১০নং জাতীয় সড়ক ধরে শিলিগুড়ি থেকে প্রায় ৫৬ কিমি দূরে দার্জিলিঙের সবুজ পাহাড়ের কোলে দাঁড়িয়ে রয়েছে অখ্যাত একটি স্থান বাড়া মাংওয়ার(Baramangwa)। প্রচারের অভাবে বিশেষভাবে পর্যটকদের কাছে পরিচিত হয়ে উঠতে না পারলেও একবার এখানে আসলে এর অপার সৌন্দর্য আপনাকে টেনে আনবে বারবার।
আর কমলালেবুপ্রেমী হলে তো আর কোনও কথাই নেই! কারণ এখানে মিলবে তাজা টাটকা কমলালেবু। এই গ্রামে কয়েকটি ছাদযুক্ত খামার, স্থানীয় কুঁড়েঘর এবং প্রচুর কমলা বাগান রয়েছে। এখানকার বাড়া মাংওয়ার ফার্মহাউসের চারিদিক ঘিরে অবস্থিত কমলা বাগানের মাঝে (Baramangwa)তিস্তা এবং রংগীত নদীর সঙ্গমস্থল যা আপনাকে স্বর্গীয় অনুভূতি এনে দেবে।
advertisement
এছাড়া ডাউহিলের ব্যাপারে তো অনেকেই জানেন। দূরদূরান্ত থেকে অনেকেই এসেছেন সেই 'ভৌতিক' জায়গায়(Baramangwa)। এখানকার আবহাওয়াও কিন্তু একটু হলেও গা ছমছম অনুভূতি দেবেই। লোকমুখে চর্চিত রয়েছে, এখানে মাঝে মধ্যে দেখতে পাওয়া অশরীরির গল্প, তাই যারা ভৌতিক অ্যাডভেঞ্চারের পিপাসু তাঁরা এবার ডাউহিল ছেড়ে একবার এখানে এসে ঘুরে যেতেই পারেন।
কালিম্পং পাহাড়ের পশ্চিম দিকে দার্জিলিং জেলার তিস্তা(Baramangwa) উপত্যকায় অবস্থিত বাড়া মাংওয়া গ্রামে রয়েছে কয়েকটি ছাদযুক্ত খামার, স্থানীয় কুঁড়েঘর এবং প্রচুর কমলা বাগান।
তবে এই গ্রামটির মূল বৈশিষ্ট হল ফার্ম হাউস(Baramangwa) এর সুবিধা, সুন্দর পরিবেশে থাকার আবাসন ও জৈবিক উপায়ে তৈরি স্বাস্থ্যকর ও পরিষ্কার খাদ্যের যোগান। ফার্ম হাউসগুলিতে নিজস্ব হাঁস, মুরগি, ছাগল ও শুকরের পালনের ব্যবস্থাও রয়েছে। ফলে পাহাড়ি আবহাওয়ায় গ্রামের গন্ধও পাবেন এখানে।
আপনি তিস্তা নদীতে রাফটিং করতেও যেতে পারেন, বিশেষজ্ঞদের কাছ থেকে রক ক্লাইম্বিং শিখতে পারেন অথবা এখানে অ্যাংলিংয়ের জন্য বেছে নিতে পারেন। কয়েক মুহূর্তের জন্য আপনাকে হিমালয়ের ভুলে যাওয়া কোণকে এবং জীবনের সহজতম রূপে অনুভব করার সুযোগ দেয় পাহাড়ের কোলে দাঁড়িয়ে থাকা অখ্যাত এই ছোট্ট গ্রামটি।
দর্শনীয় স্থান : এখানকার বাড়া মাংওয়া(Baramangwa) ফার্ম হাউসের ঘরের ছোট্ট জানলাগুলো খুললেই সুযোগ এসে দাঁড়ায় তিস্তা সহ সিকিম এবং কালিম্পংকে পাখির নজরে চেখে নেওয়ার। এছাড়া আপনারা চাইলে এই ফার্ম হাউসগুলোর নিজস্ব ঋতুভিত্তিক শাক-সবজি ও ফলমূল চাষের ব্যবস্থা থেকে গবাদি পশুদের লালন পালনের সুব্যবস্থা গুলোও দেখে নিতে পারেন। আপনি চাইলে বিস্তৃত জমি জুড়ে চা বাগান ও কমলা বাগানের মাঝ দিয়েও হেঁটে যেতে পারেন।প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের আস্বাদ নিতে নিতেই আপনার যে কখন সময়গুলো পার হয়ে যাবে টেরও পাবেন না।
