শিলিগুড়িতে মহিলা পুরোহিতের কথা হয়ত অনেকেই শুনেছেন। তবে মহিলা পুরোহিত দ্বারা আয়োজিত বিয়ে বা বিয়ের মন্ত্র উচ্চারণ করতে শুনেছেন কি কখনও? হয়ত না! কিন্তু এবার শিলিগুড়ির এক দম্পতিকে সারাজীবনের বাঁধনে বাঁধলেন এক মহিলা পুরোহিতই। তাঁর নাম তনুশ্রী চক্রবর্তী। শিলিগুড়ি শহরেই পার্থপ্রীতম রায় এবং তনিমা পালের চার হাত এক করলেন তনুশ্রীদেবী।
advertisement
'যদিদং হৃদয়ং মম! তদস্ত হৃদয়ং তব!' এই মন্ত্র উচ্চারণের মাধ্যমে সাতজন্মের জন্য দু'জনকে এক করলেন তনুশ্রীদেবী। জানা গিয়েছে, চলতি বছরে তিনি শিলিগুড়ি উচ্চতর বালিকা বিদ্যালয়ে সরস্বতী পুজো করেন। শিলিগুড়িতে এই নতুন অধ্যায়ের সূত্রপাত ঘটালেন তনুশ্রীদেবী। ফেব্রুয়ারি মাসে আরেকটি বিয়ে করানোর আবেদন পেয়েছেন তিনি।
পাত্রী তনিমা পালের বাবা ভবতোষ পাল মূলত সামাজিক বার্তা এবং পুরোনো দিনের ভাবনাকে মুছে ফেলতে এই বিশেষ ভাবনাকে আপন করেন। তিনি ঠিক করেন, তনুশ্রীদেবীকে দিয়েই তিনি মেয়ের বিয়ে দেবেন। এতে তাঁর সঙ্গে ছিল পাত্রপক্ষ ও গোটা পরিবার। পাত্রপাত্রী বিয়ের পিঁড়িতে বসার আগে তনুশ্রীদেবী বলেন, 'আমার আজ নিজের বড় পিসির কথা বড্ড মনে পড়ছে। তাঁর থেকে উৎসাহ পেয়েছি এই কাজ করার। তাঁর আশীর্বাদ নিয়েই আমি এগোবো।'
সমাজে এই নতুন ভাবনাকে প্রতিষ্ঠিত করতে সময় লাগবে। প্রথমেই মানুষ এই ভাবনাকে বাস্তবভাবে নেবেন না। অনেকের মনে হয়ত অনেকধরনের প্রশ্ন জাগতে পারে। কিন্তু সেইসবে কান না দিয়ে সমাজে অনন্য বার্তা দিতে চান তনুশ্রীদেবী। তনামির পরিবারেরও একই মত, 'প্রথমদিকে মহিলা পুরোহিতের কথা শুনে অনেকের মুখ কালো হয়ে গিয়েছিল। কিন্তু অনেকেই আবার বিষয়টিকে নিয়ে উৎসাহ প্রকাশ করেছেন।'
ওই যে কথায় রয়েছে না? লোকে কী ভাবল, তা যদি আমরা ভাবি! তাহলে লোকে কী ভাববে? এই বার্তাকেই মান্যতা দিয়ে এগিয়ে চলেছেন তনুশ্রীদেবী। পরবর্তীতেও তাঁর পথ অনেকেই অনুসরণ করবেন বলে মনে করছেন শহরবাসী।
Vaskar Chakraborty