চাষিবাসী ঘরের ছেলে সুশান্ত মন্ডলের বাবা উজ্জ্বল মন্ডল আড়াই বিঘা জমির চাষবাস করেই সংসার চালান। মা অনিতা মন্ডল বাড়ির কাজকর্ম সামলাতেই সময় পেরিয়ে যায়। সুশান্ত ডাঃ সুধা কৃষ্ণ উচ্চ বিদ্যালয়ে পড়াশোনা করার পর প্রথমে রেগুলারে স্নাতক পড়ার জন্য ভর্তি হন। কিন্তু পরে কোন কারণবশত তা তাকে ছাড়তে হয় এবং বর্তমানে সুশান্ত সিউড়ি বিদ্যাসাগর কলেজের নেতাজি ওপেন ইউনিভার্সিটি থেকে বাংলা অনার্স করছেন। তবে পড়াশোনা চললেও সুশান্তর মূল ঝোঁক যেন আঁকা।
advertisement
আর এই ঝোঁকের বশেই কখনো সে দেশলাইয়ের কাঠি পরপর সাজিয়ে তার উপর সহজেই এঁকেছেন দশোভূজার ছবি, কখনো আবার এঁকেছেন এক একটি মুসুর দানার উপর জগন্নাথ, বলরাম এবং সুভদ্রা। এছাড়াও তার কারুকার্যের তালিকায় রয়েছে পুরাতন ছোট এক টাকার কয়েনের উপর সুভাষ চন্দ্রের মুখ, পাথরের বিদ্যাসাগরের মুখ, দুর্গার মুখ, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের মুখ, পেঁচা, সিনারি ইত্যাদি। এছাড়াও রয়েছে চক কেটে জল ধরো প্রকল্পের লোগো, কড়ির উপর নকশা। এখানেই শেষ নয় তার সুন্দর হাত দিয়ে ফুটে উঠতে দেখা গিয়েছে পালকের উপর এপিজে আবদুল কালাম, লতা মঙ্গেশকরকে। পাকুর পাতার উপর গণেশের মুখ এবং পাকুর পাতা দিয়ে গণেশ।
সুশান্ত এই সকল ছবি এঁকে তার সোশ্যাল মিডিয়ায় ধারাবাহিকভাবে আপলোড করে থাকে। আর সে সব দেখে তার সোশ্যাল মাধ্যমের বন্ধুরা তাকে উৎসাহ যোগায়। সোশ্যাল মাধ্যমের বন্ধুবান্ধবরা ছাড়াও স্থানীয় বন্ধুবান্ধবরাও তাকে উৎসাহ যুগিয়ে থাকে। তবে সুশান্তর আক্ষেপ, গ্রাম্য এলাকায় হওয়ার দরুন এই সকল কাজের কদর নেই।
সুশান্ত জানিয়েছেন, আগামী দিনে সে বাড়িতেই একটি আর্ট গ্যালারি করতে চান। তবে এখনো পর্যন্ত কারোর থেকে কোনরকম সাহায্য সে নেয় নি। বরং শিক্ষা বলতে বিভিন্ন সোশ্যাল মাধ্যম দেখে কিছু তৈরি করার আগ্রহ থেকেই এমন সাফল্য। আবার বর্তমানে সে বাবা মায়ের মাথার উপর থেকে হাত খরচ ও অন্যান্য খরচ লাঘব করার জন্য গুটিকয়েক খুদেদের নিয়ে আঁকার ক্লাস শুরু করেছেন। তার স্বপ্ন, এই ভাবেই সে কোন না কোন একদিন বাড়িতে একটি আর্ট গ্যালারি তৈরি করে ফেলবেন।