পেশায় হোটেল ব্যবসায়ী ইমরান খান (Imran Khan) । দুর্গাপুর-সহ (Durgapur) আশপাশের অঞ্চলে একাধিক নামী রেস্তোরাঁ রয়েছে তাঁর। এই মানুষটি দীর্ঘ দিন ধরে সেবা করে আসছেন মানুষের। প্রতিদিন তিনি, তার রেস্তোরাঁয় পেটভরে খাবার খাওয়ান ভিক্ষুকদের। তিন পুরুষ ধরে বংশ পরম্পরায় এই কাজ করে আসছে ইমরান খানের পরিবার।
ইমরান বাবুর(Imran Khan) পিতামহ, ৭০বছর আগে যখন হোটেল ব্যবসায় পা রেখেছিলেন, তখনই তিনি এই নিয়ম চালু করেন। তার সময় হোটেলে এসে, না খেয়ে ফিরে যেতেন না কেউ। এখনও পরিবারের সেই নিয়ম বজায় রাখা হয়েছে। ইমরান বাবুর বিভিন্ন রেস্তোরাঁগুলিতে, প্রতিদিন নিয়ম করে ১০ থেকে ১২ জন ভিক্ষুককে খাবার খাওয়ানো হয়।
advertisement
শুধু দুর্গাপুর (Durgapur) নয়, দুর্গাপুরের আশপাশের ভিক্ষুকরাও আসেন ইমরান বাবু হোটেলে। নিজেদের ইচ্ছামত খাবার খেতে পারেন তারা। এর জন্য কোন মূল্য দিতে হয় না তাদের। হোটেলের কর্মচারীরা, ভিক্ষুক এবং অসহায়, দুস্থ মানুষের ইচ্ছামতো, তাদের পাতে খাবার সাজিয়ে দেন।
বিশেষভাবে সক্ষম এক ব্যক্তি জানিয়েছেন, তিনি বিগত এক-দেড় বছর ধরে ইমরান বাবুর রেস্তোরাঁয় খেতে আসেন আসা মাত্রই তার কাছ থেকে অর্ডার চান দোকানের কর্মচারীরা। ইচ্ছামত খাবার পান তিনি। বিভিন্ন অসহায় মানুষকে এভাবেই খাবার খাওয়ানো হয় ইমরান খানের (Imran Khan) বিভিন্ন রেস্তোরাঁয়।
এই ব্যাপারে ইমরান খান (Imran Khan) জানিয়েছেন, ৭০ বছর আগে তার দাদু হোটেল ব্যবসা শুরু করেন। সেই সময়, তার হোটেলে এসে কেউ না খেয়ে ফিরে যেতেন না। তার দাদু বলে গিয়েছেন, হোটেলে এসে যেন কেউ না খেয়ে ফিরে না যায়। দুস্থ অসহায় মানুষকে সেবা দিতে, যেন কখনও পিছপা না হয় তাঁর পরিবার।
পিতামহের সেই কথা মাথায় রেখে দীর্ঘ ৭০ বছর ধরে, অসহায় ভিক্ষুক এবং দুস্থ মানুষকে বিনামূল্যে খাবার খাইয়ে চলেছে তাঁর রেস্তোরাঁগুলি। আগামীদিনেও এই কাজ চালিয়ে যেতে চান তিনি। খাবার খাওয়ার পাশাপাশি, সমাজসেবামূলক কাজেও নিয়মিত অংশগ্রহণ করেন তিনি।
তবে ভেকধারী ভিক্ষুকদের বিনামূল্যে খাবার দেওয়া হয় না ইমরান খানের রেস্তোরাঁয়। যাদের পরিশ্রম করে উপার্জন করার ক্ষমতা রয়েছে, তাদের বিনামূল্যে খাবার খাওয়ানোর থেকে কাজ করার উৎসাহ দেওয়াটাই উপযুক্ত বলে মনে করেন তিনি। কোন ভেকধারী ভিক্ষুক তার রেস্তোরাঁয় এলে, তাকে কাজ করার জন্য সুযোগও দেওয়া হয়।
দীর্ঘদিন ধরে, নিজের ব্যবসার মাধ্যমে, এইভাবেই সমাজ সেবা চালিয়ে যাচ্ছেন হোটেল ব্যবসায়ী ইমরান খান। তার এই উদ্যোগকে সাধুবাদ জানিয়েছেন শহরের বিশিষ্ট মানুষ থেকে সাধারণ মানুষ। ইমরান বাবুর এই কাজ থেকে সকলেই বলছেন, 'জীব সেবাই-শিব সেবা'।
Nayan Ghosh