স্কুলছুট ছাত্রীদের হার কমাতে এবং তাদের বাল্যবিবাহ রোধ করার লক্ষ্যে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী ২০১৩ সালে কন্যাশ্রী প্রকল্প চালু করেছিলেন। এই প্রকল্পের অধীনে সরকার ১৩ বছর থেকে ১৮ বছর পর্যন্ত মেয়ে শিক্ষার্থীদের পড়াশোনা চালিয়ে যাওয়ার জন্য প্রথম পর্যায়ে ৫০০ টাকা এবং পরবর্তীকালে ১০০০ টাকা বার্ষিক বৃত্তি প্রদান চালু করেন। পাশাপাশি, যদি কোন মেয়ে ১৮ বছর পর্যন্ত পড়াশোনা চালিয়ে যায় এবং ততক্ষণ পর্যন্ত অবিবাহিত থাকে, তবে তার ব্যাংক একাউন্টে ২৫০০০ টাকা এককালীন অনুদান বাবদ জমা দেওয়ার ব্যবস্থা করেন। ২০১৪ সালে ইউনেস্কো (ইউনাইটেড নেশনস এডুকেশনাল সাইন্টিফিক এ্যান্ড কালচারাল অর্গানাইজেশন) থেকে তার কন্যাশ্রী প্রকল্পের জন্য প্রশংসা অর্জন এর। তারপরই পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ওই প্রকল্পের সুবিধাভোগীদের একটি "সোনালী স্পর্শ "দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন । তিনি বাংলা এবং হিন্দিতে খোদাই-করা কন্যাশ্রী লেখা ১৬ লক্ষ সোনালী প্রলেপযুক্ত বালার অর্ডার দিয়েছিলেন। যা কন্যাশ্রী সুবিধাভোগীদের মধ্যে বিতরণ করা শুরু হয়।
advertisement
জয়নগর মজিলপুর পৌরসভা সূত্রে জানা যায়, ২০১৯ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে পৌরসভা এলাকার মেয়ে শিক্ষার্থীদের জন্য ওই কন্যাশ্রী বালা গুলো আসে। আর সেই সময় থেকেই বাক্সবন্দী অবস্থায় পড়ে রয়েছে বালা গুলি।
জয়নগর-মজিলপুর পৌরসভার বর্তমান পৌর প্রশাসক মন্ডলীর চেয়ারপারসন সুকুমার হালদারের অভিযোগ, '২০১৯ সালের যে সময় ওই কন্যাশ্রী বালা গুলি এসেছিল তখন পৌরসভায় কংগ্রেস পরিচালিত বোর্ড থাকার জন্যইচ্ছাকৃতভাবে পরিকল্পনা করেই ওই বালা গুলি বিতরণ করা হয়নি। তবে ওই বালা বিতরণ না করে মুখ্যমন্ত্রীর স্বপ্নের প্রকল্প কে অবমাননা করা হয়েছে বলে তিনি অভিযোগ করেন এবং আইনি ব্যবস্থা নেবেন বলেও জানান।'
পৌরসভার বর্তমান প্রশাসক মন্ডলীর সদস্য রথীন হালদার বলেন, 'এই কন্যাশ্রীর বালাগুলি পৌরসভায় এসেছে এখন জানতে পারছি। কিন্তু সেই সময় আমি তৎকালীন পৌর বোর্ডের কাউন্সিলর থাকাকালীন আমাদের জানানো হয়নি। তাই বিষয়টি অবশ্যই তদন্ত করা হোক।' তবে এখন, মুখ্যমন্ত্রীর স্বপ্নের প্রকল্প কন্যাশ্রী-র প্রতীকী এইবালা গুলি কি করা হবে সেই নিয়েই বিভিন্ন পর্যায়ের আলোচনা চলছে স্থানীয় প্রশাসনের অন্দরে।
রুদ্র নারায়ন রায়