অন্যদিকে, বেলা গড়াতেই বিভিন্ন ওয়ার্ডের বুথগুলিতে বিক্ষিপ্ত ঝামেলার কথা উঠে এসেছে। শিলিগুড়ির ৬ নম্বর ওয়ার্ডে সিপিআইএম (CPIM) ও তৃণমূল কংগ্রেসের (TMC) কর্মীদের মধ্যে বিবাদ বাধে। আবার শহরের ১ নম্বর ওয়ার্ডে জোর করে ভোট করানোর মতো অভিযোগ ওঠে। ঘটনার প্রতিবাদ করতে গেলে মহিলা ভোটারের ওপর হামলার অভিযোগ বিজেপির বিরুদ্ধে। ২ নম্বর ওয়ার্ডের মার্গারেট স্কুলের ভোটদান কেন্দ্রেও ভোটারদের প্রভাবিত করার অভিযোগ তোলে বিজেপি। তবে, শিলিগুড়ির ২৪ নম্বর ওয়ার্ডের জগদীশচন্দ্র বিদ্যাপীঠ ভোটদান কেন্দ্রে ভোটদানকে কেন্দ্র করে সৃষ্টি হয় উত্তেজনার। তৃণমূল কংগ্রেসের অভিযোগ, বিজেপি প্রার্থী শঙ্কর ঘোষ এবং নির্দল প্রার্থী বিকাশ সরকার ভোটকেন্দ্রের ভেতরে ঢুকে ভোটারদের প্রভাবিত করছেন। সেই নিয়েই উত্তেজনার সূত্রপাত হয়। এদিকে বিজেপি, নির্দল প্রার্থী বিকাশ সরকার, বাম প্রার্থী ইন্দ্রজিৎ চন্দ তাঁরা পাল্টা অভিযোগ করেন, তৃণমূল কর্মী সমর্থকেরা ভেতরে প্রবেশ করে ভোটারদের প্রভাবিত করছেন। তাঁরা লাইন ঠিক করাচ্ছেন। তাঁরা বলেন, 'যারা প্রার্থী রয়েছেন তাঁরা থাকতেই পারেন। কিন্তু যারা সাধারণ কর্মী সমর্থক তাঁরা কিভাবে ভেতরে ঢুকে এই কাজ করছেন?' যদিও পরে শিলিগুড়ি থানার পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনে। পুলিশের হস্তক্ষেপে ফের স্বাভাবিকভাবে ভোটদান প্রক্রিয়া শুরু হয়।
advertisement
তথ্যের নিরিখে শিলিগুড়ির ৪৭টি ওয়ার্ড মিলিয়ে এবারে মোট ভোটার সংখ্যা ৪ লক্ষ ২ হাজার ৮৯৭ জন। যার মধ্যে পুরুষ ভোটার ২ লক্ষ ৩ হাজার ৯৮০ জন। মহিলা ভোটারের সংখ্যা ১ লক্ষ ৯৮ হাজার ৮৯৯ জন এবং তৃতীয় লিঙ্গের ভোটারের সংখ্যা ১৮ জন। পাশাপাশি, শহর তার পুুুরোনোঐতিহ্য বহাল রেখেছে। লোকসভা হোক কিংবা বিধানসভা, শান্তিপূর্ণ ভোটদানের নজির অব্যাহত কর্পোরেশন নির্বাচনেও। রাজ্যে ক্ষমতায় এলেও বরাবরই শিলিগুড়ি থেকে খালি হাতে ফিরে যেতে হয়েছে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে। তবে এবারে পুরনিগম জয় করে শিলিগুড়িকে উপহার দিতে চান মুখ্যমন্ত্রীকে, এমনটাই জানালেন গৌতম দেব। গৌতমবাবু এদিন বলেন, 'মানুষ উৎসবের মেজাজে শান্তিপূর্ণ ভোটদান করেছে। সেই কারণে জেতার ব্যাপারে আশাবাদী। মুখ্যমন্ত্রীর দীর্ঘদিনের স্বপ্নপূরণ করতে তৃণমূল শিলিগুড়ি পুরবোর্ড গঠন করে মুখ্যমন্ত্রীর হাতে তুলে দিতে চাই।'
শিলিগুড়ির বিজেপি বিধায়ক শংকর ঘোষ জানান, শিলিগুড়ি শহর তাঁর প্রাণের স্পন্দন। এই শহরকে শুধু উত্তর-পূর্ব ভারতের প্রবেশদ্বার নয়, উত্তর-পূর্ব ভারতের সর্বাধুনিক পরিবেশবান্ধব শহর এবং বাণিজ্যিক চালিকাশক্তি করে তোলাই লক্ষ্য।
অন্যদিকে, এদিন ভোট দিতে এসে স্ত্রীর স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে কান্নায় ভেঙে পরেন বর্ষীয়ান বামনেতা অশোক ভট্টাচার্য। জানান, সব জায়গায় শান্তিপূর্ণ ভোট হচ্ছে। শিলিগুড়িতে শান্তিপূর্ণভাবে ভোট হয়। এবারও তার ব্যতিক্রম হবে না বলে আশাবাদী তিনি।
তবে একটা কথা স্পষ্ট, ভোটের পরীক্ষায় 'ফার্স্ট' যেই হোক, সেই দলের মূল লক্ষ্য থাকবে উন্নয়ন। সেইদিকেই তাকিয়ে বিশ্বাসযোগ্য, নির্ভরযোগ্য প্রার্থীকেই ভোট দিল শিলিগুড়ির জনতা।
Vaskar Chakraborty