শিলিগুড়ির শিশুরোগ বিশেষজ্ঞ ডাঃ মৃদুলা চট্টোপাধ্যায় অবশ্য বলেন, 'প্রথমত কোভিডের চরিত্রধারী এই জ্বর আদতে সাধারণ ভাইরাল ফিভার (viral fever)। অনেক বাবা-মা'ই তাদের সন্তানদের নিয়ে আমাদের কাছে আসছেন, না কমা জ্বর, শ্বাসকষ্ট, বমি ও কফের সমস্যা নিয়ে, এসে অনেক অভিভাবক কান্নাকাটিও করছেন। স্বাভাবিকভাবেই একটা ভয় কাজ করছে তাদের মধ্যে। কিন্তু পরামর্শ দেব ভয় না পাওয়ার। ভাইরাল নিউমোনিয়া (viral pneumonia) গোত্রের এই জ্বর এই ঋতু পরিবর্তনে প্রায়শই হয় এবং শুধু শিশু নয় আমরা বড়রাও এই ভাইরালের কবলে পরি। তবে করোনার সঙ্গে অনেকাংশে মিল থাকলেও এই জ্বর করোনা নয়। তাই বাড়তি সাবধানতা অবলম্বন করতে হবে। আর বেশি বাড়াবাড়ি হলে অবশ্যই চিকিৎসকদের পরামর্শ নিতে হবে।'
advertisement
তৃতীয় ঢেউয়ের তত্ত্বে মৃদুলাদেবী বলেন, 'হ্যাঁ, বিশেষজ্ঞরা বলেছিলেন পুজোর আগে করোনার তৃতীয় ঢেউ আছড়ে পরতে পারে। আর তাতে শিশুরা বেশি আক্রান্ত হবে। তবে এই অজানা জ্বর বলে যাকে করোনার তৃতীয় ঢেউয়ের তত্ত্বের সঙ্গে মেলানোর চেষ্টা করা হচ্ছে তা ভাইরাল ছাড়া আর কিছুই নয়। সুতরাং, বড়দের মাস্ক ব্যবহার করতে হবে। শিশুদের ভেপার নেওয়াতে পারেন তবে একেবারে দুধের শিশুদের নয়, পরিণত শিশুরা যারা ভেপার নিতে সক্ষম তারা। এছাড়া বাড়িতে বড়দের সর্দি-কাশি হলে শিশুদের নিকট না যাওয়া, ফলমূল-মরশুমি শাকসবজি বেশি করে খাওয়া আর অবশ্যই প্রয়োজনাতিরিক্ত বাড়ির বাইরে বাচ্চাদের না নিয়ে যাওয়া। এই বিষয়গুলো একটু মেনে চললে হয়ত শিশুদের এই জ্বর থেকে রক্ষা করা যাবে।
তিনি আরও বলেন, 'উল্লেখ্য ৩ - ৫ দিনের বেশি জ্বর হলে, শিশু স্বাভাবিকের থেকে অর্ধেক পরিমাণ খাবার খেলে, দিনে পাঁচবারের কম প্রস্রাব হলে, শ্বাসকষ্ট শুরু হলে, ঘরের স্বাভাবিক তাপমাত্রায় ৯২ শতাংশের নীচে অক্সিজেনের মাত্রা নেমে গেলে শিশুদেরকে দ্রুত হাসপাতালে ভর্তি করার পরামর্শ দিচ্ছি।'
শহর শিলিগুড়িতে ৬০টির বেশি শিশু উদ্যান এবং একটি পার্ক রয়েছে। সেই পার্কগুলিতে বাচ্চাদের খেলাধুলো থেকে প্রবীণদের প্রাত: ভ্রমণ সবকিছুই হতো। তবে কোভিড পরিস্থিতিতে পার্ক বন্ধ থাকলেও ফের খুলে যায় পার্কগুলি। তবুও যেন খাঁ খাঁ করছে পার্কচত্বর।
সূর্যসেন পার্কের দায়িত্বে থাকা এক কর্মীর কথায়, 'আগে ছোটদের নিয়ে আসতেন অনেকেই। তবে এখন সেটা একেবারেই কমে গিয়েছে। লোকজনের দেখা নেই তেমন।'
অন্যদিকে, উদ্যান ও কানন বিভাগ (উত্তর) - এর রেঞ্জ অফিসার মানব চক্রবর্তী বলেন, 'ছোটদের তেমন দেখা পাওয়া যাচ্ছে না। যারা মা-বাবার সঙ্গে আসছে, তাতেও সংখ্যাটা যথেষ্ট কম। আমরা স্যানিটাইজেশনের দিকে বিশেষ নজর দিচ্ছি। সংখ্যায় কম এলেও শিশুদের বিশেষ নজর দেওয়া হচ্ছে। মাস্কের ওপরও বিশেষ নজর দেওয়া হচ্ছে।'
Vaskar Chakraborty