সোমবার সকাল থেকে ধর্মঘটের নির্ধারিত সময় শুরু হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে বীরভূমের সদরপুর সিউড়ি সহ রামপুরহাট, বোলপুর এবং অন্যান্য জায়গায় মিছিল বের করে বনধের সমর্থনকারী রাজনৈতিক দল এবং ট্রেড ইউনিয়নগুলি। মূলত সকাল থেকেই রাস্তায় দেখা যায় সিপিআইএম, কংগ্রেস, এসইউসিআই, ফরওয়ার্ড ব্লকের রাজনৈতিক নেতা-কর্মীদের। মিছিল করে তারা এই সাধারণ ধর্মঘট সফল করার জন্য সাধারণ মানুষদের অনুরোধ করেন।
advertisement
তবে ধর্মঘটের স্বতঃস্ফূর্ততা সম্পর্কে বলতে গেলে বলতেই হয়, বনধের (Bharat Bandh) মিশ্র প্রভাব পড়েছে জেলায়। সকাল থেকেই অধিকাংশ বেসরকারি বাসকে রাস্তায় নামতে দেখা যায়নি। যে কারণে স্বাভাবিকভাবেই ভোগান্তির শিকার হতে হচ্ছে নিত্যযাত্রীদের। অন্যদিকে সরকারি বাস পরিষেবা অন্যান্য দিনের মতোই স্বাভাবিক রয়েছে। মূলত সরকারি বাস রাস্তায় বের হওয়ার পর কোন কোন জায়গায় ধর্মঘটকারীদের মিছিলের সামনে আটকে পড়লেও বাসের কর্মীরা জানিয়েছেন, তারা তাদের পরিষেবা দিয়ে যাবেন।
বাস পরিষেবার ক্ষেত্রে বেসরকারি বাস পরিষেবা বন্ধ এবং সরকারি বাস পরিষেবা সচল থাকার পাশাপাশি অন্যান্য দিনের মতোই বাজার ঘাট দোকানপাট সম্পূর্ণ স্বাভাবিক বীরভূমের অধিকাংশ জায়গাতেই। কিছু কিছু জায়গায় ধর্মঘট সমর্থনকারীরা সাময়িকভাবে দোকানপাট বন্ধ করে দেওয়ার চেষ্টা চালালেও পুলিশী তৎপরতায় তা সফল হয়নি।
এদিনের এই ধর্মঘটের পরিপ্রেক্ষিতে বীরভূম জেলার সিটু সাধারণ সম্পাদক দীপঙ্কর চক্রবর্তী জানিয়েছেন, "কেন্দ্রের পাশ করা তিনটি কৃষি আইন কৃষকদের মারাত্মক ক্ষতি করবে। সেই সকল কৃষি আইন বাতিল করার দাবিতে দীর্ঘ দশ মাস ধরে আন্দোলন চালাচ্ছেন কৃষকরা। কিন্তু সেই আন্দোলনে সাড়া না দিয়ে কেন্দ্র কৃষি আইন বাতিল না করায় আজকের এই ধর্মঘট। সংযুক্ত কিষান মোর্চার ডাক এই ধর্মঘটে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল, ট্রেড ইউনিয়ন শামিল হয়েছে। আমরা সাধারণ মানুষদের স্বতঃস্ফূর্তভাবে এই ধর্মঘট সফল করার আহ্বান জানাচ্ছি।"
এর পাশাপাশি তিনি আরও দাবি করেছেন, "মূলত কৃষি আইন বাতিলের দাবিতে এই সাধারণ ধর্মঘট ডাকা হলেও আমাদের আন্দোলন চলছে কেন্দ্র সরকারের বেসরকারিকরণ, বিভিন্ন জনবিরোধী নীতির বিরুদ্ধে। দেশের অন্যান্য জায়গায় এই ধর্মঘট বিকাল চারটে পর্যন্ত চললেও আমাদের রাজ্যে এবং বীরভূমে এই ধর্মঘট চলবে সন্ধ্যা ছয়টা পর্যন্ত।"
অন্যদিকে সিউড়ি উত্তরবঙ্গ রাষ্ট্রীয় পরিবহণ সংস্থার ডিপো সেক্রেটারি শরীফ মহঃ জানিয়েছেন, "অন্যান্য দিনের মতোই আমাদের এই বিপদ থেকে নির্ধারিত প্রতিটি রুটে বাস যাচ্ছে। কোন কোন জায়গায় আন্দোলনের কারণে সাময়িকভাবে হয়তো বাসকে অপেক্ষা করতে হতে পারে, তবে গন্তব্যে পৌঁছাবেই। আমরা আমাদের বাসের চালকদের সুরক্ষার জন্য হেলমেট প্রদান করেছি।" তবে তিনি জানিয়েছেন, অন্যান্য দিনের তুলনায় যাত্রী সংখ্যা একেবারেই নগণ্য।
সোমবার নির্ধারিত সময় থেকে ধর্মঘট শুরু হওয়ার পর দুপুর ১২টা পর্যন্ত ধর্মঘটের দিন এমনই ছবি ধরা পড়েছে বীরভূমের বিভিন্ন প্রান্তে। তবে বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে এই ধর্মঘট আরও জোরদার হয় কিনা তাই এখন দেখার।