এদিন আক্ষেপের সুরে শিলিগুড়ি বুদ্ধ ভারতী বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক স্বপ্নেন্দু নন্দী বলেন, 'ইচ্ছা থাকলেও উপায় করে ওঠা গেল না। শিক্ষার্থীরা নেই, তাই আমরা ভার্চুয়ালি দিনটির গুরুত্বতা লেখনির আকারে সোশ্যাল মিডিয়ার ব্যবহার করে ছাত্রছাত্রীদের কাছে পৌঁছে দেওয়ার চেষ্টা করি। কিন্তু বড় করে পালন বা কোনও আলোচনা চক্র বা কোনও অনুষ্ঠান আয়োজন করা হয়নি। করোনার জেরে শিক্ষা জগতের এই দিকপালও আজ যেন ব্রাত্য।'
advertisement
প্রসঙ্গত, প্রশান্তচন্দ্র মহলানবিশ ২৯ জুন ১৮৯৩ সালে কলকাতায় জন্মগ্রহণ করেন। আমাদের কাছে তাঁর মূল পরিচিতি পরিসংখ্যান গণিতের পরিমাপক একক 'মহলানবিশ দূরত্ব'-এর আবিষ্কারক হিসেবে। এছাড়াও তিনি স্বাধীন ভারতের (১৯৫৫-১৯৬৭) পরিকল্পনা কমিশনের সদস্য হিসেবে কাজ করেছেন। দ্বিতীয় পরিকল্পনা কমিশনের কাজে মহলানবিশের গাণিতিক বিশ্লেষণ ও যুক্তিকে কাজে লাগিয়ে শিল্পের উন্নতি হয়েছিল। তাই পরবর্তীতে সেটি 'মহলানবিশ মডেল' নামে বিখ্যাত হয়ে পরে।
১৯১২ সালে তিনি কলকাতা প্রেসিডেন্সি কলেজ থেকে পদার্থবিজ্ঞানে স্নাতক ডিগ্রি লাভ করে ইংল্যান্ডে কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ে গণিত ও পদার্থ বিজ্ঞান নিয়ে পড়াশোনা করেন। সেখানেই তিনি স্ট্যাটিস্টিক্স বিষয়ে আগ্রহী হন। ১৯২২ সালে কলকাতা প্রেসিডেন্সি কলেজে তিনি পদার্থ বিজ্ঞানের অধ্যাপক হিসেবে যুক্ত হন। তখন তিনি বায়োলজি, মেটারোলজি ও অ্যান্থ্রোপলজি বিষয়ে তিনি পরিসংখ্যানতত্ত্ব প্রয়োগ করেন। ১৯৩১ সালের ১৭ ডিসেম্বর তিনি স্ট্যাটিস্টিক্সের সবচেয়ে বড় গুরুত্বপূর্ণ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অফ স্ট্যাটিস্টিক্স (আইএসআই)-এর প্রতিষ্ঠা করেন। ১৯৬৮ সালে ভারত সরকার তাঁকে পদ্মবিভূষণ সম্মানে সম্মানিত করে। এভাবেই তাঁর জন্মদিবসকে 'জাতীয় পরিসংখ্যান দিবস' অথবা 'ন্যাশনাল স্ট্যাটিস্টিক্স ডে' হিসেবে পালন করা হয়। তবে কোভিড পরিস্থিতিতে অনেকেই এই দিনটি পালন করতে পিছপা হয়েছেন।
বলাবাহুল্য, পরিসংখ্যান সম্পর্কে জনসচেতনতা বাড়াতে বিশেষ করে, আর্থ-সামাজিক পরিকল্পনা ও নীতি রূপায়ণে পরিসংখ্যানের ভূমিকা সম্পর্কে তরুণ প্রজন্মকে অবহিত করতে বিশেষ এই দিনটি পালন করা হয়ে থাকে। তবে এবার করোনার দাপটে এই দিনটি আগের মতো পালন করা না হলেও শ্রদ্ধার্ঘ্য জানিয়েছেন বিশিষ্টজনেরা।
ভাস্কর চক্রবর্তী