দুয়ারের সরকার প্রকল্প নিয়ে, তৃণমূল কংগ্রেসকে একাধিক খোঁচা দিয়েছে বিজেপি এবং বাম শিবির। তা সত্ত্বেও তৃতীয় বার ক্ষমতায় এসে, দুয়ারে সরকার ক্যাম্প শুরু করেছে রাজ্য সরকার। বিভিন্ন সরকারি প্রকল্পের সুযোগ-সুবিধা, দুয়ারে সরকার ক্যাম্প থেকে তুলে দেওয়া হচ্ছে সাধারণ মানুষের হাতে। তার মধ্যে অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ লক্ষীর ভান্ডার প্রকল্প। যে প্রকল্পের সুবিধা পাবেন মহিলারা। কিন্তু লক্ষীর ভান্ডার প্রকল্পের আবেদন পত্র পূরণ করতে গিয়ে, অনেকেই সমস্যায় পড়ছেন। সেই সমস্যা দূরীকরণে এগিয়ে এসেছে সিপিএম নেতা কর্মীরা। বর্তমানে, রাজ্যের রাজনৈতিক মানচিত্রে, যা অন্যতম সম্প্রীতির মাইলফলক বলেই মনে করছেন রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা।
advertisement
এই বিষয়ে বাম কর্মী তথা প্রাক্তন পঞ্চায়েত প্রধান শেখ শামসুদ্দিন বলেছেন, দুয়ারে সরকার প্রকল্পের সুবিধা গ্রহণ এসে অনেক মানুষ অসুবিধায় পড়ছেন। আবেদন পত্র পূরণ করতে সমস্যা হচ্ছে অনেক মহিলার। সেই সমস্যা দূরীকরণে তারা এই পদক্ষেপ নিয়েছেন। আবেদন করতে আসা বিভিন্ন মানুষের আবেদনপত্র পূরণ করে দিয়ে তারা সাহায্য করছেন। এই বিষয়ে তিনি আরও বলেছেন, রাজ্যের ক্ষমতায় তৃণমূল থাকলেও, সরকার মানুষের। তাই যদি কোনও সরকারি প্রকল্প মানুষের সুবিধার জন্য হয়, তার বিরোধিতা না করে সাহায্য করাটাই উচিত বলে মনে করছেন তিনি।
বামেদের এই পদক্ষেপকে ভালো চোখে দেখেছেন এলাকার মানুষ। এই ঘটনা রাজ্য-রাজনীতিতে এক অনন্য নজির হিসেবে আত্মপ্রকাশ করছে। রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা বলছেন, মানুষের সার্বিক উন্নয়নে এই রকম রাজনৈতিক সম্প্রীতি বর্তমানে খুবই প্রয়োজন।
এই বিষয়ে কাঁকসার তৃণমূল ব্লক সভাপতি দেবদাস বক্সী বলেছেন, এই ঘটনা প্রমাণ করছে দুয়ারে সরকার প্রকল্পের সাফল্য। এই ঘটনার মাধ্যমে বোঝা যাচ্ছে, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যে প্রকল্পের কথা ঘোষণা করেন, তা সঠিকভাবে বাস্তবায়িত হয়। তাই যে দল একটা সময় তৃণমূলের তীব্র বিরোধিতা করেছে, এমনকি সদ্য শেষ হওয়া নির্বাচনের আগেও তৃণমূলকে বিভিন্ন ইস্যুতে সমালোচনা করেছে, দুয়ারে সরকার প্রকল্পকে খোরাক বানিয়েছে, তারাই আজ সেই প্রকল্পে একই মঞ্চে দাঁড়িয়ে মানুষের সাহায্যের জন্য এগিয়ে আসছে। বামেদের এই পদক্ষেপকে সাধুবাদ জানিয়েছেন তিনি।
রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা যদিও এই সম্প্রীতির রাজনীতিতে অন্য ছবি দেখতে পাচ্ছেন। তারা মনে করছেন, আগামী লোকসভা নির্বাচনে, পদ্ম শিবিরকে পরাস্ত করতে সমস্ত অবিজেপি দলগুলি কাছাকাছি আসছে। তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, জাতীয় স্বার্থে একজোট হয়ে লড়াই করার বার্তা দিয়েছে বামেদের। সম্ভবত বাম শিবিরের নীচুতলার নেতা-কর্মীরা, এই ধরনের পদক্ষেপের মাধ্যমে, দলের উচ্চনেতৃত্বকে সেই বার্তাই দিতে চাইছে বলে, মনে করছেন তারা।