বাসন্তী থানার রামচন্দ্র খালি গ্রাম পঞ্চায়েত অফিসের সামনে এক ভদ্রলোক সুসজ্জিত পোশাক পরে, হাতে দুটো দামী মোবাইল ফোন নিয়ে ঘোরাফেরা করছিলেন। সেই সময় নানা অছিলায় স্থানীয় সোনাখালির বাসিন্দা শিবপদ নস্কর ও সুভাষ নস্করের সাথে আলাপ হয়। ওই দুই ব্যক্তির কাছে শুল্ক দফতরের অফিসার হিসাবে পরিচয় দেন ওই ব্যক্তি। পাশাপাশি, তিনি অভিযান চালিয়ে ১২৬ বস্তা(৬৩ কুইন্ট্যাল) চোরাই চাল আটক করেছে বলে জানায়। কথোপকথনের মধ্যেই ওই প্রতারক দু-জনকে জানায় উদ্ধার হওয়া চোরাই চাল ৪ টাকা কেজি দরে বিক্রি করে দেবেন তিনি। সেই মতো ওই দুই ব্যক্তি কিছু চাল কেনার জন্য রাজীও হয়ে যান। কথাবলে ঠিক হয় ২৬ হাজার টাকার মত চাল কিনতে সক্ষম তারা।
advertisement
এরপর ঘটনাস্থলে শুল্ক দফতরের আধিকারিক সাজা প্রতারক জীবনতলা এলাকার এক মোটর ভ্যান চালক কে ক্যানিং থেকে কিছু চাল ধামাখালিতে পৌঁছে দেওয়ার জন্য ৮০০ টাকায় চুক্তি করে। পরে তাকেও চাল বিক্রি করার কথা বলে ২৫ হাজার টাকা জোগাড় করে ক্যানিং এক নম্বর বিডিও অফিসের সামনে দ্রুত এসে দেখা করতে বলেন।
কম টাকায় কেনা চালে মুনাফা অর্জনের লোভে, বিন্দুমাত্র সন্দেহ না করে ওই তিন ব্যক্তি তখন প্রতারকের কথা মতো আধার কার্ডের জেরক্স এবং টাকা নিয়ে বিডিও অফিসের সামনে দেখা করে। সেখানে রবীন্দ্র মূর্তির পাশে থাকা চায়ের দোকানে চা,পান খেয়ে তিন ব্যক্তির কাছ থেকে মোট ৫১ হাজার টাকা হাতিয়ে নিয়ে ,ক্যানিং এর খাদ্য দফতরের অফিসে আসতে বলে টোটো গাড়িতে চেপে চম্পট দেয়।
কিছুক্ষন পরে ওই তিন ব্যক্তি ক্যানিংয়ের খাদ্য দফতরের গোডাউনে গিয়ে প্রতারক আধিকারিকের খোঁজ করেন। শুল্ক দফতরের ওই আধিকারিকের কোন খোঁজ না পেয়ে, প্রতারিত হয়েছেন বুঝতে পেরে কান্নায় ভেঙে পড়েন। প্রতারকের ফোন নম্বর (৭৬০২৩৭৪৮৬৯) ও একটি ছবি দখিয়ে মৌখিক ভাবে অভিযোগ জানিয়েছেন প্রতারিতরা। প্রাথমিক ভাবে অভিযোগ পেয়ে, ভুয়ো ওই শুল্ক দফতরের আধিকারীকের খোঁজে তল্লাশি শুরু করেছে ক্যানিং থানার পুলিশ। প্রতারিত তিন ব্যক্তি সুভাষ নস্কর, শিবপদ নস্কর, বনমালী হালদার’দের দাবী, 'আমরা সুন্দরবন এলাকার মানুষ। বিগত দিনে ইয়াস এবং প্রবল বর্ষণে চাষবাস নেই। পরিবারের মুখে দুমুঠো অন্ন তুলে দেওয়ার জন্য ওই অফিসারের কথায় চাল কিনতে রাজি হয়ে যাই। প্রতারিত হতে হবে বুঝতে পারিনি।’জেলায় বেড়ে চলা প্রতারণা চক্রকে দমন করতে কি পদক্ষেপ নেয় প্রশাসন এখন সেটাই দেখার।
রুদ্র নারায়ন রায়