বাড়া মাংওয়াতে(Baramangwa) প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের পাশাপাশি স্থানটি অন্যভাবে উপভোগের জন্য আরও প্রচুর সুযোগ রয়েছে। রয়েছে প্রচুর ট্রেকিং, রক ক্লাইম্বিং এবং তিস্তার জলে রিভার রাফটিংয়ের ব্যবস্থা। সমানভাবে তিস্তার জলে মাছ ধরার আনন্দ লাভের সুযোগ। এখানে একটি যোগ এবং মার্শাল আর্ট সেন্টার রয়েছে, যেখানে আপনি কিছু মার্শাল আর্ট কৌশলও শিখতে পারেন। ফলে এক ঢিলে দুই পাখি! ঘোরাও হল, নতুন কিছু শিখে নেওয়াও হল। বাড়া মাংওয়া গ্রাম স্থানীয় খেলাধূলোর প্রচার করে থাকেন সেগুলোতেও অংশ গ্রহণ করতে পারেন।
বাড়ামাংওয়া (Baramangwa)গ্রামের আশেপাশে আরও অনেক ঘুরতে যাওয়ার জায়গা আছে যেখানে সহজেই ঘুরে আসতেই পারেন। কালিম্পং এমন একটি জায়গা যা বাড়া মাংওয়া থেকে প্রায় ২১ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত। লাভা নামে একটি জায়গা রয়েছে যেটি নেওরা ভ্যালি ন্যাশনাল পার্কে প্রবেশের স্থান হিসাবে বিখ্যাত। আর এই স্থানটি মাত্র ৪৬ কিলোমিটার দূরেই অবস্থিত। হিমালয়ের রাণী বলে পরিচিত দার্জিলিংও প্রায় ৪০ কিলোমিটার দূরেই অবস্থান করছে। অন্যান্য আকর্ষণীয় স্থানগুলির মধ্যে রয়েছে ছোট মাংওয়া (১ কিমি), টিঞ্চুলি সানরাইজ পয়েন্ট (k কিমি), পেশোক ও লোপচু চা বাগান (১৫ কিমি), তিস্তা ও রঙ্গিত ভিউ পয়েন্ট (১২ কিমি), তিস্তা এবং রঙ্গিত সঙ্গম ( ৮ কিমি), মংপু (২০ কিমি), ডেলো হিল টপ (৩৩ কিমি), লোলেগাঁও (৬৮ কিমি), পেডং (৩৫ কিমি) এবং গ্যাংটক প্রায় ৭০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত।
কীভাবে বড় মাংওয়া পৌঁছোবেন : আপনাকে প্রথমে নিউ জলপাইগুড়ি রেলওয়ে স্টেশনে নেমে ৩১ নং জাতীয় সড়ক হয়ে সোজা তিস্তা বাজারে যেতে হবে। এখান থেকে বাড়া মাংওয়া গ্রামে পৌঁছানোর জন্য তিস্তা সেতু পেরিয়ে বাম দিকে যেতে হবে। নিউ জলপাইগুড়ি রেলওয়ে স্টেশন থেকে, আপনার দূরত্ব কাটানোর জন্য প্রচুর গাড়ি পাবেন, সেগুলো ভাড়া করে সহজেই পৌঁছে যেতে পারবেন গন্তব্যস্থলে।
