মঙ্গলবার সিউড়ির (Suri) হাটজান বাজারের রামপ্রসাদ রায় স্মৃতি উচ্চ বিদ্যালয়ে নিজের শারীরিক অক্ষমতাকে দূরে সরিয়ে ফর্ম ফিলাপ করে সহযোগিতার হাত বাড়াতে দেখা গেল হাটজান বাজারেরই দুই হাত না থাকা বিশেষভাবে সক্ষম জগন্নাথ মহারাকে (Specially abled person help to fill up Laxmi Bhandar form)। শারীরিক অক্ষমতাকে দূরে সরিয়ে এইভাবে সাধারণ মানুষদের পাশে দাঁড়াতে দেখে আপ্লুত এলাকার বাসিন্দারা (Helping people)। পাশাপাশি এই ভাবে মানুষের পাশে দাঁড়াতে পেরে খুশি জগন্নাথ, জগন্নাথের এমন স্বতঃস্ফূর্ততা দেখে খুশি ক্যাম্পের আধিকারিকরাও।
advertisement
এই প্রসঙ্গে জগন্নাথ মাহারা সম্পর্কে দু-চার কথা না বললেই নয়। বিশেষভাবে সক্ষম এই যুবক জগন্নাথের জন্ম থেকেই দুই হাত নেই। হাত না থাকার জন্যই তার নাম হয়েছে জগন্নাথ। শারীরিক প্রতিকূলতার পাশাপাশি আর্থিক প্রতিকূলতাও তার বড় হয়ে ওঠার ক্ষেত্রে নানান সমস্যা তৈরি করে। তবে এই সকল সমস্যাকে দূরে সরিয়ে ছোট থেকেই তার অদম্য ইচ্ছে ভালোভাবে পড়াশোনা করে মানুষের মত মানুষ হয়ে ওঠার।
ছেলের ইচ্ছেমতোই তার মা তাকে স্কুলে পাঠায় পড়াশোনার জন্য। বিশেষভাবে সক্ষম যুবক যুবতীদের পরীক্ষায় অন্যের সহযোগিতা নিয়ে পরীক্ষা দিতে লক্ষ্য করা যায়। কিন্তু জগন্নাথের হাত না থাকলেও তিনি পায়ে লিখতে শেখেন (writing with feet)। আর এই পায়ের মাধ্যমে লিখেই তিনি একের পর এক পরীক্ষাই পাস করেন। স্কুলের গণ্ডি পার করে অনায়াসেই কলেজের গণ্ডিও পার করতে সক্ষম হন। বিভিন্ন সংস্থা এবং মানুষের সহযোগিতা নিয়ে নিজের পড়াশোনা সম্পূর্ণ করার পর এখন তিনি নিজেই অবৈতনিক স্কুল খুলে নিজের এলাকার খুদে শিশুদের পাঠদান করছেন। এর পাশাপাশি লকডাউন এবং অন্যান্য প্রতিকূল পরিস্থিতিতে সাধারণ মানুষদের পাশে দাঁড়ানোর জন্য ঝাঁপিয়ে পড়তে দেখা যায় তাঁকে। মোটের উপর এই জগন্নাথই যেন সাক্ষাৎ শ্রী জগন্নাথ মহাপ্রভুর প্রতীক।
মাধব দাস