এবারের বিধানসভা নির্বাচনে প্রথম থেকেই ভাঙড় বিধানসভাকে পাখির চোখ করেছিলেন ফুরফুরা শরীফের পীরজাদা আব্বাস সিদ্দিকি। সেইমত তাঁর ভাই নওশাদ সিদ্দিকি ভাঙড়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন।তৃণমূলের ভরা বাজারে সবাইকে চমকে দিয়ে সংযুক্ত মোর্চার প্রার্থী নওশাদ সিদ্দিকি তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী তৃণমূলের চিকিৎসক প্রার্থী রেজাউল করিম কে পরাজিত করে ২৬ হাজার ২১৩ ভোটের ব্যবধানে। বিপুল সমর্থন নিয়ে জেতার পরেও ভাঙড়ের মাটিতে ভাল করে পা রাখতে পারেননি নওসাদ। ইয়াসের পর ভাঙড় থানায় বৈঠক করতে এলে সেই বৈঠক বয়কট করেন ভাঙড়ের ওসি শ্যামপ্রসাদ সাহা। থানার বাইরে লকডাউন ভেঙে তৃণমূল কর্মীরা বিক্ষোভ দেখান, তাঁর গাড়িতে চড় থাপ্পড় মারা হয়। এর কয়েকদিন পর দ্বিতীয়বার ভাঙড়ে নওসাদের আসার খবর চাউর হতেই খোদ আরাবুল ইসলাম, কাইজার আহমেদরা রাস্তায় নেমে বিক্ষোভ দেখান। অশান্তির ভয়ে কর্মসুচি বাতিল করেন নওশাদ। আইএসএফের দুই প্রথম সারির নেতা মিন্টু শিকারী ও সরিফুল ইসলাম মোল্লা গ্রেপ্তার হলেও ভাঙড়ে আসতে পারেননি নওসাদ।নওশাদ ঘনিষ্ঠ আইএসএফ নেতা রাইনুর হক বলেন, ‘ভাইজান পাঁচ বছরে ভাঙড়ে থেকে ভাঙড়ের উন্নয়ন করতে চাইছেন। ভাঙড় নিয়ে উনি যা প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন সেসব পূর্ণ করবেন। তার আগেই ভয় পেয়ে তৃণমূল ওঁকে বাধা দিচ্ছেন।‘
advertisement
আইএসএফ সূত্রে খবর, ভাঙড় ৯১ নং রোডের কাঁঠালিয়া বাস স্ট্যান্ড থেকে কাশীপুর থানা এই সাত কিলো মিটারের মধ্যে কোন একটি বাড়ি ভাড়া চাইছেন নওশাদ। সেখানে দুটো শোয়ার ঘর ছাড়াও অতিথি বা কর্মীদের জন্য একটি বসার ঘর বা বৈঠক খানা পছন্দ তাঁর। কয়েকটি ঘর পছন্দ হলেও মানুষরা ভয়ে তাঁকে বাড়ি ভাড়া দিতে চাইছেন না বলে দাবি আইএসএফের।কাশীপুরের এক ব্যবসায়ী বলেন, ‘আমার অনেক ঘর আছে। কিন্তু বিধায়ককে ভাড়া দিলেই আমার ওপর তৃণমূলের কোপ পড়বে। তাই ভয়ে না বলে দিয়েছি।‘
ভাঙড়ের সিপিএম নেতা জেলা সম্পাদকমন্ডলীর সদস্য তুষার ঘোষ বলেন, ‘ভাঙড়ের ৬৭ শতাংশ মানুষ ভোট দিয়ে নওশাদ কে বিধায়ক নির্বাচিত করেছেন। ওঁর মত স্বচ্ছ ভাবমূর্তির ছেলে ভাঙড়ে এলে তৃণমূলের দুর্নীতি গুলো সামনে আসবে, আইএসএফের সংগঠন মজবুত হবে, তাই উনি যাতে বাড়ি ভাড়া না পান সেই চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে তৃণমূল।‘ অভিযোগ, অস্বীকার করে তৃণমূল নেতা আরাবুল ইসলাম বলেন, ‘এরকম কোন ঘটনার কথা আমার জানা নেই।তৃণমূল অত ছোট ব্যপারে মাথা ঘামায় না। তবে এটা ঠিক নওসাদ ভাঙড়ে থাকলে শান্তির পরিবেশ বিঘ্নিত হবে, রোজ রোজ গণ্ডগোল বাড়বে।‘
রুদ্র নারায়ন রায়