বাড়া মাংওয়া পরিদর্শনের সেরা সময় : শীতের মরশুমে যখন কমলার বাগান কমলাতে পরিপূর্ণ থাকে তখন এই স্থানটি উপভোগের সেরা সময়। তবে কমলায় ভরা গাছগুলি থেকে ফল ছেরার আগে কিছুটা লোভ সামলে মালিকের থেকে অনুমতি নিতে ভুলবেন না যেন! প্রকৃতপক্ষে, পাহাড় ঘেরা এই সুন্দর, ছোট্ট গ্রামটি যেকোন ঋতুর ফাঁকে এসে ঘুরে গেলেও আপনাকে আফসোস করার সুযোগ রাখবে না।
থাকা ও খাওয়ার ব্যবস্থা : বাড়া মাংওয়া ফার্মহাউস নিজেই সেখানকার একটি নামকরা আবাসন। খামারবাড়িতে দুটি কক্ষ রয়েছে। এখনকার আধুনিক সংযুক্ত বাথরুম সিকিম এবং কালিম্পং পাহাড়ের চমৎকার দৃশ্য এবং তিস্তা নদীর দৃশ্য উপভোগ করার সুযোগ দেয়। এখানে নিয়মিত পরিষ্কার এবং চলমান জলের মতো সুবিধাও করা রয়েছে। দিনে চারবার ভোজনের ব্যবস্থা থাকছে যার মধ্যে রয়েছে বেড টি, ব্রেকফাস্ট, লাঞ্চ, টিফিন এবং ডিনার। এখানে পরিবেশিত খাবার জৈব প্রকৃতির যা তাদের নিজস্ব খামারে উৎপাদিত সবজি থেকে প্রস্তুত করা হয়।
বাড়া মাংওয়ার একজন পর্যটক পরিমল সরকার বলেন, 'দুদিন হল এখানে এসে উঠেছি কাল ফিরব কিন্তু আরও কয়েকটা দিন থেকে যেতে মন চাইছে। মানুষের কাছে এখন বিশেষভাবে চেনা হয়ে ওঠেনি বলে অন্য জায়গাগুলোর মতো এখনও ব্যবসাস্থল হয়ে ওঠেনি বা মানুষের ভিড় নেই ফলে একটা শান্তি রয়েছে। হোটেল কড়াভাবে কোভিডের নিয়মগুলো মানছে, থাকতে ভ্যাকসিন এর প্রমাণ দেখাতে হয়েছে।'
বাড়ামাংওয়া(Baramangwa) গ্রামের আশেপাশে আরও অনেক ঘুরতে যাওয়ার জায়গা আছে যেখানে সহজেই ঘুরে আসতেই পারেন। কালিম্পং এমন একটি জায়গা যা বড় মাংওয়া থেকে প্রায় ২১ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত। তারপরে লাভা নামে একটি জায়গা রয়েছে যেটি নেওরা ভ্যালি ন্যাশনাল পার্কে প্রবেশের স্থান হিসাবে বিখ্যাত। আর এই স্থানটি মাত্র ৪৬ কিলোমিটার দূরেই অবস্থিত।
হিমালয়ের রাণী বলে পরিচিত দার্জিলিংও প্রায় ৪০ কিলোমিটার দূরেই অবস্থান করছে। অন্যান্য আকর্ষণীয় স্থানগুলির মধ্যে রয়েছে ছোট মাংওয়া (১ কিমি), টিঞ্চুলি সানরাইজ পয়েন্ট, পেশোক ও লোপচু চা বাগান (১৫ কিমি), তিস্তা ও রঙ্গিত ভিউ পয়েন্ট (১২ কিমি), তিস্তা এবং রঙ্গিত সঙ্গম ( ৮ কিমি), মংপু (২০ কিমি), ডেলো হিল টপ (৩৩ কিমি), লোলেগাঁও (৬৮ কিমি), পেডং (৩৫ কিমি) এবং গ্যাংটক প্রায় ৭০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত।
ভাস্কর চক্রবর্তী