২০১৬ সালে দুর্গাপুর মহকুমা হাসপাতালে ডায়ালিসিস পরিষেবা শুরু হয়েছিল। বিভব সামলানোর দায়িত্ব দেওয়া ছিল বেসরকারি একটি সংস্থার হাতে। বেসরকারি সংস্থাটি ডায়ালিসিস বিভাগ সামাল দিত। কিন্তু বছর তিনেক আগে হঠাৎই দায়িত্ব ছেড়ে দেয় বেসরকারি সংস্থাটি। ফলে দুর্গাপুর (Durgapur) মহকুমা হাসপাতালের মতো, গুরুত্বপূর্ণ একটি হাসপাতালে বন্ধ হয়ে যায় ডায়ালিসিস পরিষেবা। ফলে দুর্ভোগে পড়ছিলেন মানুষ। বিশেষ করে যারা আর্থিক দিক থেকে একটু দুর্বল, তারা ডায়ালিসিসের খরচ যোগাতে হিমশিম খাচ্ছিলেন। ডায়ালিসিস করার মেশিনগুলিও পড়ে পড়ে নষ্ট হচ্ছিল। তবে সেই বাধা কাটিয়ে ফের ডায়ালিসিস ইউনিট চালু হল দুর্গাপুর (Durgapur) মহকুমা হাসপাতালে।
advertisement
প্রসঙ্গত, দুর্গাপুর (Durgapur) মহকুমা হাসপাতালে সুপার ডক্টর ধীমান মন্ডল, রোগীকল্যাণ সমিতির কাছে হাসপাতালে অভাব-অভিযোগের দিকগুলি তোলেন। সেই তালিকায় ছিল হাসপাতালের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের অভাব, ডায়ালিসিস পরিষেবা বন্ধ হয়ে যাওয়ার মতো গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলি। ইতিমধ্যেই স্বাস্থ্য দপ্তরের তৎপরতায় কয়েকজন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক যোগ দিয়েছেন মহকুমা হাসপাতালে। পাশাপাশি স্বাস্থ্য দফতরের উদ্যোগে, মহকুমা হাসপাতালে শুরু হলো ডায়ালিসিস পরিষেবাও।
সূত্রের খবর, ডায়ালিসিস পরিষেবা বন্ধ হয়ে যাবার মূল কারণ বেসরকারি সংস্থাটির বকেয়া। জানা যাচ্ছে, ডায়ালিসিস পরিষেবা যখন দুর্গাপুর মহকুমা হাসপাতালে চালু ছিল, তখন অনেকেই স্থানীয় কাউন্সিলর এবং বিভিন্ন নেতাদের থেকে লিখিয়ে এনে নিখরচায় অথবা নির্ধারিত মূল্যের থেকেও কম টাকায় ডায়ালিসিস পরিষেবা নিচ্ছিলেন। ফলে যে সংস্থাটি এই পরিষেবা দেওয়ার দায়িত্ব ছিল, তাদের খরচ বাড়লেও আয় বাড়ছিল না। তৈরি হচ্ছিল বকেয়া। তারপরই বেসরকারি সংস্থাটি দায়িত্ব ছেড়ে দেয়, এবং দুর্গাপুর (Durgapur) মহকুমা হাসপাতালে বন্ধ হয়ে যায় ডায়ালিসিস পরিষেবা।
বিধানসভা নির্বাচনের আগে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee) যখন দুর্গাপুর এসেছিলেন, তখন সাংবাদিকরা বিষয়টি মুখ্যমন্ত্রীর কানে তোলেন। বিষয়টি নিয়ে নজর দেওয়ার নির্দেশ দেন মুখ্যমন্ত্রী। রোগীকল্যাণ সমিতির চেয়ারম্যান উত্তম মুখার্জী, দুর্গাপুর পূর্বের বিধায়ক প্রদীপ মজুমদারদের দায়িত্ব নিয়ে বিষয়টি দেখতে বলা হয়। তারপরেই দুর্গাপুর মহকুমা হাসপাতাল এই পরিষেবা চালু হল। যার ফলে সাধারণ মানুষ খুব কম খরচে দুর্গাপুর মহকুমা হাসপাতাল থেকে ডায়ালিসিস করাতে পারবেন।
হাসপাতাল সূত্রে খবর, বাইরে ডায়ালিসিস করতে যে খরচ হয়, মহকুমা হাসপাতালে তার অনেক কম খরচে ডায়ালাইসিস করানো যাবে। ফলে আর্থিক ভাবে যারা কিছুটা দুর্বল, তারা অনেকটাই সুবিধা লাভ করতে পারবেন। জানা গিয়েছে, ইতিমধ্যেই দুটি মেশিন পরিষেবা দেওয়া শুরু করেছে। আরও পাঁচটি মেশিন খুব শীঘ্রই পরিষেবা দেওয়া শুরু করবে। ফলে দুর্গাপুর-সহ আশপাশের মানুষজনকে এই পরিষেবা দিতে সুবিধা হবে দুর্গাপুর মহকুমা হাসপাতালের।
Nayan Ghosh