মুন্সি বাড়ির এই দুর্গাপুজো দুই শতাধিক বছরের বেশি পুরাতন। বংশের পূর্বপুরুষ ঈশান মুন্সী ওরফে কুচীল চন্দ্র সেন রাজনগরের রাজার মুন্সেফ থাকাকালীন এই পূজোর প্রতিষ্ঠা করেন। (রাজনগরের রাজার মুন্সেফ থাকার জন্য তাকে ঈশান মুন্সী নামে ডাকা হত)। তারপর থেকেই একই রীতি বজায় রেখে এই পুজো করে আসছেন উত্তরসূরীরা।
পরিবারের সদস্য শ্যামা প্রসাদ সেন জানিয়েছেন, "স্বপ্নাদেশে ঈশান মুন্সি ওরফে কুচিল চন্দ্র সেন এই পূজো আরম্ভ করেছিলেন। যদিও আর্থিক অস্বচ্ছলতার কারণে তিনি প্রথমে রাজি হননি। কিন্তু মায়ের ইচ্ছে ছিল সাধ্যমত তাকেই পুজো করতে হবে। তারপরই ভেদে গুসকরার কোনও এক গ্ৰাম প্রতিষ্ঠিত হয় সেন বাড়ির দুর্গা। পরে ওই গ্রাম থেকে হেতমপুরের সেন বাড়ির পৈতৃক ভিটেই পূজিত হয় মুন্সী বা সেন বাড়ির দুর্গা। প্রথম দিকে পটে আঁকা দুর্গার পূজা হলেও এখন নিম কাঠের তৈরি দুর্গার পূজা হয়।"
advertisement
পুজোর ক্ষেত্রে মহাষ্টমীর দিন মুন্সিবাড়ি দুর্গা মাকে ভোগ হিসেবে দেওয়া হয় হলুদ মুড়ি, ৮ রকমের কলাই ভাজা এবং আদাকুচি। পরিবারের সদস্যদের দাবি, "মা দুর্গা মহাষ্টমীর দিন হলুদ মুড়ি, ৮ রকমের কলাই ভাজা এবং আদাকুচি চেয়ে নিয়েছিলেন। আর তারপর থেকেই মহাঅষ্টমীতে এগুলি দিয়েই ভোগ হয়। এগুলি সেদিনই ভাজা অর্থাৎ তৈরি করা হয়।"
দুর্গা পুজোর সময় প্রতি বছর পুজোর চারদিন মুন্সী বাড়ির সদস্যরা ছাড়াও এই পুজোকে কেন্দ্র করে এলাকার বাসিন্দাদেরও গা ভাসাতে দেখা যায়। তবে গত বছর থেকে করোনা সংক্রমণের জন্য ফিকে হয়ে গিয়েছে এই সকল আনন্দ উৎসব। চলতি বছরেও করোনা নিয়ে বিশেষ সতর্কতা থাকায় কিভাবে স্বাস্থ্যবিধি মেনে এই পুজো হবে তা নিয়ে চিন্তায় রয়েছেন পরিবারের সদস্যরা।
মাধব দাস