করোনা কালে শহরের সাত নম্বর ওয়ার্ডের এই যৌনপল্লীতে অন্ধকার মেঘ নেমে আসে। না খেয়ে দিন কাটাতে হতো বহু যৌনকর্মীদের। সরকারের তরফেও সাহায্য এলেও সম্পূর্ণতা কোথাও যেন পেয়ে উঠছিল না তাঁরা। ফলে বহু সংগঠনের তরফে তাদের দিকে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেওয়া হয়েছিল। তবে এবারের রাখিপূর্ণিমা যেন অন্যরকম বার্তা দিল তাঁদের কাছে। একদল যুব সকাল সকাল পাঞ্জাবি-পাজামা পরে হাজির হয়ে গেল তাঁদের দরজায়। লক্ষ্মী-সানিয়াদের চক্ষু যেন চড়কগাছ! বিবেক-সৌম্যদীপদের মতো ছাত্রযুবরা পিঠের ব্যাগ থেকে রাখি বের করতেই চোখে জল ছলছল করে উঠল লক্ষ্মী-সানিয়াদের।
advertisement
লক্ষ্মী-সানিয়ারা বলেন, 'আমাদের তো সমাজে কোনও ঠাঁই নেই। হারিয়ে গিয়েছে আমাদের জীবন ওই চার দেওয়ালে ১০/১০ -এর রুমে। আজ ছোটো-ছোটো ভাইবোনেরা এসে আমাদের রাখি পরাল। খুব ভাল লাগছে। ওদের ঈশ্বর মঙ্গল করুন। এই প্রার্থনা আমাদের।'
এদিন স্টুডেন্ট সোসাইটি অফ শিলিগুড়ি তরফে সৌম্যদীপ রায় বলে, 'আমরা প্রত্যেকেই ছাত্র-ছাত্রী। দিনকয়েক আগে বন্ধুদের সঙ্গে কথা বলতে বলতে রাখিপূর্ণিমার কথা উঠে এসেছিল। সেই সময় প্ল্যান করা হয় যে এবার আমরা শিলিগুড়ির নিষিদ্ধপল্লীর বোনেদের ও দিদিদের সঙ্গে এই দিনটি উদযাপন করব। সেইমতোই এদিন সকালবেলায় আমরা শিলিগুড়ির বিবেকানন্দ নগর এলাকায় এসে পৌঁছোই এবং রাখি পরিয়ে মিষ্টিমুখ করিয়ে এই দিনটি উদযাপন করি।'
এ প্রসঙ্গে সাত নম্বর ওয়ার্ডের প্রাক্তন কাউন্সিলর পিন্টু ঘোষ স্টুডেন্ট সোসাইটি অফ শিলিগুড়ির প্রশংসায় পঞ্চমুখ হয়ে বলেন, 'এত অল্প বয়সে ওঁরা যা কাজ করছে তা আমাদের মতো বড়দেরও একপ্রকার শিক্ষা দেয়। আমাদের ওঁদের কাছ থেকে অনেক কিছু এখনও শিখতে হবে। আজ ওঁরা যা করল তা শিলিগুড়ি ইতিহাসে নজির বলে আমি অন্তত মনে করি। আমি সর্ববৈ ওঁদের পাশে দাঁড়ানোর চেষ্টা করব।'