অন্যদিকে, পরের বছরই সুযোগ পেয়ে গেলেন খড়্গপুর আইআইটি (IIT Kharagpur) থেকে গবেষণা (Ph. D) করার। এরপর, আর ফিরে তাকাতে হয়নি! ২০১৩ সালে দক্ষিণ কোরিয়া (South Korea) থেকে পোস্ট ডক্টরাল রিসার্চ এবং বর্তমানে সেখানকারই একটি বিখ্যাত বিশ্ববিদ্যালয়ে (Yeungnam University) আন্তর্জাতিক গবেষক অধ্যাপক রূপে নিযুক্ত আছেন সুমন্ত। মাত্র ৩৫ বছরের সেই সুমন্ত-ই সারা মেদিনীপুর-কে গর্বিত করে বিশ্বের সর্বশ্রেষ্ঠ ২ শতাংশ বিজ্ঞানীদের তালিকায় জায়গা করে নিলেন! সম্প্রতি, স্ট্যানফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় (Stanford University) বিশ্বের সর্বশ্রেষ্ঠ গবেষক বা বিজ্ঞানীদের যে তালিকা প্রকাশ করেছে, তাতেই জায়গা পেয়েছেন পশ্চিম মেদিনীপুরের সুমন্ত সাহু। সোমবার নাগাদ বাড়িতে এই খবর আসার পরই উচ্ছ্বসিত মোগলমারি খ্যাত ঐতিহাসিক দাঁতন এলাকা!
advertisement
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, দাঁতন থানার প্রত্যন্ত রায়বাড় উত্তর গ্রামের বাসিন্দা শ্রীকান্ত সাহু ও অমিতা সাহু'র বড় ছেলে সুমন্ত প্রথম থেকেই মেধাবী ছাত্র ছিলেন। বাবা শ্রীকান্ত সাহু দাঁতন উচ্চ বিদ্যালয়েই শিক্ষকতা করতেন। তাই, ভর্তি হয়েছিলেন ওই স্কুলেই। মা অমিতা গৃহবধূ। মূলত, বাবার শাসন ও সাহচর্যেই সুমন্ত দাঁতন উচ্চ বিদ্যালয় থেকে স্টার মার্কস পেয়ে মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক পাশ করেছেন। এরপর, জেলাশহর মেদিনীপুরে পা রাখা! সাফল্যের সঙ্গে একে একে মেদিনীপুর কলেজ, বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয় ও খড়্গপুর আইআইটি'র গণ্ডী অতিক্রম করে বিদেশে পাড়ি দেওয়া! 'মেদিনীপুরের গর্ব' সুমন্ত জায়গা করে নিয়েছেন স্ট্যানফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রকাশিত বিশ্বের সর্বশ্রেষ্ঠ ২ শতাংশ বিজ্ঞানীদের তালিকায়।
বুধবার সুমন্তের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানিয়েছেন, "অক্টোবরের ২০ তারিখ স্ট্যানফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের বিশ্বের সর্বশ্রেষ্ঠ বিজ্ঞানীদের তালিকায় নিজের নাম দেখতে পাই! যেকোনো স্বীকৃতি-ই সাফল্যের আনন্দকে আরও গৌরবান্বিত করে। স্বভাবতই খুশি ও আপ্লুত। আমাদের দেশ তথা মেদিনীপুর-কে গর্বিত করতে পেরে আরও ভালো লাগছে।" উল্লেখ্য, যে গবেষণা সূত্রে সুমন্তের নাম বিবেচিত হয়, সেই সময় (২০১৯-২০২১) তিনি অন্ধ্রপ্রদেশের MITS-এ অধ্যাপনা করছিলেন। অক্টোবরের ১ তারিখ থেকে সাউথ কোরিয়ার Yeungnam University তে আন্তর্জাতিক গবেষক অধ্যাপক (International Research Professor) হিসেবে সুমন্ত নিযুক্ত হয়েছেন। জানা গেছে, দেশ-বিদেশের বিভিন্ন পত্র-পত্রিকায় ইতিমধ্যে তাঁর ৫৮ টি গবেষণামূলক প্রবন্ধ প্রকাশিত হয়েছে। ২ টি বই সম্পাদনা ও ৩ টি বই লিখে ফেলেছেন সুমন্ত। রসায়নের জগৎকে আরও সমৃদ্ধ করাই তাঁর লক্ষ্য বলে জানিয়েছেন সুমন্ত। তাঁর ভাই অনীক'ও যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে রসায়নে পিএইচডি (Ph.D) করছেন বলে জানা গিয়েছে।