) দীপান্বিতা অমাবস্যা উপলক্ষে সেজে উঠছে। অমাবস্যার দিন দেবীর আরাধনায় মেতে উঠবে লাল বাজার এলাকায় স্থানীয় মানুষজন।আশপাশের অনেক মানুষও এখানে পুজো দিতে আসেন। মধুময় ঘোষ এবং স্থানীয়দের সহযোগিতায় এই পুজো প্রত্যেক বছরই সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন হয়। এবছর পুজোর জন্য প্রস্তুতি চলছে। তবে প্রত্যেক অমাবস্যায় বিশেষ পুজোর আয়োজন করা হয় এখানে। তাছাড়াও বার্ষিক পুজোতে মহা ধুমধামের সঙ্গে পুজো হয় ফলহারিনী কালীর।






