কি কি রয়েছে এই মন্দিরে?
মন্দিরে প্রবেশ করলেই আপনি একবার আপনার চোখটা ঘুড়িয়ে নেবেন দেখতে পাবেন একের পর এক শিবের ঘর। এভাবেই গোটা মন্দির চত্বর ঘিরে ১০৮ টি শিব মন্দির দেখতে পাবেন আপনি। ঠিক যেন জপের মালার মতো। আর যেমন জপের মালায় একটি লকেট থাকে। তেমনই এই ১০৮ টি শিব মন্দিরের মাঝেই রয়েছে আরও একটি শিব মন্দির। যাকে ১০৯ নং শিব মন্দির বলা যেতে পারে। এটি একটু দূরে অবস্থিত। যদিও গোটা মন্দির চত্ত্বর বন্ধ করার আগেই ওই লোকেটের মতো যে মন্দির সেই মন্দির বন্ধ হয়ে যায়। সাধারণত এখানে কেউ আসে না। বছরের অন্যান্য সময় আগাছায় ভর্তি থাকলেও, শ্রাবণ মাসে শিব পুজো উপলক্ষ্যে এই মাঠেই হয় মেলা। সেই মেলা থাকে টানা চার দিন। এখানে প্রতিটি মন্দিরের সামনেই রয়েছে বারান্দা। প্রতিটি মন্দিরেই একটি করে দরজা আছে। প্রত্যেক টা মন্দিরেই আছে কষ্টিপাথরের গৌরীপট্ট-সহ শিবলিঙ্গ।
advertisement
অজানা কথা:
প্রায় দুশো বছর আগে এই মন্দির তৈরি করেছিলেন মহারানি বিষণকুমারী। অনেক অর্থ ব্যায় করে করেছিলেন এই মন্দির। তৎকালীন দেশের নানা প্রান্ত থেকে সাধু সন্ন্যাসীদের দিয়ে জাঁকজমক করে এই মন্দির প্রতিষ্ঠা করা হয়। মন্দিরের নির্মাণ কাজ শুরু হয়েছিল ১৭৮৮ খ্রিস্টাব্দে। মন্দির নির্মাণের কাজ শেষ হয়েছিল ১৭৯০ খ্রিস্টাব্দে। জপমালার ন্যায় ১০৮টি ও অতিরিক্ত একটি অর্থাৎ মোট ১০৯ টি শিব মন্দির প্রতিষ্ঠা করা হয় এখানে। প্রতিষ্ঠার সময়ে সবকটি মন্দিরের সামনেই একটি করে বেল গাছ রোপন করা হয়েছিল। তা আজও বিদ্যমান। ওড়িশার বালেশ্বর মন্দিরের আটচালার নকশার আদলেই কার্যত নির্মিত বর্ধমানের ১০৮ শিব মন্দির।
এ বার জেনে নেওয়া যাক কি ভাবে আসবেন আপনি?
হাওড়া থেকে আপনি ট্রেনে উঠতে পারেন। কিংবা শিয়ালদা থেকেও ট্রেনে উঠতে পারেন। যেখান থেকেই উঠবেন মনে রাখবেন আপনাকে নামতে হবে বর্ধমানে। লোকাল ট্রেনে আসতে পারেন। অথবা এক্সপ্রেসেও আসতে পারেন এতে আপনার সময়টা কম লাগে। লোকালে এলে আপনার সময় লাগবে দুই থেকে আড়াই ঘণ্টা। আর যদি এক্সপ্রেসে আসেন তাহলে স্বাভাবিক ভাবেই দের ঘণ্টার মধ্যেই পৌঁছে যাবেন আপনি। লোকালে আসলে আপনাকে ট্রেন ভাড়া দিতে হবে মাত্র ২৫ টাকা। আর যদি আপনি আসেন এক্সপ্রেসে তাহলে আপনাকে দিতে হবে ৭০ থেকে ৮০। বর্ধমানে নেমে আপনি স্টেশন থেকে বেরোলেই দেখতে পাবেন টোটো দাড়িয়ে সেখান থেকেই টোটোতে উঠে বলুন নবাবহাট যাবো। ব্যাস মাত্র ২০ টাকা দিয়েই আপনি নেমে পড়ুন মন্দিরের সামনে। এরপর দর্শন করুন ১০৮ শিব মন্দির।
তাহলে এবারের পুজোর ছুটিতে দর্শন করে যেতেই পারেন বর্ধমানের ঐতিহ্যপূর্ণ ১০৮ শিব মন্দির। এই স্থানে এলে আপনি বর্ধমানের অন্যান্য দ্রষ্টব্য স্থান গুলিও দর্শন করতে পারেন। ফলে ১০৮ শিব মন্দিরের উদ্দেশ্যে আপনি যদি একবার পুজোর ছুটিতে আসেন বর্ধমানে, তাহলে একই ট্রিপে আপনার এই আরও বেশ কয়েকটি ভ্রমণ স্থান ঘুরে দেখা হয়ে যাবে। এছাড়াও বনেদি বাড়ির পুজোর অন্যতম জায়গা এই বর্ধমান জেলা। ফলে পুজোতে ঘুরতে এলে আপনি দেখে নিতে পারবেন বেশ কয়েকটি বনেদি বাড়ির দুর্গাপুজোও।
Malobika Biswas






