#পলাশী: স্বাধীনতার কেটে গেছে ৭৫ টি বছর। তবে এখনও আমাদের দেশে ব্রিটিশদের তৈরি অনেক নিদর্শনই দেখতে পাওয়া যায়। এমনই এক স্মৃতি জরাজীর্ণ আকারে পড়ে রয়েছে নদিয়ার কালীগঞ্জ থানার অন্তর্গত পলাশীতে। সেখানে গেলে দেখা যাবে বিশাল এলাকাজুড়ে একটি সুগার মিল। পিচের রাস্তা দিয়েই দেখা যায় জঙ্গলের মধ্যে পাঁচিলে ঘেরা একটি ফ্যাক্টরি। বিশালাকার দরজায় ঝুলছে তালা। গেট দিয়ে ভিতরে ঢুকে অবশেষে দেখা মিলল সেই বিশালাকার জরাজীর্ণ সুগার মিলের।
advertisement
প্রায় বিগত তিন বছর ধরে বন্ধ রয়েছে এই সুগার মিল। এই সুগার মিলের উপর নির্ভর করে বেলডাঙ্গা, নাকাশিপাড়া, কালিগঞ্জ থানার বাসিন্দাদের চলতো সংসার। কোনো শ্রমিকের নয় বরং মালিকের কারণেই বন্ধ হয়ে যায় মিল, বলে জানান মিলের এক সিকিউরিটি গার্ড। দীর্ঘ তিন বছর ধরে তাঁরা এখনও পাহারা দিয়ে চলেছে এই মিলের। তাঁদের আশা কোন একদিন আবার চালু হবে এই মিল। পাবেন প্রত্যেক শ্রমিক তাঁর বকেয়া বেতন। দীর্ঘ ৮ মাস ধরে বেতন পাচ্ছেন না তাঁরা, বলে অভিযোগ করেন মিলের সিকিউরিটি গার্ড কাজল শেখ। তিনি আরও বলেন এখানে ৮ ঘন্টা ডিউটি করার পর বাড়ি গিয়ে সংসার চালানোর জন্য আবারও কঠোর পরিশ্রম করতে হয় তাঁদের।
যত্নের অভাবে সুগার মিলের একাধিক যন্ত্রাংশে ধরেছে মরচে। বিল্ডিংয়ের গায়ে বেয়ে উঠেছে অসংখ্য লতাপাতা। বর্ষাকালে সাপের উপদ্রবও হয় এখানে প্রচুর। আনুমানিক ৭-৮ মাস আগে সুগার মিলে ডাকাতিও হয় বলে জানান মিলের সিকিউরিটি গার্ড কাজল শেখ। স্টোর ভেঙে অনেক জিনিসপত্র নিয়ে গিয়েছিল দুষ্কৃতীরা। সিকিউরিটি গার্ড বাধা দিতে এলে তিনিও গুরুতর আহত হন দুষ্কৃতীদের হাতে। প্রশাসনকে জানানো হলে তারাও তেমনভাবে গুরুত্ব দেননি বলে অভিযোগ করেন তিনি। দুষ্কৃতীরা ধরা পড়লে জামিনে ছাড়া পেয়ে যায় বলেও জানান তিনি।
রাজ্যের সর্ববৃহৎ সুগার মিল রয়েছে দীর্ঘদিন যাবৎ বন্ধ। সামান্য মাইনেতে কাজ করতেন কয়েক হাজার শ্রমিক। মিল বন্ধ হয়ে যাওয়ার পরে বেশ কয়েক মাস মাইনে পাননি তাঁরা। তাঁরা চান, সরকার থেকে কোনও পদক্ষেপ নেওয়া হোক। এ ভাবে চলতে থাকলে ভবিষ্যতে দু’বেলা খাবার জোগাড় করাই দুষ্কর হয়ে উঠবে মিলের কর্মীদের, বলে জানান মিলের এক কর্মী হেমন্তকুমার ওঝা।